দেশে একটি বিশাল বেকার জনগোষ্ঠী তৈরি হওয়ার পেছনে মূল কারণগুলোর একটি হলো উদ্যোক্তার অভাব। এই অভাবটি মূলত সৃষ্টি হয়েছে উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হতে না পারার ভীতির কারণে। করোনার কারণে একদিকে যেমন চাকরি হারিয়েছেন অনেক কর্মী, অন্যদিকে বেতন কমে যাওয়াসহ নানা ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছেন জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশ। পরিস্থিতির কারণে সৃষ্টি হওয়া এই অর্থনৈতিক ঝুঁকি সামাল দিতে অনেকেই ঝুঁকছেন অনলাইন ব্যবসার দিকে। প্রতিটি নারীর কিছু নির্দিষ্ট দায়িত্ব কর্তব্য আছে পরিবারের প্রতি যা কোনো ভাবে ই এড়িয়ে চলা যায় না এমনটা মনে করেন “সুপ্ত প্রয়াস”স্বত্বাধিকারী ও তরুণ উদ্যোক্তা সাইয়্যো তামান্না।
আপনার নিজের সম্পকে জানতে চাই?
আমার শৈশব বেশির ভাগ সময় চট্টগ্রাম শহরে কাটলে ও গ্রীষ্মের ছুটি,ঈদের ছুটি তে নিজ গ্রাম লক্ষীপুর এ বেশি বেড়ানো হতো এবং তখন ই আমি আমার শৈশবের স্বাদ টা অনুভব করতাম বেশি। বাবার হাত ধরে নিজেদের জমিজমা দেখতে যেতাম। দাদির সাথে পুকুরের পাড়ে নানা শাকসবজি গাছে পানি দিতাম। এরকম নানা শৈশব স্মৃতি রোমন্থন করে দিন কাটে আমার। চট্টগ্রাম শহরের পতেংগা এলাকায় অবস্থিত টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড এ বাবা হিসাব সহকারী হিসেবে চাকুরী করতেন৷ সেই সুবাধে টিএসপি স্কুল এবং কলেজ এ পড়া এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০১০ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিই। তার পর চট্টগ্রাম নৌ বাহিনি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং চট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যের উপর অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করি ২০১৮ সালে। “সুপ্ত প্রয়াস” নামে আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগ কে অনলাইনে পরিচালনা করছি।
উদ্যোক্তা হওয়ার আইডিয়া কিভাবে আসল?
চাকরী করা কালিন সময়ে যখন ই পরিবার এর কথা মনে হয় তখন খুব চিন্তিত হতাম তাদের সময় দেওয়া ব্যাপারে। প্রতিটি নারীর কিছু নির্দিষ্ট দায়িত্ব কর্তব্য আছে যা কোনো ভাবেই এড়িয়ে চলা যায় না। তাই, আমার পরিবার ও ভবিষ্যৎ সন্তানদের সঠিক লালন পালনের অভাব হবে ভেবে চাকরী ছেড়ে দেই এবং নিজ ব্যবসায়ে পুরোপুরি মনোযোগ দেয়া শুরু করি। ব্যবসাই পারে সংসার সময় দেওয়ার পাশাপাশি ইনকাম করার সুযোগ।
প্রতিবন্ধকতা গুলো কি কি
উদ্যোগের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সঠিক প্রোডাক্ট সোর্সিং এবং বিশ্বস্থ কর্মী পাওয়া। আমি যেহেতু হ্যান্ড পেইন্টেড পোশাক নিয়ে উদ্যোগ শুরু করি তখন শুরুতে কিছু ভুল হলেও পরবর্তীতে সেই ভুল গুলো শুধরে নিয়েছি। যেমন সঠিক সোর্সিং খুজে পাই নি প্রথমে কিন্তু পরে পেয়েছি এবং নিজে ই পোশাকে ডিজাইন করি এবং কর্মীদের সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত থাকি। এতে করে প্রথমে পন্যের প্রাইস বেশি থাকলে ও পরবর্তীতে প্রাইস রিজেনেবল করতে সক্ষম হই।
অনলাইন ব্যবসায় কী ধরনের বাধা আসতে পারে?
পেইজ হ্যাক, গ্রুপ হ্যাক, ব্ল্যাকমেইল, ডিজাইন চুরি, ছবি চুরিসহ আরও অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতাই চলে আসতে পারে সামনে। এছাড়া নতুন প্রতিদ্বন্দ্বীর আগমনের প্রস্তুতিও রাখতে হবে।
উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে ডিএসবি এবং উই গ্রুপের ভুমিকা কেমন?
ডিএসবিতে আছি প্রায় ৮ মাস ধরে। স্যারের পরামর্শে ১০ মিনিট রাইটিং পোস্ট গুলো ৬ দিনের মধ্যে শেষ করে নিজের পড়া ও লেখার গতি খুব দ্রুত বেড়ে যায় এবং এর ফলে অনেক সময় বাচিয়ে চলতে পারি। ডিএসবিতে রাইটিং প্র্যাক্টিস করার পর থেকে নিজ ভাষায় খুব গুছিয়ে দ্রুত লিখতে পারি। তাছাড়া ডিএসবি হলো পড়াশোনার এক বিশাল প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিজনেস বা অন্যান্য প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জেনে উপকৃত হচ্ছি প্রতিনিয়ত।
ডিএসবি হলো জ্ঞান ভান্ডার। এখানে যে কোনো বিষয় নিয়ে সার্চ করলে একাধিক পোস্ট বা লিখা পাওয়া যায় যা অনেক তথ্যবহুল এবং উপকারি। এই গ্রুপের কল্যানেই আমি আমার ফেসবুক পেইজ কে ডেকোরেট করি এবং সব সেটিংস শেষ করি। এই গ্রুপে থেকে বিজনেস এর নানা বিধ খুঁটিনাটি সম্পর্কে জেনেছি এবং প্রতিনিয়ত এতে পড়াশোনা করে যাচ্ছি। যা আমার জ্ঞান কে করছে প্রসারিত এবং ক্যারিয়ারের জন্য ও নিজেকে সঠিক ভাবে প্রস্তুত করতে পারছি। যেকোনো বিষয়ে সার্চ করলে ই প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো পেয়ে যাচ্ছি যা খুব কম সময়ে অন্য কোনো গ্রুপ দিতে পারবেনা। ডি এস বি আমার ক্যারিয়ারে সত্যি ই খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে আমি মনে করি ।
তাছাড়া ডিএসবি এবং উই গ্রুপে থেকে বিজনেস এর নানা রকম টেকনিক সম্পর্কে অবগত হই যা কাজে লাগিয়ে চ্যালেঞ্জ সমূহ মোকাবিলা করি।