আজকের পোস্টের নায়িকা দুই বান্ধবী। আলিসা এবং ড্যানি ২৫ বছরের বন্ধুত্ব। আলিসার যমজ বাচ্চা আর ড্যানির ৩ সন্তান। যখন বাজারে বাচ্চাদের ব্যবহারের জন্য তারা মনের মতো ন্যাচারাল, নন-টক্সিক পণ্য খুঁজে পেলো না, তখন নিজেরাই তা উৎপাদনের চিন্তা করলো। তাদের টাকা বেশি ছিল না, তাই তারা নিজেদের রান্না ঘর থেকেই তাদের উদ্যোগ শুরু করলো আর পুঁজির পরিমান ছিল পাঁচশো পাঁচশো করে সর্বমোট এক হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার।
চার বছর পর তাদের মাসিক টার্ন ওভার হয়েছিল $২০০,০০০ আর বাৎসরিক ২.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার। পণ্যগুলো কি ছিল জানেন? হ্যান্ড ওয়াশ , সানসক্রিম আর স্লীপ বাম। জি, স্লিপ বাম , লিপ বাম না। এই পণ্য গুলো ছিল সুম্পূর্ণ অর্গানিক, কেমিক্যাল মুক্ত। তারা নিজেরাই বাজারের ভালো ভালো জিনিসগুলো নিয়ে তাদের পণ্যগুলো তৈরী করে বাজারজাত করতো।
শুরু থেকেই তারা ভালো সাড়া পাচ্ছিলো। প্রথমে প্রতিদিন দশটা করে অর্ডার আসতো এবং বছর শেষে যা দাঁড়ায় পঞ্চাশে। বর্তমানে প্রতিদিন দেড়শো থেকে দুইশো টা করে অর্ডার আসে। এর মধ্যে দুইটা থেকে তিনটা পণ্যের অর্ডার থাকে, এক এক অর্ডারে।
আলিসার মতে , ” আমরা একটা মার্কেট গ্যাপ দেখতে পেয়েছিলাম এবং ব্যবসা শুরু করার পর বুঝতে পেরেছিলাম আমাদের এই পণ্যগুলোর বাজারে অনেক চাহিদা আছে, বিশেষ করে যখন প্রথম থেকেই আমাদের অর্ডার আসতে শুরু করে। আমরা নিজেরাই দিন শেষে অর্ডারগুলো দেখতাম আর একজন আরেকজনকে বলতাম, বিশ্বাস হচ্ছে না। আমাদের জন্য এটা আসলেই ছিল অনেক অনুপ্রেরণামূলক। বিশেষ করে ড্যানি যখন তার সদ্যোজাত বাচ্চাকে কোলে নিয়ে কাজ করতো।”
তাদের বর্তমান অবস্থানে আসার এই রাস্তাটা কিন্তু মসৃন ছিল না। এক সময় তারা ব্র্যান্ডিং কোম্পানির সাহায্য নিয়েছিল এবং যাদের পরামর্শ মতো তাদের লোগোতে পরিবর্তন করে। কিন্তু সেই পরামর্শ তাদের বিপক্ষে যায়। রাতারাতি তারা অনেক কাস্টমার হারিয়ে ফেলে।
আলিসা এবং ড্যানির মতে , ” আমাদের কাস্টমাররাই আমাদের সঠিক পথে ফিরে আসতে সাহায্য করেছে। যেমন, আমাদের নিজেদের বাচ্চারাই আমাদের আগের লোগো পছন্দ করতো, যেখানে এক বানরের ছবি ছিল। ব্র্যান্ডিং এক্সপার্টের কথা শুনে হয়তো আমাদের লোগো অনেক প্রফেশনাল লুক পেয়েছিলো, কিন্তু আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম আমাদের আসল অডিয়েন্স। ”
বর্তমানে এই কোম্পানিতে আটজন কর্মী কাজ করে, যাদের সবাই মহিলা। সকালে বাচ্চাদের স্কুল নামিয়ে তাদের কাজ আরম্ভ হয়, আর শেষ হয় স্কুল ছুটির সময়। এই সময়সূচি সবার জন্য, শুধু তাদের জন্য।
আলিসা এবং ড্যানির মতে , আমরা যা নিজেদের বাচ্চাদের উপর ব্যবহার করতে পারি সেটাই আমরা সব বাচ্চাদের জন্য তৈরী করেছি।
বর্তমানে ৬৫,০০০ ফেসবুক ফ্যান আর ১৭,০০০ ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ার নিয়ে তাদের ব্যবসা এগিয়ে যাচ্ছে। যারা শুধু রিভিউ দিয়ে সাহায্য করে না, শিশু বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে মতামত, বাচ্চাদের খাবারের রেসিপি ইত্যাদি দিয়ে এক জন আরেকজনকে সাহায্য করে।
যে সকল মা নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে চান তাদের প্রতি আলিসা এবং ড্যানির পরামর্শ আমি তাদের ভাষাতেই দিচ্ছি ,
“Research the market thoroughly, to find a gap in the market and to find your own niche. There’s no quick success to business. It starts with being an extension of your own values. We are very aligned with the values we hold true. You have to have the gut passion so you don’t give up when the obstacles hit.”
আলিসা এবং ড্যানির কোম্পানির নাম : 123 nourish me
লেখক: রাফি হক