বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে সময় এবং সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো দিকে সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কর্মক্ষেত্র এগিয়ে যেতে প্রয়োজন দক্ষতার। সময়ের সাথে পাল্লা দিতে না পারলে দক্ষ জনগোষ্ঠীর অভাবে পিছিয়ে পড়তে পারে যেকোন জাতি।
কোভিড-১৯ এই দূর্বিষহ পরিস্থিতিতে প্রযুক্তির সদ্ব্যবহারে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে চেষ্টা করেছে অসংখ্য মানুষ। নিজেদের এগিয়ে রাখতে ঘরে বসে বিভিন্ন কোর্স করেছেন ই-লার্নিং এ। এছাড়াও ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে অনুপ্রাণিত হয়ে ফেসবুক পেজ তৈরি করে দেশি পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করছেন কেউ কেউ। ক্রয়-বিক্রয় সবকিছু চলছে অনলাইন ও ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে হওয়ায় ব্যবসার পরিধি বাড়াতে বিজ্ঞাপনও দিতে হয় অনলাইনে। ডিজিটাল মার্কেটিং এ দক্ষ হয়ে অনেকে আয় করছেন ঘরে বসে।
প্রযুক্তির কল্যাণে বেকার বসে থাকতে হচ্ছে না বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতেও। অনেকে দক্ষতা অর্জন করছে আবার অনেকে তা কাজে লাগাচ্ছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সময়ের চাহিদায় ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে দিন দিন।
ইন্টারনেট ও ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে মার্কেটিং করাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বুঝায়। জুলাই ২০২০ সালের এক গবেষণা উঠে আসে, বৈশ্বিক ডিজিটাল মার্কেট সাইজ ৪৬৯.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২৫ সালে ১০০৯.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নিত হবে।
করোনাকালীন সময়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মতে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি ৬৪ লাখ ১০ হাজার। তাই ই-কমার্সে বেড়েছে ক্রেতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা। এখন মানুষের জীবনের বড় একটি অনুষঙ্গ মোবাইল অথবা কম্পিউটার তাই স্বাভাবিকভাবেই দিনের একটা বড় অংশ এই ডিভাইস গুলোর দখলে। এ থেকে স্পষ্টভাবেই বলা যায় যত বেশি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে তত বেশি ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে। তবে সবথেকে বড় ব্যাপার ডিজিটাল মার্কেটিং কম খরচে, স্বল্প সময়ে, আমাদের কাঙ্ক্ষিত অডিয়েন্সের কাছে পণ্য অথবা সেবার প্রচার-প্রচারণা করা যায়। যা একজন নতুন অথবা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য অনেক বড় একটি সুযোগ।
আমরা অনেকেই জানি এবং দেখছি বর্তমানে দেশীয় পন্যের জোয়ার চলছে। এই জোয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ডিজিটাল মার্কেটিং। প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীন বিলুপ্তপ্রায় পন্যগুলোও প্রাণ পেয়েছে। নতুন করে এর প্রচার প্রচারণা চলছে। আর তারই প্রভাবে আমরা ঘরে বসে পন্যগুলো সম্পর্কে জানছি এবং ই-কমার্সের কল্যাণে পেয়ে যাচ্ছি। এতে প্রান্তিক পর্যায়ের দেশীয় পন্যের কারিগররাও ফিরে পাচ্ছেন সুদিন। এই সফলতার ভাগিদার আমাদের পুরো দেশের। তাই এই সফলতাকে ধরে রাখতে এবং সামনে আরও বেশি সফল হতে আমাদের টার্গেটেড অডিয়েন্স বাছাই করে করতে হবে। এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর কয়েকটি জনপ্রিয় কিছু মাধ্যম-
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO)
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)
সার্চ মিডিয়া মার্কেটিং SMM)
ইমেইল মার্কেটিং
মোবাইল মার্কেটিং
এফিলিয়েট মার্কেটিং
ওয়েব এনালিটিক্স
কন্টেন্ট মার্কেটিং
ডিজিটাল ডিসপ্লে মার্কেটিং ইত্যাদি
উপরের মাধ্যমগুলোর মধ্যে যে মাধ্যমই আমরা ব্যবহার করতে যাই না কেন তার জন্য পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। তাহলেই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
লেখক : কান্তা চক্রবর্ত্তী
স্বত্বাধিকারী : ক্ল্যাজ ফুড