ঘর সামলিয়ে নিজেকে আরো একটু সাবলম্বী করতে ব্যবসায় নেমেছেন উদ্যোক্তা ফারজানা আক্তার খুশি। ব্যবসা করার পরিকল্পনা ছিল আগে থেকেই। তাই বিভিন্ন জায়গা ঘুড়ে পণ্য দেখতেন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতেন। পরিবার থেকেও পেয়েছেন সহযোগিতা মনোবলটা বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসার ক্ষেত্রে। গোপালগঞ্জের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার খুশি ব্যবসার পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেন পথশিশু সেবা নামে একটি সংগঠন। এই সংগঠনের সহযোগিতায় শিশুদের হাতে তুলে দেয়া হয় লেখাপড়ার বিভিন্ন সরঞ্জাম। খুশির উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন।
টেকজুম: উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু কিভাবে…?
খুশি: আমি একজন স্বাধীণ প্রিয় মানুষ। আমি কখনোই অন্যের অধীনে কাজ করতে চাই নি। নিজের আলাদা একটা পরিচয় তৈরি করতে চেয়েছি সব সময়। সেই ইচ্ছাশক্তি থেকেই আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা। টিউশনির টাকা জমিয়ে মূলত শুরু করি। তারপর পরিবার সাপোর্ট করে। আর পরিবারের সাপোর্ট পাওয়ার পরে ২০২০ সালে আমার বিজনেস পেইজ খুলি “Twins” নামে ।
টেকজুম: ক্যারিয়ারে ই-কমার্স কেন বেছে নিলেন…?
খুশি: চাকরি করতে হলে আমাকে পরিবার থেকে আলাদা থাকতে হবে। আর আমি পরিবার ছেড়ে থাকতে চাই না। আর চাকরি করলে একটি অফিসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে আমার পরিচয়। আমি বিশ্ববাসীর কাছে আমাকে আর আমার পণ্যকে তুলে ধরতে চাই। তাই ই-কমার্সকেই বেছে নিয়েছি।
টেকজুম: কি কি পণ্য নিয়ে কাজ করেন…?
খুশি: আমি আমাদের ঐতিহ্য ঢাকাই জামদানী নিয়ে কাজ করি। আমাদের ঐতিহ্যবাহী জামদানী নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই বহুদূর।
টেকজুম: Twins কে নিয়ে কি স্বপ্ন দেখেন…?
খুশি: টিউশনির জমানো টাকা দিয়ে শুরু করা আমার Twins। আর রাজিব স্যারের নির্দেশনা আমাকে অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। রাজিব স্যার সব সময় চেয়েছেন দেশীয় পণ্য যেন বিদেশির মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে। আমি রাজিব স্যারের সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে Twins কে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
টেকজুম: আপনার পথশিশুদের সহযোগিতা পথশিশু সেবা সংগঠন সম্পর্কে জানতে চাই?
খুশি: ২০১৬ সালে আমার নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলি পথশিশু সেবা সংগঠন। যেখান থেকে পথশিশুদের লেখাপড়ার জন্য সহায়তা করা হয়। সাথে দেয়া হয় পোশাকসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী। এছাড়া শীতে অসহায় মানুষের মাঝেও শীতবস্ত্র বিতরণ করি। নিজের পড়াশোনার ফাঁকে টিউশনির ও ব্যবসা থেকে আয়ের টাকা ও অন্য সদস্যদের চাঁদা দিয়ে সংগঠনটি পরিচালিত করে থাকি।
টেকজুম: : নারী উদ্যোক্তা হিসেবে কি কি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি…?
খুশি: নারীদের চলার পথ কখনোই সহজ নয়। সেখানে নিজের আলাদা পরিচয় তৈরি করতে গেলে বাঁধা আসবেই। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীদের কটু কথার জালে কখনোই নিজেকে আটকে রাখতে চাই নি। পরিবারের সাপোর্ট থাকার কারণে সব বাঁধা অতিক্রম করতে সহজ হয়েছে। কারণ আমরা নারী, আমরা সব পারি।
টেকজুম: উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম ( উই) কিভাবে আপনার উদ্যোগে ভূমিকা রেখেছে…?
খুশি: আমি শুরু থেকে পরিবারের সাপোর্ট পেয়েছি। কিন্তু আমার ভার্চুয়ালি সাপোর্টার ছিলো উই। উই আমার মত হাজারো নারীর কাছে এক আশ্চর্য প্রদীপ। আর রাজিব স্যার আমার কাছে ম্যাজিশিয়ান। তার পোস্টের ম্যাজিকে আমি আজ এতদূর এসেছি। আমি কৃতজ্ঞ উইয়ের কাছে। আমি কৃতজ্ঞ নিশা আপু ও রাজিব স্যারের কাছে আমাদের জন্য এত সুন্দর একটি প্লাটফর্ম তৈরি করার জন্য। উইতে এসে আমি শিখেছি কি করে নিজের এবং পণ্যের পার্সোনাল ব্রান্ডিং তৈরি করতে হয়। উই হচ্ছে আমাদের শিক্ষালয়। এখানে যত পড়বো তত শিখবো।