স্বাস্থ্য ঝুঁকি বা স্বাস্থ্য সুরক্ষা যখনই শব্দ দুটি আসে তখন সবার আগেই এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ খাদ্য বা খাদ্যাভ্যাসের কথা আমাদের সবার মাথায় আসে৷ কেননা খাবারের সাথেই স্বাস্থ্য ঠিক কতটা সুরক্ষিত থাকবে বা কতটা ঝুকিপূর্ণ হতে পারে তা সম্পর্কিত৷ তাই এই দুটো বিষয়ে নিসন্দেহে খাবারের সংশ্লিষ্টতা অনেক বেশি৷
বর্তমান সময়ে হোমমেইড ফুড আমাদের সকলের কাছেই পরিচিত ও ভরসার একটি নাম৷ হোমমেইড ফুড মানেই হলো ঘরে তৈরী খাবার,এই থীমটাই হোমমেইড ফুড এর আস্থার বিষয়৷ হোমমেইড ফুড ভরসা করার মতো বা এ খাবারে চোখ বন্ধ করে আস্থা রাখা যায় তার অন্যতম দুটি কারণ হলো এর স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানোর ক্ষমতা আর স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা৷
বর্তমান সময়ে আমরা লক্ষ্য করলে দেখতে পাই অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতনতার দিকে এগিয়ে আছেন৷ ভালো মানসম্পন্ন খাবারের প্রতি ঝুকছেন সবাই৷ কারণ সবাই খাবার যেমন স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখে বা সুরক্ষিত করে, তেমনি খাবার থেকেই ঘটতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি৷
মারাত্মক এই স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হোমমেইড ফুড এর ভূমিকা অত্যন্ত বেশি৷ আমরা সবসময় বলে থাকি স্বাস্থ্যই সম্পদ৷ এই স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আমাদের প্রয়োজন সঠিক ও মানসম্মত খাবার গ্রহণ করা৷ বর্তমানের ব্যস্ত সময়ে এই ভালো মানসম্মত খাবারটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷
হোমমেইড ফুড ভালো ও তা মানসম্মত সেটা শুধু মুখে বলার বিষয় নয়, বরং এটা কাজে প্রমাণিত৷ হোমমেইড ফুড এ খাদ্যের গুনাগুণ, পুষ্টি, স্বাদ, গ্রহণযোগ্য পরিমাণ ও পরিস্থিতি বেধে উপস্থাপন সবটাই সম্ভব হয়৷ তার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে বাঁচতে পারি।
সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে আমরা নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় আটকে পরছি দিন দিন৷ ব্যস্ততার ভিরে নিজেরা সচেতনতা বা অনেক সময় ঝুঁকি জেনেও গ্রহণ করছি পুষ্টিহীন বা গুণমানহীন খাবার৷ যেখানে হোমমেইড স্বাস্থ্যকর ফুড প্রয়োজন ছিলো সেখানে আমরা ঝুঁকিপূ্র্ণ বাইরের খাবার গ্রহণ করছি৷
আমরা যখন এসকল ঝুকিপূর্ণ ও মানহীন খাবারের জায়গায় হোমমেইড ফুডকে রিপ্লেস করব তখন নিজেদের শারীরিক ভাবে একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে খুব সহজেই আবিষ্কার করতে পারব৷ কারণ সুস্থ থাকতে হলে ভালো মানসম্মত খাবারের বিকল্প নেই৷ বাইরে খাবারে বেশিরভাগ সময়েই অতিরিক্ত তেল বা ফ্যাট, সোডিয়াম, সুগার বেশি পরিমাণে ও গুণগতমানহীন জিনিসপত্রের ব্যবহার থাকে৷ যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর৷ এসকল মারাত্মক দিক এড়াতে অবশ্যই হোমমেইড ফুড সেরা৷ একজন হোমমেইড ফুড উদ্যোক্তা খাবারকে সেভাবেই তৈরী করেন সম্মানিত ক্রেতার জন্য যেটা ক্রেতার ডিমান্ড থাকে৷ এর ফলে পুষ্টি উপাদান, স্বাদ ও পরিমাণ সবটাই সুরক্ষিত হয় সাথে সাথে স্বাস্থ্য সুরক্ষাও নিশ্চিত হয়৷
বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের স্বাস্থ্য অবস্থার জরিপে লক্ষ্য করলেই দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষ স্থূলতা,হৃদরোগ, ডায়বেটিস,কিডনি ডিজিজ,গ্যাসট্রিক বা আলসার ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি৷ আর এই সকল রোগের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবে আমাদের প্রতিদিনের গ্রহণীয় খাদ্য জড়িত৷ আমাদের খাদ্যাভ্যাসের বিভিন্ন ধরনের জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছি৷ অনেক ব্যস্ততম একটা যুগে একটা সময়ে আমরা বসবাস করছি৷ এ সময়ে কাজের ব্যস্ততা বা যেকোনো ব্যস্ততায় নিজেরা সবচেয়ে অবহেলা করে বেশি আমাদের খাদ্যাভ্যাসে৷ ঝটপট সমাধান, বা মুখরোচক খাবারের জন্য সহজেই বাইরের কেনা খাবারের ওপর ভরসা করে ফেলি৷ যেখানে খাবারের মানের নিশ্চয়তা নিয়ে নেই তেমন কোনো ভেরিফিকেশন৷ এর ফলে আমরা ধীরে ধীরে আক্রান্ত হই বিভিন্ন রোগে৷ কিন্তু ঠিক এই জায়গার সমাধানেই সবচেয়ে আপন বন্ধু হিসেবে কাজ করছে বা করতে পারে হোমমেইড ফুড৷ কারণ আমাদের শরীরের জন্য যেটা যতটা প্রয়োজনীয়, যা বর্জনীয়, যেটার স্বাদে যতটা চাই তার সকল ধরনের কাস্টমাইজেচ্শন আমরা কেবল হোমমেইড ফুড এ ই পেয়ে থাকব৷ কোনো রেস্টুরেন্ট আমাকে আলাদা করে কখনও আমার শারীরিক জটিলতা বিবেচনা করে সেভাবে খাবার তৈরী করে দিতে পারবে না৷ এটাই স্বাভাবিক৷
আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য শরীরে বিভিন্ন ধরনের বায়ো এক্টিভ উপাদানের উপাদানের উপস্থিতি ভিষণ জরুরী৷ এগুলো শরীরকে বিভিন্ন দিক থেকে এক্টিভ করে ও শরীরের বিভিন্ন জটিলতাকে হ্রাস করে৷ আর এসব বায়ো এক্টিভ উপাদান কিছু স্পেসিফিক খাবারে পাওয়া যায় ও কিছু স্পেসিফিক রোগ যেমন, লিভারের সমস্যা, ইনসুলিন নেওয়া, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বা এ্যাসিডিটি সমস্যা গুলো নিয়ন্ত্রণে কাজ করে৷ এমন যেকোনে সমস্যায় ভুক্তভোগী যে কেও চাইলেই তার মন মতো খাবার বাইরে কোথাও পাবে না৷ কিন্তু আবার একই সাথে আমাদের অনেকেরই চাকরি পড়াশোনা বা যেকোনো কাজের ব্যস্ততায় নিজেদেরও তৈরী করা সম্ভব নয়৷ সেখানেই সবচেয়ে বড় আস্থা ও ভরসা হয়ে দাড়ায় হোমমেইড ফুড৷ একজন হোমমেইড ফুড উদ্যোক্তা সবসময় ক্রেতার জন্য তার চাহিদা তার প্রয়োজন আর তার গ্রহণযোগ্যতা অনুযায়ী তাকে সার্ভিস দিয়ে থাকে৷ কাস্টমাইজ করার শতভাগ সুযোগ থাকে বলেই নিসন্দেহে হোমমেইড ফুড আমাদের রোগ নিরাময়ে অনেক বড় একটা সহযোগী বিষয়৷ কারণ যখন আমরা কেও কিডনী রোগী বা কেও ডায়াবেটিস আক্রান্ত বা আবার কেও এসিডিটি আক্রান্ত তখন আমাকে সেভাবেই খাবার গ্রহণ করতে হবে৷ এ পরিস্থিতি গুলোতে শারীরিক জটিলতা দূর করতে বা এ পরিস্থিতি যেনো না আসে সেজন্য দুদিক থেকেই হোমমেইড ফুড এর বিকল্প নেই৷ হোমমেইড ফুড এ আমরা আমাদের প্রয়োজন মতো তথা পছন্দ মতো বা বলতে পারি আামদের শারীরিক গ্রহণযোগ্যতা মতোই তেল, ভিটামিন, খনিজ লবণ, প্রোটিন বা কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করতে পারি৷ এটা নিশ্চিত করে হোমমেইড ফুড৷
যখন আমরা নিয়ম মেনে হোমমেইড ফুড গ্রহণ করি তখন তা আমাদের শারীরিক সিস্টেমটাকে নিয়ন্ত্রণ করে আর তা ধীরে ধীরে উন্নত হয়৷ ধীরো ধীরে আমরা সুস্থতার দিকে আগাতে পারি৷ কারণ শরীর যখন দীর্ঘদিন একটা ফাংশনাল ফুড সিস্টেমে অভ্যস্ত হয় তখন তা শরীরকে অসংখ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে৷ অর্থাৎ আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে৷ এই ফাংশনাল ফুড সিস্টেমকে একমাত্র নিশ্চিতকারকের নামই হলো হোমমেইড ফুড৷
লাবনী আক্তার
স্বত্বাধিকারী: নাবন্ন