বিশ্বের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত শিক্ষার্থীদের আরও বেশি সংখ্যায় ভর্তির সুযোগ দিচ্ছে। জাতিগত সংখ্যালঘুদের আবেদনকারীদের আরও বেশি করে ভর্তির অংশ হিসেবে বাংলাদেশিরা এই সুযোগ পাচ্ছেন।
যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু অভিজাত ও সুবিধাপ্রাপ্তরা পড়াশোনা করেন বলে সমালোচনা রয়েছে। এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে অক্সফোর্ড।
জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি কৃষ্ণাঙ্গ ও জাতিগত সংখ্যালঘু (বিএএমই) পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে বিভিন্ন জাতি ও বর্ণের স্নাতক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ছিল ২২ শতাংশ। এতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সবচেয়ে কম। ২০১৮ সালে ছিল ২ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়ে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক মার্টিন উইলিয়ামস বলেন, প্রত্যাশার চেয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সবচেয়ে কম। এটি সরলীকারণ। কিন্তু এই প্রবণতা সুবিধা বঞ্চিত সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
মার্টিন উইলিয়ামস আরও বলেন, এই অগ্রগতি আমাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রতিদিন কাজ করা ব্যক্তিদের পরিশ্রমের ফলে সম্ভব হয়েছে। আমাদের অ্যাকসেস ও আউটরিচ টিম স্কুল, পরিবার ও কমিউনিটির শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছে এবং তাদের জন্য যে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে তা তুলে ধরছে। আমাদের প্রস্তাব ও নিজেদের ফ্যাক্ট বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। শোনা কথা না বা দীর্ঘদিনের ধারণা নয়, অক্সফোর্ডের তাদেরও সুযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে কর্তৃপক্ষ কয়েকটি অনন্য উপায়ে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে তথাকথিত বাঙালি পারিবারিক গাইডের মাধ্যমে বাসায় বাসায় যাওয়া। এছাড়া শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে স্থানীয় ইমামদের সহযোগিতাও নেওয়া হচ্ছে।
অধ্যাপক উইলিয়ামস বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। কিন্তু আমরা অবগত ছিলাম নির্দিষ্ট কমিউনিটিতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রয়েছেন। আমি মনে করি, এসব কমিউনিটির অনেকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্থানীয় ইমামদের গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে অভিভাবকরা।
যুক্তরাজ্য সরকার দেশটির শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের বেশি করে সুযোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এই মাসের শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নতুন শিক্ষা কৌশল শুরুর কথা মাথায় রেখে এই চাপ দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী গেভিন উইলিয়ামসন বলেন, এক সপ্তাহ পর যুক্তরাজ্য ইইউ ছাড়বে। শিশু, তরুণ ও বয়স্কদের শিক্ষায় বিশ্বের নেতৃত্বস্থানীয় দেশ হওয়ার জন্য এটি আমাদের সুবর্ণ সুযোগ।