দেশে ফ্রি ফায়ার, পাবজিসহ কোনো গেম বন্ধের সুপারিশ বা নির্দেশনা আসেনি বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এদিকে গেম বন্ধ বিষয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে কোনো সুপারিশ আসেনি বলে নিশ্চিত করেছে নির্ভরযোগ্য সূত্র।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয় শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে দেশে ফ্রি ফায়ার ও পাবজির মতো জনপ্রিয় দুই গেম বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
মন্ত্রী বলেন,’আমরা তো প্রতিপক্ষ না। আমাদের দায়িত্বটা হচ্ছে যদি সরকার মনে করে যে এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার, অর্থাৎ বন্ধ করা দরকার আমরা ওই কাজটা সম্পন্ন করি। আমাদেরকে এরকম নির্দেশ কেউ দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, আমার কাছে মনে হয় না বন্ধ করাটা সমাধান। আমি এই জায়গাটায় এখন পর্যন্ত একমত হতে পারি না। আমাদের এখানকার গার্জিয়ানরা সেই পরিমাণ যোগ্যতাসম্পন্ন নয়, এ কারণে ছেলেমেয়ে নষ্ট হয়।
তিনি বলেন, আমি একটা জিনিস বুঝি। সেটা হচ্ছে, আমাদের যে ক্ষমতা আছে সেই ক্ষমতায় যদি একটা অ্যাপকে বন্ধও করি, আমি ভিপিএন কিন্তু বন্ধ করতে পারব না। ফলে যার খেলা সে খেলবেই।
অভিভাবকদের কাছে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা আর কোনো কারণে নষ্ট হয় না? তারা যখন সিগারেট খায় তখন নষ্ট হয় না? যখন মাদক নেয় তখন নষ্ট হয় না? ওগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন না কেন? এটার পেছনে কেন লেগে গেছেন এবং গেমের কারণে কী জন্য ইন্টারনেটের সুবিধা থেকে ছেলেমেয়েদের বঞ্চিত করবেন? আপনাদের সমস্ত জেনারেশন খোঁজেন। কোন জেনারেশন গেম খেলে নাই? আমাদের তো ভিডিও গেমসের দোকান ছিল। আইডিবি ভবনের কম্পিউটার দোকান থেকে সিডি পাইকারি বিক্রি হয়েছে। এখন প্রশ্ন তুলবেন, গেমে নেশা হয়ে যাচ্ছে। যেকোনো কিছুতেই নেশাগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে। সন্তান ফেসবুকের কোন সাইটে যেতে পারবে না পারবে সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কতক্ষণ থাকতে পারবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেগুলো না করে মাথা কাটার পথ ধরেছেন কেন?’
গত ২১ মে, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী গ্রামে মোবাইলে সহিংসতামূলক একটি গেম খেলার জন্য এমবি কেনার টাকা না পেয়ে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে মামুন নামের এক কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ফের আলোচনায় আসে পাবজিসহ একই জাতীয় অন্যান্য গেমস।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম দুটি নিয়ন্ত্রনের দাবি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, সরকার যখন সহজলভ্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রাপ্তির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, ঠিক তখন আগামী তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তির অপব্যবহার করে বিপথগামী হয়েছে, যা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। এজন্য গেম দুটি নিয়ন্ত্রণ চায় সংগঠনটি।