অনলাইন গেমসের প্রতি আসক্তিকে ‘ইলেকট্রনিক মাদকের’ সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে। সেখানে গেমস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আরও নিয়ন্ত্রণ আনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, কয়েক মাস ধরেই চীনের প্রযুক্তি এবং শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে দেশটির সরকার। বিনিয়োগকারীরাও চীন সরকারের এসব নীতির কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সরকারের এমন পদক্ষেপে সম্প্রতি বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশটির বৃহৎ দুটি গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। আজ মঙ্গলবার টেনসেন্ট ও নেটএস নামের প্রতিষ্ঠান দুটির শেয়ারের মূল্য ১০ শতাংশের বেশি পড়ে গেছে।
চীনে রাষ্ট্রীয় দৈনিক ইকোনমিক ইনফরমেশন ডেইলির খবরে বলা হয়, কোনো প্রতিষ্ঠান বা খেলা এমনভাবে গড়ে তোলা উচিত না, যার ফলে একটি প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। পত্রিকাটির এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চীনের অনেক কিশোর-কিশোরী অনলাইন গেমসে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এতে তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ‘অনর অব কিলিং’ নামের একটি গেমস শিক্ষার্থীরা দিনে আট ঘণ্টা পর্যন্ত খেলছে বলে দেখা গেছে।
‘অনর অব কিলিং’ গেমসটি অনলাইনে বেশ জনপ্রিয়। গেমসটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেনসেন্ট। এ ছাড়া চীনের অনলাইন মিউজিক স্ট্রিমিংয়ে একচেটিয়া ব্যবসা করছিল টেনসেন্ট। দেশটিতে ৮০ শতাংশের বেশি মিউজিক স্ট্রিমিংয়ের স্বত্ব রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এই প্রতিষ্ঠানের ওপর খড়্গহস্ত হয়েছে চীন সরকার। এ অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন রেকর্ডিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, সেই মিউজিক নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। এর জেরে গত সপ্তাহেও কোম্পানিটির শেয়ারের দাম এক দফা কমে যায়। এরপর আজ আবারও প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার মূল্যের পতন হলো। তবে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
শুধু টেনসেন্টই না, চাপে পড়ে চলতি বছর চীনসহ যুক্তরাষ্ট্র ও হংকংয়ের বাজারে তালিকাভুক্ত অনেক চীনা প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে ধস নামে। এর আগে গত মাসে স্কুলের বাইরে ‘মূল’ বা ‘আবশ্যিক’ বিষয়গুলো কোনো বাণিজ্যিক কোচিং সেন্টারে পড়ানো যাবে না বলে আদেশ দেয় চীন। বাণিজ্যিক কোচিং সেন্টার খাতে বিদেশি বিনিয়োগও নিষিদ্ধ করা হয়। এর জেরে গত সপ্তাহে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের মূল্য পড়ে যায়।