জনপ্রিয় ভিডিও গেম অ্যাক্সি ইনফিনিটিতে সাইবার হামলা চালিয়েছে হ্যাকার গোষ্ঠী। এতে ৬২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ক্রিপ্টোকারেন্সি হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে তারা। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় এ ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরির বিষয়টি স্বীকার করেছেন গেম কোম্পানির এক শীর্ষ নির্বাহী। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট ও এনগ্যাজেট।
কোম্পানিটি জানায়, গত বুধবার সাইবার হামলার শিকার হয়েছে ভিডিও গেমটির ব্লকচেইন রোনিন নেটওয়ার্ক। অ্যাক্সি ইনফিনিটি ও রোনিনের পরিচালনায় থাকা ডেভেলপার গ্রুপ স্কাই মাভিজ জানায়, তারা মাত্র মঙ্গলবার হ্যাকিংয়ের বিষয়টি ধরতে পেরেছেন। ব্লকচেইনে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন হয় এবং এটা ডিজিটাল মুদ্রার ফাইন্যান্সিয়াল নার্ভ সেন্টার হিসেবে কাজ করে।
২৩ মার্চ সাইবার হামলা চালানো ওই হ্যাকারের পরিচয় এখনো জানতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। বেহাত হওয়া ডিজিটাল সম্পদের মধ্যে আছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৬০০টি ইথারিয়াম টোকেন এবং ২ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের কয়েন টোকেন।
হ্যাকিংয়ের সময় বেহাত হওয়া ডিজিটাল সম্পদের বাজারমূল্য ছিল ৫৪ কোটি ডলার। তবে গত কয়েক দিনে ক্রিপ্টো মুদ্রাবাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় চুরি হওয়া ওই সম্পদের দাম বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৫০ লাখ ডলারে। ব্লকচেইন বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান এলিপ্টিকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টো হ্যাকিংয়ের ঘটনা এটি।
নন-ফাঞ্জিবল টোকেন বা এনএফটিনির্ভর গেম ‘অ্যাক্সি ইনফিনিটি’। এনএফটি বাজার পর্যবেক্ষক ‘ক্রিপ্টোস্ল্যাম’-এর তথ্য অনুযায়ী বিক্রির আকারের হিসাবে বিশ্বের বৃহত্তম এনএফটি সংগ্রহ রয়েছে গেমটিতে।
এক ব্লগ পোস্টে রোনিন জানায়, ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারো ব্যক্তিগত ‘কি’ ও পাসওয়ার্ড চুরি করে ক্রিপ্টো তহবিলে অনুপ্রবেশ করেছিল হ্যাকার। অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে তারা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে সরাসরি কাজ করছে। পাশাপাশি গেমারদের তহবিলে যেন ক্ষতি না হয়. সেটি নিশ্চিত করতে অ্যাক্সি ইনফিনিটির সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটি। নেটওয়ার্কটিতে তহবিল জমা রাখা এবং উত্তোলনের সেবা ব্যবহারকারীদের জন্যও বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে রোনিন।
ক্রিপ্টোকারেন্সিনির্ভর প্লাটফর্মগুলোয় দীর্ঘদিন ধরেই হ্যাকারদের দৌরাত্ম্য চলছে। গত আগস্টে হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছিল বিকেন্দ্রিক আর্থিক সেবা ‘পলি নেটওয়ার্ক’। তবে হ্যাকিংয়ের পর ৬১ কোটি ডলার সমমূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রায় পুরোটাই ফেরত দিয়েছিল হ্যাকার।
২০১৮ সালে ৫৩ কোটি ডলারের ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি হয়েছিল টোকিও-ভিত্তিক প্লাটফর্ম ‘কয়েনচেক’ থেকে। ২০১৪ সালে হ্যাকারদের কাছে ৫০ কোটি ডলার সমমূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি হারিয়ে ধসে পড়েছিল জাপানের ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ ‘মাউন্ট গক্স’।