অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলির মধ্যে একটি হল ডিভাইস স্লো হয়ে যাওয়ার সমস্যা। ফোনটি যখন নতুন থাকে তখন কোনো সমস্যা থাকে না কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ডিভাইসটি স্লো হতে থাকে। ফোনটিতে ইন্টারনাল মেমোরি অথবা র্যাম কম থাকলে অথবা প্রয়োজনের অধিক অ্যাপ ইনস্টল করা থাকলে এই সমস্যাটি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। যদি আপনার ফোনেও এরকম সমস্যা থাকে তাহলে এখানে আমরা আপনাদের বলব কিভাবে আপনারা আপনার ফোনের স্লো হয়ে যাওয়ার সমস্যা দূর করতে পারবেন।
অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ডিলিট করে দিন-
ফোন স্লো হয়ে যাওয়ার অন্যতম বড় কারণ ফোনে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ থাকা। এই অ্যাপগুলি আপনার ফোনের স্টোরেজ দখল করে রাখে কিন্তু কাজে লাগে না। এছাড়াও কিছু অ্যাপ ক্রমাগত ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে এবং ফোনের র্যামকে ব্যবহার করতে থাকে এবং ফোনের প্রসেসিংকে স্লো করে দেয়। তাই আপনি সেই অ্যাপগুলিকে ডিলিট করে দিন যেগুলি আপনি খুবই কম ব্যবহার করেন।
অ্যাপের ক্যাশে ডাটা ক্লিয়ার করুন-
হোটেল বুকিং, খাবার অর্ডার, ফ্লাইট বুকিং জাতীয় অ্যাপগুলি সবসময় ব্যবহার না করলেও সেগুলিকে ডিলিট করা যায় না। তাই এই ধরনের অ্যাপগুলির ক্যাশে ডাটা ডিলিট করে রাখা দরকার। এই ক্যাশে ডাটা ক্লিয়ার করার অপশণটি সেটিংস এর মধ্যে আপনারা পেয়ে যাবেন। এছাড়াও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এর মত অ্যাপগুলি খুব কম সময়ে অনেকটা ক্যাশে ডাটা জমিয়ে ফেলতে পারে। তাই যত বেশি পারবেন এই ধরনের অ্যাপগুলির ক্যাশে ডাটা ক্লিয়ার করুন।
যেকোনো অ্যাপের লাইট ভার্সান ব্যবহার করুন-
ফেসবুক, টুইটার, মেসেঞ্জার এর মত অ্যাপের লাইট ভার্সান প্লে স্টোরে উপলব্ধ। এই অ্যাপগুলি ব্যবহার করলে আপনার ফোনের উপর চাপ কম পড়ে, ফলে ফোনটির প্রসেসিং স্পিড বাড়বে।
ফোন আপডেট করুন-
অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে কিছু সময় অন্তর অন্তর আপডেট আসতে থাকে। এগুলির মধ্যে কিছু হয় কোম্পানির দ্বারা পাঠানো আবার কিছু হয় অ্যান্ড্রয়েডের থেকে আসা আপডেট। এই আপডেটগুলি আপনার স্মার্টফোনকে আগের থেকে ভালো করে তুলতে সক্ষম। এছাড়াও এই আপডেটের মাধ্যমে কোম্পানি আপনার ফোনে বিভিন্ন বাগ কমানো এবং সিকিউরিটি প্যাচও বাড়ায়। এই নতুন আপডেট গুলি করলে আপনার ফোন আরো দ্রুত হয়ে যায়। তবে নতুন আপডেট করার সময় অবশ্যই আপনার স্টোরেজের ব্যাপারেও খেয়াল রাখবেন কারণ অনেক সময় আপডেটটি বড় হলে সেটি ফোনকে দ্রুত করার বদলে আরো স্লো করে দেয়।
মেমোরি কার্ড ব্যবহার করুন-
স্মার্ট ফোনকে দ্রুত করার অন্যতম সহজ রাস্তা হল মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা। এটি ব্যবহার করলে আপনি আপনার ফোনের ছবি ভিডিও বিভিন্ন ধরনের ফাইল ইন্টার্নাল মেমোরিতে না রেখে এসডি কার্ডের মধ্যে সেভ করে রাখতে পারেন। এর ফলে আপনার ফোনের ইন্টারনাল মেমোরির ওপর চাপও কম পড়বে এবং আপনার ফোনও ভালোভাবে চলবে। আর যদি এসডি কার্ডের মেমোরি ভরে যায় তাহলে আপনি সেটিকে ফরম্যাট করে আরো কিছুদিন ব্যবহার করতে পারেন।
ফোন রিস্টার্ট করুন-
যেকোনো স্মার্টফোনকে আবার ভালোভাবে চালানোর সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো সেই ফোনটিকে রিস্টার্ট করা। যদি আপনার মনে হয় যে আপনার ফোন ল্যাগ করছে বা স্লো হয়ে গেছে তাহলে আপনি একবার ফোনটিকে রিস্টার্ট করে নিন। তাহলে আবার আপনার ফোনটি ঠিকভাবে কাজ করবে।
ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করুন-
ইন্টারনাল স্টোরেজের মধ্যে সব ছবি ভিডিও ফাইল না রেখে আপনি ক্লাউড স্টোরেজও ব্যবহার করতে পারেন। ইন্টারনাল মেমোরির ওপর চাপ দিলে ফোনে প্রসেসিং স্পিড অনেক স্লো হয়ে যায়। তার থেকে যদি আপনি ক্লাউড স্টোরেজ গুগল ক্লাউড ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ফোনের ইন্টারনাল মেমোরি তে চাপ পড়বে না এবং প্রসেসিং স্পিড ভালো থাকবে।
ফোনটাকে রিসেট করুন-
যদি ওপরে বর্ণিত সবকটি পদ্ধতি ব্যবহার করার পরও আপনার ফোনের প্রসেসিং স্পিড স্লো হয় তাহলে আপনি একবার আপনার ফোনটিকে রিসেট করে নিন। ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট করলে আপনার ফোনের ইন্টারনাল মেমোরি সমস্ত ডেটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে এবং আপনার ফোনটি আবার নতুনের মত হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ছয় থেকে আট মাস ব্যবহার করার পরে ফোনটিকে একবারই রিসেট করে নেওয়া ভালো তবে ফ্যাক্টরি রিসেটের আগে অবশ্যই আপনার ফাইল এর ব্যাকআপ নিয়ে নেবেন।