কেউ সাবস্ক্রাইব ফর সাবস্ক্রাইবার, কেউ সাব ফর সাব, আবার কেউ লাইক ফর লাইক লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন৷
আমাদের মধ্যে অনেকেই এই ধরনের পোস্ট গুলো দেখে থাকবেন৷ এ ধরনের পোস্ট করার পেছনে রহস্যটাকি তা সম্পর্কে হয়তোবা আমরা খুব বেশী জানিনা।
আজকের আর্টিকেলে আমরা এর পেছনের মূল কাহিনী জানবো৷
বর্তমান সময়ে ইউটিউব বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট এবং ভিডিও কনটেন্ট করে আয় করার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম। এখন যে কেউ ইচ্ছা করলে ভিডিও কনটেন্ট বানিয়ে ইউটিউব থেকে আয় করতে পারে । তবে সেই ক্ষেত্রে ইউটিউব চ্যানেলটিকে মনিটাইজ হতে হবে৷। এবং মনিটাইজ হওয়ার মূল শর্ত হচ্ছে ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম এবং ১০০০ সাবস্ক্রাইবারস৷
“বিগেনারদের” জন্যে ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম এবং ১০০০ সাবস্ক্রাইবার আকাশচুম্বী ব্যাপার৷ কারন তারা যত ভাল কনটেন্ট কেন না হোক সেগুলো মানুষের কাছে পৌছাতে না পারলে তার কোন মূল্য থাকে না৷ সুতরাং ” বিগেইনার ” প্রথম থেকেই “শর্টকাট” উপায় অবলম্বন করার চেষ্টা করে৷
আর সেটি হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্সচেঞ্জ। সাবস্ক্রাইব ফর সাবস্ক্রাইব, লাইক ফর লাইক, হিট ফর হিট এই সবগুলো সমন্বিত রূপ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্সচেঞ্জ।
সোশ্যাল মিডিয়া এক্সচেঞ্জ জিনিসটাকে যদি আমরা অত সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করতে চাই তাহলে নিচের উদাহরণটি লক্ষ্য করা যেতে পারে!
মনে করুন যে , দুইজন ইউটিউবার ! তারা একে অপরের চ্যানেল টি সাবস্ক্রাইব করিয়ে নিতে চায়। এবং সে কারণেই তারা একে অপরের ভিডিও না দেখে অথবা কনটেন্ট সম্পর্কে ধারণা না নিয়ে বা কনটেন্ট কোয়ালিটি যাচাই-বাছাই না করে সরাসরি একে অপরের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে ।
ব্যাপারটা দারুন তাই না?
জেনে আরো অবাক হবেন যে , সোসিয়াল মিডিয়া এক্সচেঞ্জ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সাইট রয়েছে। যেগুলোতে ইচ্ছে করলে আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্সচেঞ্জ করতে পারেন ।
যদি আমি সোশ্যাল মিডিয়া এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে আমার ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব নেই অথবা ফেসবুক পেজে লাইক নেই তাহলে কি কোন ধরনের ক্ষতি হবে?
ক্ষতি হবে কি হবে না সে সম্পর্কে আমার তেমন ধারণা নেই৷ তবে এইটুকু বলতে পারব যে আপনার সেই সাবস্ক্রাইব বা লাইক বেশীক্ষন টিকবে না । জোর হলে ২৪ ঘন্টা! এর বেশিক্ষণ আপনাকে সাবস্ক্রাইবার গুলো ধরে রাখতে পারবেন না৷ কারণ দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ইউটিউব, ফেইসবুক সহ আরো অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া ফেইক সাবস্ক্রাইবার, লাইক, রিয়েক্ট এগুলো পর্যবেক্ষণ করে এবং তার মধ্যে থেকে ফেক সাবস্ক্রাইবার এবং লাইক গুলো কেটে ফেলে। এবং দিনশেষে আপনার সাবস্ক্রাইবার অথবা লাইক সংখ্যা “০”৷
তবে মাঝেমধ্যে কিছু সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার অথবা লাইক থাকে৷ এবং ধরে নিন এক পর্যায়ে যদি এমন করতে করতে আপনার চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার পূরণ হয় তাহলে যে আপনি মনেটাইজ এর জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন ব্যাপারটা ঠিক তেমন নয় ! ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূর্ণ হওয়ার পরে ইউটিউব দেখতে চাই আপনি সাবস্ক্রাইবার এবং ওয়াচ টাইম গুলো কোন সোর্স থেকে পেয়েছেন৷
এবং সেখানে গিয়ে যদি দেখে যে আপনি ব্যতিক্রমধর্মী কোন সোর্স থেকে সাবস্ক্রাইবার এবং ওয়াচ টাইম পেয়েছেন তাহলে সেই ক্ষেত্রে আপনার চ্যানেল টি ব্যান হতে পারে এ সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এএক্সচেঞ্জ এখন একটি ব্যবসা!
বলতে গেলে বিগেইনারদের ঠকানোর ব্যাবসায় নেমেছে কিছু লোক৷ তাদের লক্ষ্য সাবস্ক্রাইব বা লাইক বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া৷ তারা খুব কম সময় এবং কম পরিশ্রমে আপনার চ্যানেল অথবা ফেইসবুক পেইজে সোশ্যাল মিডিয়া এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে লাইক অথবা সাবস্ক্রাইবার নিয়ে আসে বটে, কিন্তু পরক্ষণেই তা উধাও হয়ে যায়! এবং মাঝখান থেকে আপনার টাকা গুলো জলে চলে যায়!
সুতরাং এই ধরনের প্রতারকদের হাত থেকে দুরে থাকুন!