ইদানীং মার্কেটে দেখা যাচ্ছে অ্যান্ড্রোয়েড ফোন গুলোতে এক্সেটেন্ডেড ভার্চুয়াল র্যাম দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। আমরাও মনে করছি এই এক্সট্রা র্যাম আমাদের ফোনগুলোকে আরো ফাস্ট করছে এবং অনেকেই এই ফিচার এর জন্য এক্সট্রা টাকা খরচ করে এই ফোনগুলো কিনছেন। আসলেও কি আমরা লাভবান হচ্ছি?
এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আগে বুঝতে হবে এ্যান্ড্রোয়েড ফোন এর র্যাম ফাংশন কিভাবে কাজ করে । আমরা যখন ফোনে একসাথে অনেক গুলা এ্যাপলিকেশন ইউজ করি তখন এ্যান্ড্রোয়েড “পেজিং” এর মাধ্যমে আমাদের ফোনের র্যাম কে কয়েকটা পেইজে ভাগ করে ফেলে। আর ইউজড পেইজের ডাটা গুলোকে স্টোরেজে সোয়াপ করে আরো স্পেস ক্রিয়েট করে। এইটা এ্যান্ড্রোয়েড ফোন কিভাবে করে? এইটা করে কার্নেল সোয়াপ ডেমন এর মাধ্যমে। আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ডে পরে থাকা অ্যাপ গুলার ক্লিন পেইজের কপি আগেই এই কার্নেল সোয়াপ ডেমন এর মাধ্যমে আমাদের স্টোরেজে সেইভ হয়ে থাকে। তাই আমরা চাইলেই যেকোনো সময় সেই ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপটাকে বন্ধ করে র্যাম ফ্রী করে নিতে পারি।
তাহলে ভার্চুয়াল র্যাম এর কাজ কি? ভার্চুয়াল র্যাম ও এই সেইম কাজটাই করে “সোয়াপ”। যেনো একসাথে অনেকগুলা ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রান করা যায় স্মুথ ভাবে।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, আমাদের দেশে যারা এই ফোন আনছে তারা সবাই কমিউনিকেশন করছে এই র্যাম বাড়ানোর ফলে বেটার গেমিং পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে। যেটা আসলে একধরনের প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না। এতে করে ফোনের দাম বাড়িয়ে ক্রেতার সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে।
ভার্চুয়াল র্যামের ব্যাপারটা আসলে এরকম না। এইটার জন্য গেইমিং এ কোনো এক্সট্রা এফ পি এস পাওয়া যাবে না। আর আজকালকার নতুন ফোন গুলোর এ্যান্ড্রোয়েড ভার্সন এমনিতেই অনেক ফাস্ট। এই ভার্চুয়াল র্যাম কাজে লাগে মান্ধাতা আমলের স্লো ফোন গুলোকে ফাস্ট করতে।
তার চেয়েও বড় ব্যাপার হচ্ছে ভার্চুয়াল র্যামের একটা ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক আছে। এ্যান্ড্রোয়েড ফোনের যেই স্টোরেজ আছে এগুলোর লিমিটেড লাইফস্প্যান থাকে। অর্থাৎ একটা নির্দিষ্ট রাইট/রিরাইট করার হার থাকে। শুধু শুধু এই একটা মার্কেটিং গিমিক ব্যবহার করা মানে হচ্ছে ফোনকে আরো দুর্বল করে ফেলা। যদি এই ফিচার সহ ফোন কিনে ফেলে থাকেন তবে আপনার জন্য সাজেশন থাকবে ফিচারটি বন্ধ রাখার। কারন এই এক্সটেন্ডেড ভার্চুয়াল র্যাম কাজে তেমন আসছে না কিন্তু সাধারন এর চেয়ে অনেক বেশি হারে সোয়াপিং এবং রাইট/রিরাইট এর মাধ্যমে আপনার ফোনের স্টোরেজ এর লাইফস্প্যান কমিয়ে আনছে। একটি ফোনের স্টোরেজ লাইফস্প্যান যদি ১ বছর হয়ে থাকে তাহলে এই ভার্চুলায় র্যাম ব্যবহার করার কারণে সেই স্টোরেজ লাইফস্প্যান কমে ছয় থেকে সাত মাসে নেমে আসবে যা আপনার ফোনের ক্ষতি ছাড়া ভালো করবে না।
বাংলাদেশে এই ফোন গুলো যারা বাজারজাত করছে তারা সবাই ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিঃ
ভিভোর মোডেল গুলোঃ
ভিভো ওয়াই২১ (৪জিবি র্যাম + ১জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ১৪৯৯০ টাকা
ভিভো ওয়াই২১টি (৪জিবি র্যাম + ১জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ১৭৯৯০ টাকা
ভিভো ওয়াই৫৩এস (৮জিবি র্যাম + ৪জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ২০,৯৯০ টাকা
ভিভো ২৩ই (৮জিবি র্যাম + ৪জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ২৭,৯৯০ টাকা
অপ্পোঃ
অপো এ৭৬ (৬জিবি র্যাম + ৫জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ১৯,৯৯০ টাকা
অপো এ৯৫ (৮জিবি র্যাম + ৫জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ২২,৯৯০ টাকা
অপো এফ১৯ প্রো (৮জিবি র্যাম + ৫জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ২৪,৯৯০ টাকা
স্যামসাংঃ
এম৩২ (৬জিবি র্যাম + ৪জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ২২,৯৯৯ টাকা
এ৭২ (৮জিবি র্যাম + ৪জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ৪৬,৯৯৯ টাকা
এ৫২ (৮জিবি র্যাম + ৪জিবি ভার্চুয়াল র্যাম)। দাম – ৪৫,৯৯৯ টাকা