সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে স্বনির্ভরতার লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তাবিত ৫ হাজার ২০০ কোটি ডলারের চিপস অ্যাক্টটি ফের সিনেটে উপস্থাপিত হয়েছে। সিএনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উচ্চকক্ষে বিলটি ৬৪-৩৪ ভোটে অনুমোদন পেয়েছে। প্রয়োজনীয় সংশোধনী শেষে আগামী সপ্তাহে বিলটি প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা চালুতে বিভিন্ন কোম্পানিকে কর অব্যাহতি ও ভর্তুকি দিতে বিলটি উত্থাপন করা হয়। কয়েক বছর ধরে চলা চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ, জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে বিলটিকে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিলটি পাসের চেষ্টা করলেও প্রায় এক বছর শেষ হলেও তা চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি।
মঙ্গলবারের ভোট শুরুর আগে সিনেট সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা চাক শুমার বলেন, বিলটি মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়বে, মার্কিন শিল্পোৎপাদন খাত চাঙ্গা করবে, আমাদের সরবরাহ চেইন সংকট দূর করবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ সুরক্ষা দেবে।
তিনি আরো বলেন, বিলটি পাস না হলে যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিক থেকেই পিছিয়ে পড়বে। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি ও এক নম্বর উদ্ভাবক দেশের সম্মান খোয়াবে।
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে চিপ শিল্পে বিনিয়োগ কমিয়ে বা পিছিয়ে নেয়ার হুমকি দেয় স্থানীয় ও এশীয় চিপ নির্মাতা কোম্পানিগুলো। ওয়াশিংটনের প্রস্তাবিত চিপস অ্যাক্ট বাস্তবায়নে গড়িমসিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
সম্প্রতি এক ঘোষণায় ওহাইওতে ২ হাজার কোটি ডলার ব্যয়ে কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটার কথা জানায় ইন্টেল। জিডিনেটকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে ইন্টেলের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে ওহাইওতে আধুনিক প্রযুক্তিসংবলিত কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে না। মূলত চিপ উৎপাদনসংক্রান্ত আইন এখনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত।
এক বিবৃতিতে মার্কিন চিপ নির্মাতা কোম্পানিটি জানায়, চিপ উৎপাদন আইন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া প্রত্যাশার তুলনায় ধীরগতিতে এগোচ্ছে। সেই সঙ্গে কবে নাগাদ এটি সম্পন্ন হবে সেটিও পরিষ্কার নয়।
ইন্টেলের পাশাপাশি বিনিয়োগ সংকোচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্য মার্কিন কোম্পানি গ্লোবালফাউন্ড্রিজ। বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ এ চুক্তিভিত্তিক চিপ নির্মাতা কোম্পানিটি জানায়, চিপস অ্যাক্টের ভবিষ্যতের ওপর নির্ভর করবে তারা যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াবে কিনা। নিউইয়র্কে একটি কারখানা স্থাপনে ১০০ কোটি ডলার ব্যয়ের পরিকল্পনা রয়েছে গ্লোবালফাউন্ড্রিজের। সম্প্রতি গ্লোবালফাউন্ড্রিজের সিইও টম কফিল্ড বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিলটি পাস না হলে নিউইয়র্কে পরিকল্পিত সেমিকন্ডাক্টর কারখানা বিলম্বিত হবে।