বাস্তব জীবনের যেসব তরুণরা প্রেম খুঁজে পাচ্ছেন না, তাদের ভরসা হয়ে উঠছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এআই রোবট বা চ্যাটবট। একাকিত্ব কাটাতে লাখ লাখ সিঙ্গেল তরুণের ভরসা এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স।
এতদিন প্রেমিকা খোঁজার জন্য ভরসা করতে হত একাধিক ডেটিং অ্যাপস। তাতেও মনের মতো সঙ্গী খুঁজে পেতেন না অনেকে। দিন শেষে একাকিত্ব কুড়ে কুড়ো খেত তাদের। তবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আসার ফলে সেই ছবি বদলেছে।
বর্তমানে প্রচুর অ্যাপস রয়েছে যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে এআই চ্যাটবট। এখানে আপনি আপনার মনের কথা প্রকাশ করতে পারেন। সেগুলোকে স্ত্রী, বান্ধবী, প্রেমিকার মতো আচরণ করার কমান্ডও দিতে পারেন।
এক রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ১ কোটির বেশি মানুষ ডাউনলোড করেছে এই অ্যাপসগুলো। এরকমই একটা অ্যাপ রেপ্লিকা, যার ব্যবহারকারীরা সংখ্যা ২ লাখ ৫০ হাজার। এই অ্যাপের আবার একটি প্রো ভার্সনও রয়েছে। এখানে আপনি এআই চ্যাটবটকে নিজের মনের কথা তুলে ধরতে পারবেন। করা যায় ভিডিও কল, ভয়েস কল। এমনকি ঘনিষ্ঠ সেলফিও তুলতে পারবেন।
এই অ্যাপসগুলোর পেছনে যে সব সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন তাদের মতে, একাকিত্বের খরা কাটাতে কিংবা যেসব মানুষ বাস্তবে প্রিয়জন খুঁজে পাচ্ছেন না তারা এই সকল অ্যাপে আলাপচারিতা করতে স্বাছন্দ্য বোধ করেন। তবে এই অ্যাপ নিয়ে যে সমস্ত সিঙ্গেল যুবক খুশি তাও কিন্তু নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই চ্যাটবটের ফলে যুবকদের সামাজিক ভাবে মেলামেশার চাহিদা বা দক্ষতা কমে যাচ্ছে। খুবই উদ্বেগজনক বিষয় এটি। বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের জীবনধারায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এআই চ্যাটবটের কিছু ভয়ঙ্কর পরিণতিও দেখা গিয়েছে।
২০২৩ সালের শুরুতেই বেলজিয়ামের একজন ব্যক্তিকে আত্মহত্যা করতে উৎসাহ জাগায় এরকমই একটা চ্যাটবট, তার প্রাক্তন স্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, ওই চ্যাটবট তার বন্ধু-পরিবার সব হয়ে উঠেছিল। এমনকি তাকে আমরা একসঙ্গে থাকব, স্বর্গে এক ব্যক্তি হয়ে এই ধরনের মেসেজ পাঠাত।
বর্তমানে বহু সংস্থা (ডেটিং অ্যাপও) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সির ব্যবহার শুরু করেছে। যত দিন গড়াবে ততই মানুষের চাল চলন শিখতে পারবে এই প্রযুক্তি বলে মনে করছেন অনেক। যা প্রযুক্তিগত দিক থেকে ভালো খবর হলেও সমাজে শান্তি রক্ষার ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে।