বাংলাদেশের বাজারে এই বছর জুন মাসের ১৩ তারিখে লঞ্চ করা হয়েছে অপো রেনো ৩ প্রো৷ এটি একটি হাই মিড রেঞ্জের ফোন৷ বলতে গেলে ফোনটি লঞ্চ করা হয়েছে আজ থেকে প্রায় চার মাস আগেে। চার মাসের মধ্যে ফোনটি তার গ্রাহকদের কেমন সন্তুষ্ট করতে পেরেছে সেটি নিয়েই মূলত এই আর্টিকেল।
আর্টিকেলটিতে আমরা জেনে নেব অপো রেনো ৩ প্রো এর একটি সংক্ষিপ্ত স্পেসিফিকেশন এবং রিভিউ।
তাহলে সর্বপ্রথম এর ডিজাইন নিয়ে কথা বলা যাক !
ফোনটি বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে একটি মাত্র রং এ পাওয়া যাচ্ছে। এবং সেটি হচ্ছে ব্লু৷ ফোনের ডিসপ্লে এবং বিল্ড মেটারিয়ালস এর সাথে বেশ মানিয়ে নিতে পেরেছে এই কালারটি৷
সে কারণেই বলতে গেলে ফোনটি একদিক থেকে বেশ মানানসই। এবং খুব ভালোভাবে ওয়েট ডিস্ট্রিবিউশন করা হয়েছে৷ সেটি বলাই চলে৷
এবং সে কারণে হাতে নিয়ে এক ধরনের প্রিমিয়াম ফিলিংস পাবেন৷ তার পাশাপাশি মনে হবে না যে আপনি এত বড় একটা ডিভাইস হাতে ধরে রয়েছেন।
যদিও সবার চাহিদা ছিল অপো এই প্রাইসে সবার জন্য গ্লাস বডির ফোন নিয়ে আসবে । তবে সেই ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিক বডি।
অন্য সকল ফোনের মত বিল্ট মেটারিয়ালস এ কোন ভিন্নতা ছিল না । সবকিছু ঠিকঠাক । যে স্লটটি দেওয়া হবে সেখানে আপনারা ডুয়েল সিম কার্ডের সাথে মাইক্রো এসডি কার্ড প্রবেশ করাতে পারবেন৷
এবার আসা যাক ফোনের ডিসপ্লেতে!
এখানে ব্যবহার করা হয়েছে ১৬.৩ সেন্টিমিটার বা ৬.৪ ইঞ্চির একটি ফুল অ্যামোলেড ডিসপ্লে । যেটি এই বাজেটে সবার এক্সপেকটেশন৷
মাল্টিটাচ সমৃদ্ধ টাচস্ক্রিন সাথে রয়েছে!
রেজুলেশন ফুল এইচডি প্লাস অর্থাৎ ২৪০০×১০৮০
স্ক্রীন রেশিও ৯৯.৫%
বাজেট অনুযায়ী সবকিছু একদম পার্ফেক্ট!
এধরনের ফোনের আউটডোরে ভিজিবিলিটি যথেষ্ট ভালো হয়৷ সুতরাং এই ফোনের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কিছু হয়নি৷
গেমিং এর ক্ষেত্রে অথবা সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট ব্রাউজ এর ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবেন না৷ এর টাচ রেসপন্স খুবই ভালো ছিল৷
তবে আমার মনে হয় সে ফুল এইচডি প্লাস ডিসপ্লে থাকা শর্তেও এখানে শার্পনেস এর ঘাটতি রয়েছে৷ আশা করি এর উত্তরসূরী ফোনগুলোতে শার্পনেস এর ঘাটতি দূর করা হয়েছে৷
যদিও ফোনটি একটি হাই মিড রেঞ্জের ফোন তারপরও এটি ফ্লাগশিপ ফোন হিসেবে মেনে খুবই কষ্ট হয়৷
তবে ফোনের যে যে ভার্সনটি চিনে লঞ্চ করা হয়েছে সেটি ফ্লাগশিপ ফোন এর কাছাকাছি বলা চলে।
গেমিং এক্সপেরিয়েন্স মোটামুটি ছিল। তবে আমার এক্সপেক্টেশন আরেকটু বেশি ছিল এই ফোনটির কাছ থেকে । যদিও ফোনটিতে গেমিং প্রসেসর ব্যবহার করা হয়নি তবে এই রেঞ্জের যে সকল ফোন রয়েছে সেগুলোতে গেমিং প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। যার কারণে ডিফল্ট সেটিংস এ পাবজি, ফ্রী ফায়ার, পাবজি লাইট এই ধরনের গেম খেলতে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হলেও, একটু যদি গ্রাফিক্স সেটিংস বাড়িয়ে দেন তাহলে সেই ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে৷
ফোনের সাউন্ড এক্সপেরিয়েন্স একদমই বাজে ছিল। যদি কথাটা বলতে কষ্ট হয়!
এবার কথা বলব ক্যামেরা নিয়ে!
পেছনের প্রাইমারি ক্যামেরা হিসেবে দেয়া হয়েছে ৬৪ মেগাপিক্সেল এর একটি ক্যামেরা। সাথে আরো থাকছে ১৩ মেগাপিক্সেলের এর টেলিলেন লেন্স৷ ৬৪ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ক্লিয়ার মেন ক্যামেরা,এবং ৮ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স।
প্রাইমারি ক্যামেরার পারফরম্যান্স ছিল বেশ ভালই৷ ক্যামেরা দিয়ে যে সকল ছবি আপনার তুলতে পারবেন সেগুলো সবগুলোই প্রায় সোশ্যাল মিডিয়া রেডমেড৷ তবে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম সেটি হচ্ছে এই ফোন দিয়ে তোলা ছবিগুলোর কালার মোটেও রিইয়েলিস্টিক ছিল না। কালার গুলো যদি রিয়েলিস্টিক হতো তাহলে আরেকটু ভালো হতো৷ যদিও এই ধরনের কালারের মধ্যে এক ধরনের সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকবে৷ যা অধিকাংশ মানুষের পছন্দ হবে, আশা করি৷ তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে তেমন ভাল লাগেনি৷
ডেলাইট কম এর সাথে সাথে ক্যামেরার পারফরম্যান্সের ঘাটতি দেখা দেবে । তবে নাইট মোড ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
বাংলাদেশি মূল্যে ফোনটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৯৯৯০ টাকা।