চটুল, টক্সিক আর গীবত নির্ভর বিষয়ের প্রতি মানুষের আকর্ষণের তোড়ে সত্যিকারের জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যু চাপা পড়ে যাচ্ছে, কষ্টে থাকছে কোটি কোটি নাগরিক।
এই দেশে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষ কৃষক, কয়েক কোটি জেলে কিংবা শ্রমিক, আরো কোটি খানেক মানুষ দেশের বাইরে প্রবাস জীবন যাপন করেন। এই সিংহভাগ মানুষের দুঃখ-কষ্ট, ইস্যু সহজে ভাইরালও হয় না, শিরোনামও খুব একটা হয় না। সামনেই আসছে বন্যা, কোন নদীর বাঁধের কি অবস্থা, কোন জেলার দুর্যোগ প্রস্তুতি কেমন, কোথায় উদ্ধারকারী স্পিডবোট থাকা উচিত বা আছে কিনা, এসব নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই, পোস্ট নেই, টকশোতে আলোচনা নেই বরং কোন নায়িকা কি খেয়েছেন, কি পরেছেন, কার সংসার ভাঙলো নাকি ভাঙতে যাচ্ছে এসব নিয়ে ভীষণ আগ্রহ নেটিজেনদের।
আচ্ছা বলুনতো, শেষ কবে কৃষি প্রধান এই দেশে কোল্ডস্টোরেজ বা ডিপ টিউবওয়েল ভাইরাল হয়েছে অথবা একজন শ্রমিকের রান্নাঘর, প্রাথমিক শিক্ষকের মাসের শেষ ১০ দিনের বাজারের ফর্দটা নিয়ে ফেইসবুক বা গণমাধ্যমে আলাপ হয়েছে, সবাই এক হয়ে আওয়াজ তুলেছে, কিছু একটা বলেছে? আমার মনে পড়ে না, বরং কোন সেলেব্রিটি বা কোন পলিটিশিয়ান কিংবা কোন ব্লগার কাকে অশালীন ভাষায় আক্রমন করেছে তা নিয়েই কেটে যায় আমাদের অধিকাংশের সময় আর মোবাইলের ডাটা। সত্য মিথ্যা যাচাই না করে ডিজিটাল ডোপামিনের নেশায় বুঁদ প্রায় গোটা দেশ।
আমাদের পিছিয়ে থাকার অনেকগুলো কারণের মধ্যে এই ভুল বিষয় আর ভুল শিরোনামকে মাথায় টুকে নাচার রোগটা অন্যতম। আসল ইস্যু কোনটা, বুঝতে না পারার কারণেই পার পেয়ে যায় সেসব মানুষ, যাদের দায়িত্ব হলো নাগরিকদের দেখভাল করা। কারন, তারা জানে মানুষ সত্যিকারের ইস্যু ফেলে কয়েকদিন পর পর একদম জনগুরুত্বহীন হালকা কোনো বিষয় নিয়ে ভার্চুয়াল ঝগড়ায় মেতে উঠবে। ঐদিকে, ডুবে যাবে কৃষকের বসতবাড়ি আর ভেঙে যাবে প্রবাসীর সুটকেস।
লেখক : স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিঃ (সনি-স্মার্ট)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।