শেহরীন সহিদ হৃদিতা, চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি, টেকজুম ডটটিভি// “পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া–তিনটি নদীর মোহনায় মন আমার বারেবারে ফিরে যেতে চায়, ফিরে যেতে চায়!” পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া আর ধনাগোদা এই চারটি বড় নদী আর জালের মতো ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য ছোট ছোট খাল বিলের মায়ায় জড়িয়ে আছে প্রায় ১৭০৪ বর্গ কিলোমিটারের যে সবুজ জলাভূমি, তার নাম চাঁদপুর। পদ্মা, মেঘনা আর ডাকাতিয়া এই ত্রিনদীর সঙ্গমস্থল চাঁদপুর জেলা সদর। তবে শুধু যে ত্রিনদীর মিলনেই চাঁদপুরের সমগ্র সৌন্দর্য্য লুকায়িত, তা কিন্তু নয়। প্রায় ১৪৩ বছরের প্রাচীন এই ভূ-খন্ডটির সমগ্রটা জুড়েই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য সুপ্রাচীন নিদর্শন এবং গৌরব গাঁথা। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধেও গৌরবউজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে চাঁদপুর জেলার।
পাক-ভারত বিভক্ত হওয়ার পূর্বে ১৮৭৮ সালে চাঁদপুর ছিলো তৎকালীন ত্রিপুরা (বর্তমানে কুমিল্লা) জেলার অধিনস্ত তিনটি মহকুমার মধ্যে অন্যতম একটি মহকুমা। ইংরেজ শাষণ আমলে অবিভক্ত ভারতবর্ষের আর সবক’টি প্রদেশের মতো বাংলাদেশ-ও যখন আন্দোলন করতে শুরু করেছিলো, তখন এই চাঁদপুরও ফুঁসে উঠেছিল একই উত্তেজনায়। বঙ্গভঙ্গের পর শুরু হলো পাকিস্তানি শাষকদের জুলুম। ভাষা আন্দোলনের সময় সক্রিয় যোগদান করেছেন এই চাঁদপুর জেলার অসাধারন অনুকরণীয় ব্যাক্তিত্বরা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চাঁদপুর ২ নং সেক্টরের অধীনে ছিলো। ৭১ সালের ১২ই মে পাকস্তানি বাহিনী সর্ব প্রথম হাজীগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের ৫০ জন লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং সেখানকার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। আর এই গণহত্যার পর পরই চাঁদপুরে শুরু হয় স্বাধীনতার জন্য লড়াই। পাকবাহিনীর গুলিতে চাঁদপুর শহরের সর্বপ্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল খান; যিনি ২য় বিশ্বযুদ্ধে চাঁদপুর সদর উপজেলার একমাত্র অংশগ্রহণকারী কিংবদন্তী যোদ্ধা ছিলেন। চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল ‘বড়স্টেশন মোলহেড’ ছিল পাক বাহিনীর অন্যতম ‘টর্চার সেল’। রাজাকারদের সহযোগিতায় অগণিত মানুষকে এখানে ধরে এনে নির্যাতন করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিল তারা। এই বধ্যভূমিতে বর্তমানে প্রশাসনের সহায়তায় ‘রক্তধারা’নামক একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সাহায্যে যুদ্ধের শেষদিকে মাউন্টেন ব্রিগেড ও ইস্টার্ন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ আক্রমণে ৩৬ ঘন্টার লড়াইয়ের পর ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১০টার পর প্রথমে হাজীগঞ্জ উপজেলা এবং তারপর প্রায় বিনা প্রতিরোধেই চাঁদপুর মুক্ত হয়।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ১৩ বছর পর, অর্থাৎ ১৯৮৪ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি একটি স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে প্রকাশিত হয় চাঁদপুর। বর্তমানে চাঁদপুর জেলায় ৮টি উপজেলা, ৮টি থানা, ৮টি পৌরসভা, ৮৮টি ইউনিয়ন ও ৫টি সংসদীয় আসন আছে।
মায়াময় এই ভূমির সাথে জড়িয়ে আছে তার নামের কত কাহিনী আর উপকাহিনী।কারো কারো ধারণা, বার ভূঁইয়াদের আমলে অন্যতম এবং ঐতিহাসিক একজন ভুঁইয়া চাঁদরায়ের একটি উপনিবেশ ছিলো এখানে। তাঁর নাম থেকেই চাঁদপুরের নামকরন করা হয়েছে। আবার, কারো কারো মতে চাঁদপুর শহরের বর্তমান কোড়ালিয়া মহল্লায় আবাস গড়েছিলেন চাঁদ ফকির; তাদের ধারণা, চাঁদ ফকিরের নাম থেকেই উৎপত্তি চাঁদপুরের। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় মতবাদটি হলো_ চাঁদ সওদাগরকে নিয়ে। সেই বিখ্যাত ঐতিহাসিক সওদাগর নাকি তাঁর সেই “সপ্তডিঙ্গা মধুকর” ভিড়িয়েছিলেন এই জেলার ঘাটে। ধারণা করা হয়, তাঁর নাম থেকেই এসেছে চাঁদপুরের নাম। তবে নামে কিবা আসে যায় বলুন? কাজেই পরিচয়। আজও চাঁদের আলোয় এই চরাচরের পুর মানে লোকালয়গুলো জোছনায় ভেসে যায় সেই তো সবচেয়ে বড় কথা!
তা নাম সে বারভূঁইয়াদের গর্বে গর্বিত-ই হোক, কি সপ্তডিঙ্গা পানসীতে ভেসে আসা কোনো কিংবদন্তির আতিশয্য-ই হোক, চাঁদপুর জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কাছে এসবই ম্লান। আর এই জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রধান আকর্ষণ নদীর অপরূপ শোভা। চাঁদপুরকে বলা হয় নদীর জেলা। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশের নদী সৌন্দর্য দেখবার অনেকখানিই বাকি রয়ে যাবে চাঁদপুরে না এলে। জেলার সর্বত্র জুড়ে জালের মতো ছড়িয়ে আছে অজস্র ছোট-বড় নদী। সেই নদীর উৎপত্তি স্থল যেমন বিভিন্ন, তেমনি এদের নামও বাহারি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বড় নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম তিনটি নদী_ পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়ার মিলনস্থল এই চাঁদপুর। চাঁদপুরের এই তিন নদীর মোহনার মোহনীয় রূপের টানে সারাবছরই চাঁদপুরে ভিড় জমান প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা। এছাড়াও প্রাচীন আমলের নিদর্শন সম্বলিত বেশ কয়েকটি জমিদার বাড়ি আছে, যেগুলো আমাদের প্রাচীন বাংলা তথা জমিদারি আমলকে তুলে ধরে। যেমন; শোল্লা জমিদার বাড়ি,বলাখাল ইউনিয়নের বলাখাল জমিদার বাড়ি, হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল জমিদার বাড়ি, রূপসা জমিদার বাড়ি, লোহাগড় জমিদার বাড়ি, সাহাপুর রাজবাড়ি ইত্যাদি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, সঠিক পরিচর্যার অভাবে এগুলোর বেশিরভাগই এখন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত।
ধর্মের দিক দিয়ে জেলায় ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষই সর্বোচ্চ। এখানে, মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন এবং পুরনো মসজিদ আছে। যার মধ্যে-হাজিগঞ্জ উপজেলার বড় মসজিদ উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশে এটি ৬ষ্ঠ বৃহৎ মসজিদ। তবে, শুধু যে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের উপসনালয়-ই আছে তা নয়। চাঁদপুরে বেশ কিছু হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মঠ-ও আছে, যেগুলোর মধ্যে কয়েকটি বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর কর্তৃক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত।
শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের জন্যই নয়, চাঁদপুর বিখ্যাত কিছু ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য। চাঁদপুরের কোণে কোণে ছড়িয়ে আছে অসাধারণ স্বাদের বেশ কিছু খাবার-দাবার। যেমন_ ফরিদগঞ্জের আউয়ালের মিষ্টি, মতলবের গান্ধী ঘোষের ক্ষীর, চাঁদপুর সদরের ওয়ানমিনিটের আইসক্রীম ও মিষ্টি,কচুয়া উপজেলার সাচারের পান,হাজীগঞ্জ উচ্চাঙ্গার হাতে ভাজা মুড়িসহ আরও অসংখ্য খাবার- যেগুলো এই জেলার ঐতিহ্য-ও বটে। তবে চাঁদপুর নাম শুনতেই যে কথাটা সবার আগে চোখের সামনে ভাসে তা হলো পদ্মার রুপালি “ইলিশ মাছ”।
ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের চারনভূমি এই চাঁদপুরের নদী-নালা, খালবিলগুলো। নদী উপকূলীয় জেলা বলে এ অঞ্চলের প্রায় ৩০% মানুষই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্যসম্পদের উপর নির্ভরশীল। এই চাঁদপুরের উপর দিয়েই বঙ্গোপসাগরের দিকে বয়ে যায় দেশের প্রায় ৯০% জলধি। যার মধ্যে বৃহত্তর অনশ জুড়ে আছে নদী মেঘনা। যার মোট দৈর্ঘ্য ১৪১.৫ নটিক্যাল মাইলের প্রায় ৪০ নটিক্যাল মাইল চাঁদপুর জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।আরেকটি বড় নদী ডাকাতিয়া; নদীটির মূল দৈর্ঘ্য প্রায় ১২৫ নটিক্যাল মাইল। আর চাঁদপুর জেলার মধ্যে দিয়েই প্রবাহিত হছে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল, যা কিনা মূল দৈর্ঘ্যের অর্ধেকেরও বেশি।আর সম্পূর্ন ধনাগোদা নদীটি অর্থাৎ প্রায় ২৫ নটিক্যাল মাইল বিস্তৃত জলরাশি বয়ে গেছে জেলার মাঝে এঁকেবেঁকে।
বর্ষাকালে চাঁদপুর জেলার প্রায় অধিকাংশই পুরোপুরি পানির নিচেই ডুবে যায়। আর এই সময়ই চাঁদপুরের নদীনালাগুলো মাছের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। ইলিশ মাছের প্রজননের সময় হলেই সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অসংখ্য ইলিশ মাছ পদ্মা নদীতে ছুটে আসে। এখানে তিন নদীর মিলনের স্থলে যে ট্রায়াঙ্গেলটি সৃষ্ট হয় পানির নিচে, সেখানে উৎপন্ন হয় একধরনের বৈদ্যুতিক তরঙ্গ, যেটা ইলিশের ডিম ফোটানোর জন্য খুবই জরুরি। এই সময় চাঁদপুরের পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা ও মেঘনা নদীতে পাওয়া যায় অসংখ্য সুস্বাদু ইলিশ মাছ।
আর এই ইলিশ মাছ দেশে- বিদেশে রপ্তানি করা হয়, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে অনেক সহায়তা করছে। দেশের দ্বিতীয় জি আই পন্য হিসেবে স্বীকৃত চাঁদপুরের “ইলিশ”।
আর তাই দেশ-বিদেশে চাঁদপুরকে বিশেষভাবে উপস্থাপন ও পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য ২০১৫ সালের আগস্ট মাস হতে জেলা ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম শুরু করেন তৎকালিন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুস সবুর মণ্ডল; জেলার ব্র্যান্ডিং স্লোগান “ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর”।
তাঁর এই অসামান্য প্রচেষ্টার ফলে ২০১৭ সালে “ইলিশের বাড়ি” হিসেবে চাঁদপুরকে স্বীকৃতি দেয় বর্তমান সরকার। বাংলাদেশে এই চাঁদপুর-ই প্রথম ব্র্যান্ডিং জেলা। আর ব্র্যান্ডিং জেলার লোগো অঙ্কন করেছেন এ জেলারই সন্তান বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খান। ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর এর রূপকার হিসেবে স্বীকৃতি পান তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ আব্দুস সবুর মণ্ডল।
মৎস্য সম্পদের বিপুলতার পরও চাঁদপুর মূলত কৃষি প্রধান জেলা। পাট, ধান, স্বাদু পানির মাছ, গম, আখ, আলু, সরিষা, সুপারি, সয়াবিন, মরিচ, শাকসব্জি ইত্যাদি উৎপাদন ও সরবরাহ করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে চাঁদপুর বেশ ভূমিকা রাখে। দেশের শিল্প ক্ষেত্রেও এর অবদান অনেক। চাঁদপুর সদর উপজেলার বাবুরহাট এলাকাতে প্রচুর পরিমানে বড় বড় শিল্প কারখানা আছে। এগুলোতে, উৎপাদিত শিল্প সামগ্রী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেমন ছড়িয়ে পড়ছে, তেমনি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। তাই এই বাবুরহাট জেলাকে সম্প্রতি সরকার “বিসিক শিল্পনগরী” হিসেবে ঘোষণা করেছে। সারাদেশের মাঝে চাঁদপুর-ই সর্বপ্রথম জেলা যেখানে প্রশাসনের ই-সেবা চালু হয়েছে। ৮টি উপজেলার ৬টিই বর্তমানে শতভাগ বিদ্যুতায়িত, সম্পূর্ণ জেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
চাঁদপুরের শিক্ষা ও সংস্কৃতি স্বাধীনতাপূর্ব এবং পরবর্তী সময়ে বেশ সমৃদ্ধ ছিলো। এখান থেকেই উঠে এসেছেন দেশের বহু বরেণ্য ব্যক্তিত্ত্ব। চাঁদপুরের শিক্ষা-সংস্কৃতি-ও উত্তোরত্তোর বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে চাঁদপুরের সংস্ক্রতি, প্রাতিষ্ঠানিক এবং প্রযুক্তিগত শিক্ষার সুনাম। এই চাঁদপুর জেলারই কৃতি সন্তান- রৌশন আরা বেগম- যিনি ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি এবং বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পুলিশ সুপার। আরও আছেন আবু ওসমান চৌধুরী-বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ৮নং সেক্টরের কমান্ডার; মিজানুর রহমান চৌধুরী- প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী; রফিকুল ইসলাম-বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এর ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার; নওয়াব আলী –ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ; হাশেম খান–বরেণ্য চিত্রশিল্পীসহ আরও অনেকেই এ মাটিরই কৃতি সন্তান।
চাঁদপুর জেলা থেকে দেশের অন্যান্য প্রান্তের সাথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাও আছে প্রায় সবধরনের। রাজধানী ঢাকা এবং বরিশালের মতো অন্যান্য কিছু জেলার সাথে নদীপথে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হয়। চাঁদপুর থেকে বিভাগীয় সদর চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা জেলায় যোগাযোগের জন্য আছে আলাদা রেলপথ। আর সড়কপথে ঢাকা-চাঁদপুর এবং চট্টগ্রাম-চাঁদপুর মহাসড়ক রয়েছে। সড়কপথে উন্নয়নের ফলে চাঁদপুরের আশেপাশের বেশকিছু জেলা যেমন_ কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীর মতো জেলাগুলোতেও এখন সহজেই চলাফেরা করা সম্ভব ।
এই জেলায় মৎস্য, কৃষিজ এবং কারখানা উৎপাদিত সম্পদ যথেষ্ট পরিমাণেই আছে, সড়ক ও নদীপথে পরিবহন করাও সহজ।তবুও সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে উৎপাদনকারী ও বিক্রেতারা যোগ্য লাভের দেখা পাচ্ছেন না প্রায়শই। প্রশাসনিক এবং প্রভাবশালীদের একটু সহায়তাই অনেকের জীবনটা আরেকটু সুন্দর করে দিতে পারে।
চাঁদপুর, এমন একটা জেলা যেখানে একইসাথে পাশাপাশি ঘর বাঁধে দূর্ভোগ আর সুদিনের নতুন আশা। নদীভাঙন আর বন্যা যেমন চাঁদপুরের নিত্য সঙ্গী, তেমনি সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি থাকার ফলে ঝড়-বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ আর সম্ভাবনাও এখানে অনেক। এই দুর্যোগমুখর অঞ্চলে জীবিকার জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষদের। প্রকৃতির সাথে প্রতিনিয়ত লড়াই করে করে এ অঞ্চলের মানুষ হয়ে উঠেছে লড়াকু আর সাহসী।
অদুর ভবিষ্যতে এই চাঁদপুরই হয়ে উঠবে শিক্ষা, সংস্কৃতি আর সম্পদে সমৃদ্ধ এক জেলা; সে দিন আর খুব দুরে নয়, যেদিন এই জেলা হয়ে উঠবে অন্য অনেক জেলার রোলমডেল। এই স্বপ্ন-ই আজ দেখি আমরা।
লেখক : শেহরীন সহিদ হৃদিতা, জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর।