বাড়িতে নতুন জামাই এসেছে। সারাবাড়ি উৎসবে মুখর। জামাইকে হরেক রকমের খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হচ্ছে। সকালের নাস্তায় বাটি ভর্তি নানা রকমের ভর্তা আর আলুর বৌয়া। বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জের খুব সাধারন চিত্র এটা।
মুন্সিগঞ্জ আলুর জন্য বিখ্যাত।এই বিখ্যাত আলু এবং খুদের মিশ্রনে আরেকটি খাবার তৈরি হয়,যার নাম আলুর বৌয়া। অনেকে এটাকে খুদের ভাত,বউয়া কিংবা বউখুদি বলে থাকেন। বিভিন্ন রকমের ভর্তা দিয়ে এই খাবারটি পরিবেশন করা হয়।
খুদ হচ্ছে এক প্রকার ভাংগা চাল।ঢেকিতে চাল ভাংগানোর সময় কিংবা বর্তমানে মেশিনে চাল প্রকিয়াজাত করার সময় এক প্রকার ভাংগা ভাংগা কিংবা ছোট দানাদার চাল পাওয়া যায়,যাই মূলত খুদ নামে পরিচিত।
পছন্দের যেকোনো পণ্য সব থেকে কমদামে অর্ডার করলতে ক্লিক করুন
কথিত আছে,অতীতে বাজার থেকে আতপ চাল কিনে আনার পর বাড়ির গৃহীনিরা অনেক যত্ন করে কুলা দিয়ে ঝেরে ঝেরে চালের ভেতর থেকে ভাংগা ভাংগা খুদ বাছাই করতো।তারপর সে খুদ যেনো অপচয় না হয়,তাই সেগুলোকে তেল, মশলা দিয়ে মজা করে রান্না করা হত।সেখান থেকেই বউয়া বা বউখুদির জন্ম।খুদের সাথে আলু কুচি,তেল এবং মশলার মিশ্রনে রান্না করা হয় এই বউয়া।
শীতের সকাল হোক কিংবা বাড়িতে নতুন অতিথির আগমন হোক,সকালের নাস্তায় গরম গরম ধোয়া উঠা বউয়া আর ভর্তা থাকবেই মুন্সিগঞ্জবাসীর পাতে।এই একটি খাবারই মুন্সিগঞ্জের ধনী-গরিব সবার ঘরেই আনন্দ নিয়ে খাওয়া হয়।
বর্তমানে ই-কমার্সের কল্যানে খাবার নিয়ে কাজ করা অনেক উদ্যোক্তারাই বিক্রির তালিকায় বউয়া-ভর্তাকে প্রাধান্য দিচ্ছে।সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে,মুন্সিগঞ্জের বাইরে বিভিন্ন জেলায় খাবার নিয়ে কাজ করা অনেক উদ্যোক্তারাই বউয়া-ভর্তা বিক্রি করছে, পাশাপাশি খাবারটাকে বিক্রমপুরের ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসেবে পরিচিত করিয়ে দিচ্ছে,এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার অভ্যন্তরীণ প্রায় সকল রেডি কুক উদ্যোক্তাদের তালিকাতেই এই খাবারটার স্থান আছে।
যেহেতু বর্তমানে ই-কমার্সের যুগে রেডি কুক অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে এসব উদ্যোক্তাদের হাত ধরে বউয়া-ভর্তা ও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।এমনকি জেলার বাইরে এই বিখ্যাত খাবারকে পরিচিত করার জন্য জেলার অনেকেই খুদ বিক্রির ও উদ্যোগ নিচ্ছে।নিঃসন্দেহে এটা বেশ প্রশংসনীয় উদ্যোগ।