কাঠের বাড়ির জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশ হচ্ছে জাপান,আর বাংলাদেশে কাঠের বাড়ির জন্য জনপ্রিয় জেলা হচ্ছে মুন্সিগঞ্জ।
কথাটা যে কতটা সত্যি,তা মুন্সিগঞ্জ না আসলে বুঝবেন না।মুন্সিগঞ্জ কাঠের দোচালা,চৌচালা বাড়ির জন্য অনেক বিখ্যাত।এখানে আসলেই চোখে পরবে বিভিন্ন উপজেলায় সারি সারি কাঠের দোচালা,চৌচালা বাড়ি এমনকি সাতচালা বাড়িও।
মুন্সিগঞ্জ জেলার একটা অংশ প্রতিবছরেই সর্বনাশা পদ্মা নদীর কবলে পরেন।সে নদী ভাঙনে হারিয়ে যায় মানুষের বসত বাড়ি।মূলত সেখান থেকে উঠে এসেছে কাঠের বাড়ি তৈরির প্রচলন।
এই বাড়ি গুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে,খুব সহজেই জোড়ায় জোড়ায় খুলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা যায়।ফলে নদী ভাঙনের সময় সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরানো যায় বাড়িগুলো।
মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার কাটাখালী,হাতিমারা৷ টংগী বাড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও সিরাজদিখান উপজেলার প্রায় অনেক গুলো ইউনিয়নে গেলেই চোখে পরবে কাঠের বাড়িঘর।
মাটি, খড়,বাঁশ, বিভিন্ন জাতের কাঠ,প্লেইন শিট ইত্যাদি দিয়ে তৈরি কারুকাজ মিশ্রিত এই বাড়িগুলো যেনো রুচিশীলতারই প্রকাশ ঘটায়।
প্রতিবছর বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্যমাসে কাঠের বাড়ি বিক্রির হাট বসে।তৈরিকৃত কাঠের বাড়ি গুলোকে কিনে এনে অন্য জায়গায় স্থাপন করতে সময় লাগে মাত্র ৫/৬ দিন।সেটা অবশ্য বাড়ির সাইজের উপর নির্ভর করছে।প্রতিটি বাড়ির মূল্য দুই লক্ষ টাকা থেকে বিশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ও হয়ে থাকে।
বাড়ি গুলোর মূল্য দালান নির্মানের মূল্যের কাছাকাছি হলেও,জেলার অনেকেই শখের বসে একটা কাঠের বাড়ি বানায় নিজের জমিতে।
বাড়িগুলো বানানোর কাঠ সংগ্রহ করা হয় চট্টগ্রাম থেকে।শাল সেগুন,বাচালু,নাইজিরা,ওকান,লোহাকাঠ সহ নানা জাতের কাঠ দিয়ে বানানো হয় বাড়িগুলো।পাশাপাশি বাড়িগুলোর পরিচর্যার জন্যও প্রতিবছর কাঠে তেল, কাঁচা গাব ও রং ব্যবহার করা হয়। এতে করে বাড়িগুলোর সৌন্দর্য একই রকম থাকে বছরের পর পর।এমনকি পুরাতন হলে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রিও করে দেয়া যায় বাড়ির কাঠ ও টিনগুলোকে।