মুন্সিগঞ্জ জেলার চারপাশ ঘিরেই রয়েছে নদী।এই জেলার বেশ কিছু অঞ্চল নিচু।বর্ষায় বেশ কিছু অঞ্চল পানিতে ডুবে যায়।ফলাফল তখন নৌকা হয়ে দাঁড়ায় অনেক প্রয়োজনীয় বস্তু।এই সময়ে নৌকায় করেই রাস্তায় চলাচলসহ বাকি কাজকর্ম করতে হয় এই নিচু অঞ্চলের মানুষদের।
তাই এই সব অঞ্চলগুলোতে বর্ষাকালকে সামনে রেখে বেড়ে যায় বিভিন্ন কাঠমিস্ত্রীদের নৌকা বানানোর ব্যস্ততা।বিভিন্ন ছোট-বড় সাইজের ডিঙি নৌকা বানানোর ধুম পরে যায় এসময়।এই ধরনের নৌকাকে বলা হয় কোষা নৌকা।
সবচেয়ে বেশি নৌকা বানানোর চিত্র চোখে পরে শ্রীনগর উপজেলায় বিভিন্ন অঞ্চলে।এই উপজেলার অনেক কাঠমিস্ত্রীরাই পুঁজি খাটিয়ে অভিজ্ঞ কারিগর দিয়ে বিভিন্ন আকার ও সাইজের নৌকা তৈরি করে,বিভিন্ন হাটে পাইকারিতে বিক্রি করেন।
শ্রীনগর উপজেলার তিন দোকান, পাটাভোগ, কুকুটিয়া, রানা, সাতগাঁও, ষোলঘরসহ বিভিন্ন জায়গায় কাঠ মিস্ত্রিরা কোষা নৌকা বানান।
কোষা নৌকা বানানোর প্রধান উপকরণ হচ্ছে,চাম্বল, মেহগনি, কড়ইসহ অন্যান্য জাতের কাঠ।প্রায় ৪/৫ জন কারিগর মিলে দৈনিক ৩ থেকে ৪টি ডিঙ্গি কোষা তৈরি করতে পারেন।আকার ও সাইজ অনুসারে এসব নৌকার দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কাঠের মান ও আকার অনুসারে রেডিমেট নৌকা সর্বোনিম্ন আড়াই হাজার থেকে শুরু করে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। এছাড়াও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নৌকা তৈরির অর্ডার নিয়েও বানানো হয়।
এই নৌকা বিক্রির জন্য শ্রীনগর এবং লৌহজং উপজেলায় দুইটি হাট খুবই বিখ্যাত।প্রতি সপ্তাহে এই হাটগুলোতে জমজমাট নৌকা বিক্রি হয়।
বর্তমানে এই নৌকা বানানোর জমজমাট থাকলেও বিক্রি কমে যাচ্ছে নানাবিধ কারনে।স্থানীয় হাটগুলোতে আশেপাশের জেলা থেকে কেনাকাটা করতে আসলেও অনেকেই জানেন না এই কোষা নৌকার সম্ভাবনার কথা।প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই নৌকার যত প্রচার করা হবে,তত দেশব্যাপী পরিচিত পাবে মুন্সিগঞ্জ জেলার এই নৌকাটি।