লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া চৌধুরী বাজারের দক্ষিণ পশ্চিম পাশে এই বাড়িটির অবস্থান। এ বাড়ির বংশধরগণ নিজেদের কে ভুলুয়া জমিদার রাজধর্ম প্রসন্ন কল্যাণ নারায়ণ চৌধুরীর বংশধর বলে দাবি করেন।
ভুলুয়া রাজা রুদ্র মানিক্যের স্ত্রী শশীমুখী নরনারায়ণ নামক জনৈক ব্রাক্ষ্মণ কর্মচারীর সাহায্যে জমিদারি পরিচালনা করতেন। অল্প সময়ের মধ্যে নরনারায়ণ রানীর কৃপায় দেওয়ান পদে উন্নতি হন। এসময় থেকে কর্মচারীরা বাদশার নিকট জমিদারির বিভিন্ন অংশ বন্দোবস্ত নিতে থাকেন।
তারমধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ছিলেন কবি কীর্তিনারায়ণ! যিনি দত্তপাড়া বন্দোবস্ত নেন। এ থেকে বুঝা যায় দত্তপাড়ার অধিবাসীরা ভুলুয়া জমিদারের বংশধর নয় বরং রাজকর্মচারী যারা পরে জমিদারি ক্রয় করে।
এই দত্তপাড়া জমিদার বাড়ি সম্পর্কে বিশেষ একটি স্লোক প্রচলিত আছে – ‘দত্তপাড়া পূর্ণকাশী বিষ খেয়ে মরে ১৮০’।
ইতিহাস থেকে এই স্লোক থেকে জানা যায় ব্রিটিশ আমলে এ চৌধুরী বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে এসে দেওয়ানজি বাড়ির লোকেরা চাকরাণির সাথে ষড়যন্ত্র করে খাওয়ার সাথে বিষ মিশিয়ে দেয়। এই বিষমিশ্রিত খাবার খেয়ে ১৮০ জন আমন্ত্রিত অতিথি মারা যান।
রায়পুর চুন্নু মিয়ার জমিদার বাড়ি
লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার একটি প্রাচীন জমিদার বাড়ি রায়পুরের চুন্নু মিয়ার জমিদার বাড়ি। এ বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা মুন্সি মনোহর মিঞার ছিল বিরাট জমিদারি।
রায়পুরের কেরোয়া, চর মোহনা, এবং লক্ষ্মীপুরের মজুপুর গ্রামে ছিলো তাদের তালুক।
এই জমিদার বাড়ির পাশেই রায়পুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ অবস্থিত, এটি রায়পুর বাজার থেকে ১ কি.মি. উত্তর পূর্ব দিকে রায়পুর – পানপাড়া( রামগঞ্জ রোড) সড়কের উত্তর পাশে এ জমিদার বাড়ির অবস্থান।
এখানে জমিদারি নেই, জমিদাররা নেই, আছে জমিদার আমলের কয়েকটি দালান, সুউচ্চ বাউন্ডারি দেয়াল, বাড়ির সামনে খাজনা আদায়ের তহসিল অফিস, এবং কারুকার্য খচিত একটি মসজিদ।
মানুষ এই মসজিদে এখনো নামাজ আদায় করে, বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অনেকে দেখে যায় এই স্মৃতিবহুল জমিদার বাড়ি।
*করপাড়া জমিদার বাড়ি *
লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার করপাড়ায় রাজেন্দ্র চৌধুরী জমিদার বাড়ি আজও জমিদারি স্মৃতি বহন করে চলছে। রাজেন্দ্র চৌধুরী, কালিপদ বসু প্রমুখ ছিলেন নোয়াখালী জেলা বারের আইনজীবী। করপাড়ার তালুক কিনে তারা করপাড়ায় বসবাস স্থাপন করেন।
প্রচুর অর্থের মালিক হয়ে রাজকীয় বাড়ি স্থাপন করেন। সুরম্য প্রাসাদ, অন্দরমহল, বৈঠকখানা, ভান্ডার ঘর, ঠাকুর ঘর, নাট মন্দির সহ যা কিছু নির্মান করেন যার কোন কিছুই আজ অক্ষত নেই, কেবল ধ্বংসাবশেষ মাটির সাথে মিশে আছে।
এখনো বাড়ির সামনে নাট মন্দিরটি একা দাঁড়িয়ে জমিদার বাড়ির স্মৃতি পথচারীদের স্মরণ করে দিচ্ছে।