ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে ই-কমার্স ক্লাবের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো। মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুরে সাভারের আশুলিয়ায় ইউনিভার্সিটির সেমিনার হলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই যাত্রা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ই-কমার্স ক্লাবের সভাপতি ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মিফতাহুল জান্নাত সিনথিয়ার উপস্থাপনায় সেমিনারটিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজিব আহমেদ, ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইডিসি) এর সভাপতি কাকলী তালুকদার ও সহসভাপতি নিগার ফাতেমা।
এছাড়াও এ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাবের সভাপতি মিফতাহুল জান্নাত সিনথিয়া, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাবের উপদেষ্টা সাজেদ ফাতেমী ও আতিকুজ্জামান লিমনসহ ক্লাব কমিটির সদস্য ও ক্লাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, শিক্ষার্থীরা , ইডিসি টিম, ঢাকা ও ঢাকার বাইরের দিনাজপুর থেকে ৭জন,ময়মনসিংহ থেকে ৫জন উদ্যোক্তাসহ প্রায় ৭০ জন নারী উদ্যোক্তা।
শুরুতেই এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাবের সমন্বয়কারী, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু মো. আবদুল্লাহ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন বলেন, ‘ই-কমার্সের অন্যতম প্রধান বিষয় হলো- ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করা এবং এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। আমাদের দুর্ভাগ্য, বহু উদ্যোক্তাই প্রথমদিকে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে পারলেও ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেন না। ফলে তারা মুখ থুবড়ে পড়েন।’
ই-ক্যাবের (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজীব আহমেদ বলেন, ‘উদ্যোক্তারা পণ্য উৎপাদনকারী ও ক্রেতার মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপন করেন। সেক্ষেত্রে দুটো পক্ষকেই পরস্পরের প্রতি আস্থাশীল হওয়ার বিকল্প নেই। দেশে আরো ৫০টি ই-কমার্স ক্লাব গঠিত হবে।’
তিনি বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির অতীত ও বর্তমান পরিস্থিতি, সম্ভাবনা, ই-কমার্স ক্লাব থেকে কিভাবে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন , ইউনিভার্সিটিগুলোতে রিসার্চের গুরুত্ব, অনলাইন ট্রেনিং এর ব্যবস্থা, ই-লার্নিং, ই-কমার্স নিয়ে জার্নাল, কনফারেন্সের আয়োজন, বেসিক স্কিল ডেভেলপমেন্ট, নিয়মিত ই-কমার্স ক্লাব সংক্রান্ত ইভেন্ট, ই-কমার্সের গুরুত্ব, ই-কমার্সে কর্মসংস্থানের সুযোগ, ই-কমার্স ক্লাবের প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন।
তিনি ইউনিভার্সিটিতে ই-কমার্স ডিপার্টমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা, মাইনর বা সাবসিডারি সাবজেক্ট হিসেবে ই-কমার্স সাবজেক্ট চালু করার আহ্বান জানান। ই-কমার্সকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়ার ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটিগুলো কি ধরনের ভুমিকা পালন করতে পারে তা তিনি তুলে ধরেন। শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা ও কোম্পানিগুলো কিভাবে একে অপরের মাধ্যমে উপকৃত হতে পারেন তা নিয়ে তারা যেন চিন্তা করেন এ পরামর্শ তিনি দেন। এছাড়াও তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিকে একটা দেশি পন্যকে ফোকাস করে এর প্রচারের আহ্বান জানান, প্রতি মাসে একবার এই ইউনিভার্সিটির খাবারের উদ্যোক্তাদের স্টল ভা নিজেদের পরিচিতি করানোর সুযোগ প্রদানের আহ্বান জানান।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাব ও ইডিসির মাধ্যমে উপস্থিত নারী উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থীরা কি ধরনের সহযোগিতা চান তা নিয়ে তিনি সরাসরি আলোচনা করেন এবং নারী উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের সভাপতি কাকলি তালুকদার ও সহ সভাপতি নিগার ফাতেমা ইউনিভার্সিটিতে ই-কমার্স ক্লাবের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন। সফল উদ্যোক্তা হিসেবে এরই মধ্যে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন তারা। ই-কমার্স বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়, গতানুগতিক ব্যবসা ও ই-কমার্সের মধ্যে পার্থক্য, এফ কমার্স বিজনেস ও এতে বিনিয়োগের বিষয়াবলী নিয়ে কথা বলেন। ই-কমার্স সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার বিভিন্ন সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরেন তারা। উদ্যোক্তাদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ছোট ছোট বিজনেস গ্রুপগুলোতে নিয়মিত সময় দেয়া, পার্সোনাল প্রোফাইলকে কাজে লাগানো, পার্সোনাল ব্রান্ডিং, স্টোরি টেলিং, কমিউনিকেশন স্কিল ডেভেলপমেন্ট ,কন্টেন্ট রাইটিং, ফটোগ্রাফি, কাস্টমার হ্যান্ডেলিং, সোর্সিং, প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি, কাস্টমারের আস্হা অর্জন, প্যাকেজিং, নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ সকল বিষয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে ই-কমার্স ক্লাবের অধীনে অনলাইন ও অফলাইন ইভেন্ট, সেমিনার, শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণাসহ কি কি কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে তা নিয়ে তিনি পরামর্শ দেন।