গতকাল সন্ধ্যায় যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকব্লাস্টার সিনেপ্লেক্সে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি উপভোগ করার পর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
অন্যান্যের মধ্যে চলচ্চিত্রটি উপভোগ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএসএম জাফরুল্লাহ, যমুনা গ্রুপের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলমগীর আলম, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী রকিব সরকার, বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি নাজনীন নাহার ও সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও বিনোদন সাংবাদিকরা।
চলচ্চিত্রটি উপভোগ শেষে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী তাঁর প্রতিক্রিয়া বলেন ব্যক্তিত্ব এবং নেতাকে ধারণ করা খুবই কঠিন। বঙ্গবন্ধুর ভূমিকায় সেই কঠিন কাজটি আরিফিন শুভ খুব সফলভাবেই ধারণ করেছেন। পাঁচ দশকে একটি দেশ ও জাতিকে স্বাধীনতা উপহার দেওয়া, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অসামান্য ত্যাগ, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ধাপে ধাপে গড়ে ওঠা এবং বঙ্গবন্ধু যেভাবে হিমালয়সম ব্যক্তিত্বে পরিনত হন সেটাকে খুব সফলভাবে ধারণ করতে পেরেছেন বলে তিনি জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর লেখা তিনটি গ্রন্থ আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন। কিন্তু অনেক না বলা কথা, অনেক অজানা ইতিহাস আমরা মুজিব একটি জাতির রূপকার এই সিনেমার মাধ্যমে দেখতে পেলাম। তিনি বলেন আমি মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম। বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি, মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। কিন্তু আমাকে যেভাবে এই চলচ্চিত্রটি আবেগ তাড়িত করেছে, সেভাবে তরুণ প্রজন্ম, পরবর্তী প্রজন্ম এবং আমাদের সন্তানদেরকেও এই সিনেমাটি একই রকমভাবে আবেগ তাড়িত করবে। তিনি বলেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের যে অবদান, তিনি যেভাবে পর্দার অন্তরাল থেকে বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু হতে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে তাঁর ভূমিকা রয়েছে। এরকম অনেক অজানা ইতিহাস আমাদের নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে এই সিনেমার মাধ্যমে।
পলক বলেন ১৯৩০-৩২ থেকে শুরু করে ৭৫ পর্যন্ত এত অল্প সময়ের মধ্যে সাদামাটাভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবনটা যেভাবে শুরু হয়েছিল। তাঁর কৈশোর থেকে ছাত্রনেতা থেকে জাতীয় নেতা, এমপি থেকে মন্ত্রী, অবিসংবাদিত নেতা, অপরিহার্য নেতা, বঙ্গবন্ধু, এবং জাতির পিতা এটা একটা অসামান্যক ব্যাপার। এত অল্প সময়ের মধ্যে অধ্যায়গুলোকে কত চমৎকার সাবলীল ও সহজভাবে এই কঠিন ইতিহাসটিকে উপস্থাপন করা হয়েছে এই চলচ্চিত্রে।
তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু শুধু একজন রাষ্ট্রপতিই ছিলেন না, একজন প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, একজন নেতাই ছিলেন না, তিনি মহান নেতার পাশাপাশি জাতির রূপকার ছিলেন। জাতির রুপকার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর এই দেশ এবং জাতির জন্য যা করে রেখে গেছেন, যে দর্শন আমাদের সামনে দিয়ে গেছেন সেটি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আগামী দিনের সংগ্রামী জীবনে সকলের সাফল্যের একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, পিতা-মাতা, ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক, সকল শ্রেণীর পেশার সকল রাজনৈতিক মতাদর্শের দর্শকদের সিনেমা হলে এসে মুজিব একটি জাতির রূপকার সিনেমাটি দেখার আহবান জানান।
উল্লেখ্য, বায়োপিকে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী অভিনেতা আরেফিন শুভ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রে রয়েছেন নুসরাত ফারিয়া। এ ছাড়া তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে রিয়াজ এবং বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা অভিনয় করছেন। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করছেন খায়রুল আলম সবুজ, দিলারা জামান, সায়েম সামাদ, শহীদুল আলম সাচ্চু, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গাজী রাকায়েত, তৌকীর আহমেদ, সিয়াম আহমেদ, মিশা সওদাগর, এলিনা শাম্মী প্রমুখ।