আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে প্রশাসনের অনেকের মধ্যে কাজ করতে অনীহা কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। জনগণকে প্রত্যাশিত সেবা দিতে না পারলে চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
সোমবার বিকেলে খাগড়াছড়ি টাউন হলে এক সমাবেশে হাসনাত এসব কথা বলেন।
সরকারি চাকুরেদের উদ্দেশে এই সমন্বয়ক বলেন, “অতীত সরকারের পদবি, প্রমোশনের লোভ আপনাদেরকে নাগরিক বাহিনীর পরিবর্তে ‘দলীয় বাহিনীতে’ পরিণত করেছে। ভূমি অফিস, পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সেবামূলক দপ্তরে ঘুষ বন্ধ হওয়ায় অনেকে কর্মচারী কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছে।
“আমি তাদেরকে জনবান্ধব হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তারা জনগণকে সেবা দিতে না পারলে চাকরি শেষে কৃষি কাজ বা ব্যবসা করুক। জনগণের প্রত্যাশিত সেবা দিতে না পারলে ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারের আমলে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের আমরা প্রত্যাহার করে নেব। ‘খুনি’ হাসিনাকে যেভাবে জনতা রিপ্লেস করেছে, আপনাদেরও সেভাবে রিপ্লেস করা হবে।”
সরকারি চাকরিজীবীদেরকে ক্ষমতামুখি না হয়ে জনগণমুখি হওয়ার পরামর্শ দিয়ে হাসনাত বলেন, “আপনারা যদি ক্ষমতামুখী হন তাহলে আপনারা বেনজীর (সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ) কথা মনে রাখবেন, ডিবি হারুনের (সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ) কথা মনে রাখবেন।”
৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর ‘নতুন একটা সংগ্রাম’ শুরু হয়েছে মন্তব্য করে হাসনাত বলেন, “একটা সিস্টেমের যে ‘মনিব’ (শেখ হাসিনা) ছিল, তাকে আমরা সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছি। কিন্তু মনিবের যারা ‘দাস’ ছিল, তারা আমাদের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। বাংলাদেশ পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে সংগ্রাম জারি রাখতে হবে।”
রাষ্ট্র সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সরকার মানুষের আস্থা ফেরাবে। আমরা এমন একটা স্বাস্থ্য কাঠামো দাঁড় করাব যেখানে রাষ্ট্রপতি ও সাধারণ মানুষ এক জায়গা থেকে চিকিৎসা নেবে।”
গত ১৬ বছরে দেশ থেকে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে অভিযোগ করে হাসনাত বলেন, “এ সময়ে আমাদের বিভাজিত করে রাখা হয়েছিল, আমরা বিভক্ত ছিলাম। আমাদেরকে বিভাজনে রেখে আমাদের মাথায় ‘কাঁঠাল ভেঙে’ খেয়েছে।”
শাসকরা সব সময় সাম্প্রদায়িক বিভাজনে ইন্ধন দিয়েছে মন্তব্য করে হাসনাত বলেন, “সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বন্যার সময় আমরা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংকট মোকাবেলা করেছি। আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি।
“আন্দোলন পরবর্তী সময়েও কেউ আমাদেরকে বিভাজিত করতে পারবে না।… আমরা ছাত্র জনতা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি সহ্য করব না।”