এখন থেকে যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টের কপি ছাড়া বিদেশগামী ফ্লাইটের টিকিট অগ্রিম বুকিং করা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক সভায়। সভা শেষে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বাংলাদেশ থেকে বিদেশ ভ্রমণের বিভিন্ন পর্যায়ে ফ্লাইটের টিকিটের উচ্চমূল্য পর্যালোচনাসহ যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন থেকে যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর ও পাসপোর্টের কপি ছাড়া যাতে টিকেট বুকিং করা না যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বৃহস্পতিবার থেকে বুকিং করা টিকেট পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইস্যু না করা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এয়ারলাইনস সেই টিকিট বাতিল নিশ্চিত করবে।
এতে আরও বলা হয়, ইতোমধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এয়ারলাইনস বা ট্রাভেল এজেন্সিকে গ্রুপ বুকিংয়ের মাধ্যমে ব্লককরা টিকিট আগামী ৭ দিনের মধ্যে ভ্রমণকারী যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বরসহ (পাসপোর্টের কপিসহ) টিকিট ইস্যু নিশ্চিত করতে হবে। না হলে তিন দিনের মধ্যে এয়ারলাইনস তা বাতিল নিশ্চিত করবে।
সভায় এয়ার টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর মধ্যে নাম, পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া গ্রুপবুকিং, বিভিন্ন এজেন্সি চাহিদা না থাকার পরেও যাত্রীদের পাসপোর্ট, ভিসা, ভ্রমণ নথিপত্র এবং প্রবাসী কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট এমনকি যাত্রী তালিকা ছাড়াই শুধুমাত্র ই-মেইলের মাধ্যমে সিট ব্লক করে রাখে। কিন্তু এই পিএনআর এ কোন প্যাসেঞ্জার বা যাত্রীর নাম উল্লেখ থাকে না। এজেন্সি বা যাত্রীর, ঐ ফ্লাইটের টিকেট খালি আছে কি না তা জানার কোনো সুযোগও থাকে না।
এতে আরও বলা হয়, নামবিহীন গ্রুপ সিট বুকিং এর কারণে টিকেট মজুতদারি করা হয় যার ফলে সিন্ডিকেট তৈরি হয়, আসন সংকট দেখা দেয়। ফলে টিকেট মূল্য বৃদ্ধি পায়। মূলত বিদেশি মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইনসগুলো ফ্লাইটের তারিখের অনেক আগেই আসন বিক্রয় নিশ্চিত করা ও অধিক মুনাফার জন্যই এই পদ্ধতি অবলম্বন করে রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দা, ওমান, দোহা, কুয়ালালামপুরসহ বিভিন্ন রুটের টিকেট ব্লক করে থাকে। এছাড়া, বিভিন্ন এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেও এয়ার টিকেটের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে বলে সভায় আলোচনা হয়।
এছাড়াও ফ্লাইটের টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সভাপতি করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটি প্রতিবেদন দেবে।
এছাড়া টিকিটের উচ্চমূল্যের বিষয়টি সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের ১৩ সদস্যের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে বলেও জানানো হয় সভায়।