ভোরের আকাশ তখনও আঁধারে ঢাকা। ভারতের শ্রীহরিকোটা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে শোনা যাচ্ছিল পিএসএলভি সি৬১ রকেটের গর্জন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই গর্জন থেমে গিয়ে নেমে আসে নিস্তব্ধতা। মাঝ আকাশেই ধ্বংস করে দেওয়া হয় ভারতের ইওএস-০৯ স্যাটেলাইটবাহী এই রকেট। এই ব্যর্থতা ইস্রোর ইতিহাসে আরেকটি দুঃখজনক অধ্যায় যোগ করল।
কী কারণে ধ্বংস করা হলো রকেট?
ইস্রোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী:
-
উৎক্ষেপণের তৃতীয় ধাপে রকেটের ইঞ্জিনে প্রযুক্তিগত ত্রুটি ধরা পড়ে
-
চেম্বারের অভ্যন্তরীণ চাপ হঠাৎ কমে যায়
-
পরিকল্পিত কক্ষপথে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় রকেট
-
নিরাপত্তাজনিত কারণে নিয়ন্ত্রিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয় রকেটটি
ইস্রোর বিজ্ঞানীরা জানান, অনিয়ন্ত্রিত রকেট যদি পৃথিবীতে ফিরে আসত, তাহলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারত।
কী ছিল এই মিশনের লক্ষ্য?
ইওএস-০৯ উপগ্রহটি:
-
কৃষি, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বড় ভূমিকা রাখার কথা ছিল
-
এটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ সেটেলাইট ইমেজিং ও তথ্য সংগ্রহ করার পরিকল্পনা ছিল
-
দেশের কৃষি উন্নয়ন ও জলবায়ু পূর্বাভাসে ব্যবহার হতো এই উপগ্রহ
ইস্রো চেয়ারম্যান ড. ভি নারায়ণ বলেন, “মিশনটি আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। আমরা ফেইলিওর এনালাইসিস কমিটি গঠন করছি। কী কারণে এই ব্যর্থতা ঘটেছে তা বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা হবে।”
তিনি আশ্বাস দেন, ইস্রো খুব দ্রুত ফিরে আসবে। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও শিক্ষা থেকেই সামনে এগিয়ে যাবে সংস্থা।
অতীতেও ব্যর্থতা, কিন্তু সেখান থেকেই উঠে দাঁড়িয়েছে ইস্রো
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইস্রো অতীতেও একাধিকবার ব্যর্থতা দেখেছে, যেমন:
-
২০১০: জিএসএলভি-ডি৩ উৎক্ষেপণে ব্যর্থতা
-
২০১৭: IRNSS-1H স্যাটেলাইট ব্যর্থ হয় ফেয়ারিং না খোলায়
-
২০১৯: চন্দ্রযান-২-এর ল্যান্ডার চাঁদের মাটি স্পর্শের আগেই নিয়ন্ত্রণ হারায়
তবে এরপরই ইস্রো মঙ্গলযান (২০১৪) এবং চন্দ্রযান-৩ (২০২৩)-এর মতো সফল মিশন দিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়েছে।