আমাদের দেশে স্মার্টফোন ব্যাবহার হওয়া শুরু হলো এই কিছু বছর হবে। ছোট ব্র্যান্ডগুলো থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে এখন বিভিন্ন বড় মোবাইল ব্র্যান্ডের ফোনও বাজেটের মধ্যে চলে এসেছে। আসলে আমাদের একটা অভ্যাস হচ্ছে দামী কোনো জিনিস পেলে, কমদামী জিনিসটার মূল্য আমরা দেই না। এরকম অনেক মোবাইল ব্র্যান্ড প্রথম প্রথম রাজত্ব চালিয়ে বেড়ালেও, এখন সেটা তারা আর পারছেনা। তবে, হাল না ছেড়ে দেয়ার মতো অনেকেই থাকে। দেখতে চায় শেষ পর্যন্ত কি হয়। এভাবেই আবার আস্তে আস্তে উপরে উঠে আসে এসব ব্র্যান্ডগুলো। সেগুলোর মধ্যে একটি অতি পরিচিত মোবাইল ব্র্যান্ডের নাম হচ্ছে ‘সিম্ফনি’।
বর্তমানে এন্ড্রোয়েড ফোন তৈরীতেও ভালোই সফলতা পাচ্ছে এই মোবাইল ব্র্যান্ড। কিছুদিন আগে এই ব্র্যান্ড রিলিজ করেছে তাদের আরেকটি নতুন স্মার্টফোন। যেটির মডেলের নাম হচ্ছে ‘জেড ৩০ প্রো’। আজ কথা হতে যাচ্ছে এই মডেলের ব্যাপারেই। তো চলুন নিচে গিয়ে দেখে আসা যাক এই ফোনটির বিস্তারিত কিছু তথ্যঃ⤵
বডিঃ
ফোনটির বডি ডিমেনশন হচ্ছে ১৬৩.৩×৭৬.৪×৮.৯ মি.মি.। ফোনটির মোট ওজন হচ্ছে ১৮৬ গ্রাম। ফোনটিতে থাকছে ডুয়্যাল সিম কার্ড স্লট। এর ডিসপ্লের বডিতে দেয়া হয়েছে গ্লাস প্রটেকশন। ফোনটির পিছন এবং ফ্রেম হচ্ছে প্লাস্টিকের।
ডিসপ্লেঃ
‘সিম্ফোনি’ তাদের এই ফোনটির ডিসপ্লে করেছে ৬.৫২ ইঞ্চির। যেটা ৬০ এইচজেড রিফ্রেশ রেট যুক্ত আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে। যেটির রেজুলেশন হচ্ছে ৭২০×১৬০০ পিক্সেলের। ডিসপ্লেটিতে পিক্সেল ডেনসিটি হচ্ছে ২৭০ পিপিআই এবং অ্যাসপেক্ট রেশিও হচ্ছে ১৯:৫:৯। ডিসপ্লেটিতে আরও রয়েছে নোটিফিকেশন লাইট।
প্লাটফর্মঃ
ফোনটির অপারেটিং সিস্টেমে রয়েছে এন্ড্রোয়েড১০ এবং কাস্টম ইউআই হচ্ছে ‘সিম্ফোনি’র ইউআই ভার্সন। প্রসেসরে রয়েছে ১২ ন্যানোমিটারের ‘মিডিয়াটেক হেলিও এ২৫’। সিপিইউতে রয়েছে ৬৪ বিট, ১.৮ গিগাহার্জ এবং অক্ট্যা কোর (আর্ম কোরটেক্স – এ৫৩)। ফোনটির জিপিইউতে রয়েছে ‘আইএমজি পাওয়ার ভিআর জিই৮৩২০’।
ক্যামেরাঃ
ব্যাকঃ ‘সিম্ফোনি’ তাদের এই ফোনের পিছনে রেখেছে তিনটি ক্যামেরা। সেগুলো হচ্ছে ১৩, ২ এবং ৫ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। আরও থাকছে এলইডি ফ্ল্যাশ। ক্যামেরার ফিচারে রয়েছে ফেইস বিউটি, ডিসপ্লে ফ্ল্যাশ, পেরেন্টাল কন্ট্রোল, গুগল লেন্স, ডিজিটাল ওয়েলবিং, টাইম লেপস, স্লো মোশন এবং ৪এক্স জুম। ক্যামেরাগুলোতে থাকছেনা কোনো স্টাবিলাইজেশন। ক্যামেরার ভিডিও রেকর্ডিং রেজুলেশন হচ্ছে ফুল এইচডি @ ৩০ এফপিএসের।
ফ্রন্টঃ ফোনটির সামনে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা। এটির রেজুলেশন হচ্ছে (১০৮০×১৯০০)@৩০এফপিএসের। ডিসপ্লের উপর মাঝামাঝি জায়গায় ওয়াটারড্রপ একটি নচের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে এই ক্যামেরাটি। এটাতেও থাকছে না কোনো স্টাবিলাইজেশন।
মেমোরীঃ
‘সিম্ফোনি’ তাদের এই ফোনটিকে মাত্র একটি ভ্যারিয়্যান্টেই বাজারে ছাড়ে। সেটা হচ্ছে এর ৪/৬৪ জিবি ভ্যারিয়্যান্ট। ফোনে রয়েছে মেমোরি কার্ড স্লট। যেটাতে ১২৮ জিবি’র উপরের মেমোরি কার্ডও ব্যাবহার করা যাবে। আরও থাকছে ‘অটিজি সাপোর্ট’।
নেটওয়ার্কঃ
ফোনটির নেটওয়ার্ক টেকনোলজিতে রয়েছে ‘জিএসএম / এইচএসপিএ / এলটিই’। এটির ২জি ব্যান্ডে রয়েছে ‘জিএসএম ৮৫০ / ৯০০ / ১৮০০ / ১৯০০ – সিম১ & সিম২। ৩জি ব্যান্ডে রয়েছে ‘৮৫০ / ৯০০ / ২১০০’। মূল নেটওয়ার্কে এলটিই যুক্ত ৪জি ব্যান্ড। আরও থাকছে ‘জিপিআরএস এবং এজ’।
সাউন্ডঃ
ফোনটির সাউন্ড সেগমেন্ট বাজেটের দিকে তাকালে ভালোই ছিলো। এর ওয়ান সাইডেড স্পিকারে যেকোনো মিউজিকই সুন্দরভাবে শুনা যাচ্ছিলো। থাকছে লাউডস্পিকারের সুবিধাও। আরও থাকছে ৩.৫ মি.মি. ইয়ারফোন জ্যাক।
ব্যাটারীঃ
ফোনটিতে দেয়া হয়েছে নিন রিমুভেবল লি-প্রো’র ৫০০০ এমএইচের ব্যাটারী। যেটা একটি ভালো দিক অবশ্য। বক্সে আরও থাকছে ৫ওয়াটের ফাস্ট চার্জার।
ফিচারঃ
‘সিম্ফোনি’ তাদের এই ফোনে সেন্সর হিসেবে দিয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট। যেটি ফোনের পিছনে দেয়া হয়েছে। সেন্সর হিসেবে এই ফোনে আরও থাকছে ‘জি সেন্সর, প্রক্সিমিটি সেন্সর এবং লাইট সেন্সর’।
যেসব পরিবর্তন রয়েছে এই ফোনেঃ
‘সিম্ফনি’ তাদের এই ফোনের কিছু অংশে এনেছে পরিবর্তন। যেমনঃ ব্যাটারী ব্যাকআপ বাড়ানো, নেটওয়ার্ক স্পিড বাড়ানো। আশা করা যায় এই মোবাইল ব্র্যান্ডটি সামনে আরও নতুন কোনো মডেল আপগ্রেড করে নিয়ে আসবে।
দামঃ
বাংলাদেশে এর ৪/৬৪ জিবি ভ্যারিয়্যান্টের মূল্য ১০,৮৯০ টাকা। যেটা ফিচার হিসেবে আরেকটু কম হলে মনে হয় ভালো হতো।