সময় এবং নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। বিশ্বায়ন ও তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যারা এগিয়ে যেতে পারে না, তাদের জন্য কেউ অপেক্ষা করে না! বর্তমানে সেরা সেরা টেক জায়ান্টগুলো নিজেদের একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখতে প্রতিযোগিতাপূর্ণ লড়াইয়ে লিপ্ত। এই প্রতিযোগিতায় সবারই রয়েছে হার না মানা মানসিকতা। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রতিযোগীদের মূল অস্ত্র উদ্ভাবন। যেসব প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবন যত বেশি তারা ততটা এগিয়ে। যেমন: স্যামসাং। ইতিমধ্যেই, দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি নতুন নতুন উদ্ভাবন দিয়ে রয়েছে এক ধাপ এগিয়ে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের শুরুতে স্যামসাং নিয়ে আসে নতুন ওয়ান ইউআই (ইউজার ইন্টারফেস)।
চলুন পাঠক দেখে নেওয়া যাক, স্যামসাং তাদের নতুন এই ইন্টারফেসে কি কি ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এসেছে:
ফুল স্ক্রীন জেসচার্স: স্যামসাংয়ের নতুন এই ইন্টারফেসের সহায়তায় স্ক্রীনের নিচের বাম ও ডান কোণা থেকে উপরের দিকে সোয়াইপ করে ব্যাক ও রিসেন্ট বা চলমান অ্যাপ্লিকেশন দেখা যায়। মাঝখান থেকে সোয়াইপ করলে হোম স্ক্রীনে ফেরত আসা যাবে।
নতুন ধরনের আইকন এবং ডিজাইন এলিমেন্টস: নতুন এই ইন্টারফেসে আইকন এবং ডিজাইন এলিমেন্টসগুলোতে পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। অ্যাপ্লিকেশনগুলোর চারপাশে কিছুটা রাউন্ডেড শেপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া সবগুলো নোটিফিকেশন পৃথক পৃথক ভাবে না দেখিয়ে স্ক্রীন লক করা অবস্থায় নোটিফিকেশন এখন ডিফল্ট হিসেবে শুধু আইকন দেখাবে।
কী বোর্ড, ক্যামেরা এবং গ্যালারি রিসাইকেল বিন: নতুন এই ইন্টারফেসে কী বোর্ডে আনা হয়েছে পরিবর্তন। যুক্ত করা হয়েছে ফ্লোটিং মোড। এই মোডে কীবোর্ডের টাইপিং এর সুবিধা অনুযায়ী কীবোর্ডের অবস্থান ঠিক করে নেওয়া যায়। সোয়াইপ করে ক্যামেরার বিভিন্ন মোড পরিবর্তন করা যাবে এই ইন্টারফেসে। উপরে নিচে সোয়াইপ করলে ফ্রন্ট ও ব্যাক ক্যামেরা পাওয়া যাবে। অন্য দিকে গ্যালারি অ্যাপে যোগ হয়েছে রিসাইকেল বিন, যেখানে আপনার ভুলে ডিলিট করা ছবি পরবর্তী কিছু সময় পর্যন্ত জমা থাকবে। এই সময়ের মধ্যে ওই ছবি পুনরায় ফিরিয়া না আনলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে মুছে যাবে ।
লিফ্ট টু ওয়েক: ওয়ান ইউআইতে যোগ করা হয়েছে লিফ্ট টু ওয়েক সিস্টেম। এর কাজ হলো যখন কেউ ফোন ব্যবহারের জন্য হাতে তুলবে তখন ফোনের স্ক্রীন চালু করা এবং ঘড়ি ও নোটিফিকেশন দেখানো। যারা ফেস রিকগনিশন ব্যবহার করে অভ্যস্ত তাদের জন্য এটি বেশি সুবিধাজনক। আগে পাওয়ার বাটন চেপে ফেস রিকগনিশন করতে হতো কিন্তু এখন শুধু মুখের সামনে ধরলেই অত্যাধুনিক ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তির মাধ্যমে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্যান হবে।
ডেক্স মোড: স্যামসাং ডেক্স মোড অপশনটি এক কথায় অতুলণীয়। এই অপশনের মাধ্যমে ব্যবহারকারী তার স্যামসাং স্মার্টফোনটি ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপের সাথে সংযুক্ত করে ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপের ডিসপ্লেটি ডেস্কটপে পরিণত করে ফেলতে পারবেন। অর্থাৎ, ফোনের সবকিছুই ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপের ডিসপ্লেতে কম্পিউটারের মতো প্রদর্শণ করবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবহার করা যাবে। চাহিদা অনুযায়ী কীবোর্ড ও মাউস যুক্ত করে তা ডেস্কটপের মতো করে ব্যবহারেরও সুযোগ রয়েছে।
সিকিউর ফোল্ডার: ব্যাক্তিগত তথ্য কিংবা অ্যাপ ব্যবহারকারী চাইলে সিকিউর ফোল্ডারে সংরক্ষিত করার সুযোগ মিলবে এই ফিচারটির মাধ্যমে। ব্যবহারকারীর দেয়া পাসওয়ার্ড কিংবা ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছাড়া সিকিউর ফোল্ডারে কেউ ঢুকতে পারবে না। ফলে সুরক্ষিত থাকবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ।
এছাড়া ডিভাইস কেয়ার অপশনে যুক্ত করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিশ্বখ্যাত অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়ার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাকাফির সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে স্যামসাং স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করেছে স্যামসাং। ফলে ম্যালওয়্যার, স্প্যাম কিংবা যেকোনো ভাইরাসের আক্রমণ থেকে ডিভাইস থাকবে সুরক্ষিত।