খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এবং শিক্ষা– এই পাঁচটি আমাদের জীবনের মৌলিক চাহিদা, এটাই জেনে এসেছি এতদিন। তবে আধুনিক জীবনের প্রয়োজনে আরেকটি বিষয় যুক্ত হয়েছে মৌলিক চাহিদার তালিকায়। সেটি হচ্ছে প্রযুক্তি।
বিগত দশকে প্রযুক্তিবিশ্বে উদ্ভাবন হয়েছে অনেক। তবে এর মধ্যে কিছু কিছু বিষয় জনপ্রিয়তায় ছাড়িয়ে গেছে অন্য লাখো উদ্ভাবনকে। বিশ্বের অন্যতম গ্রহণযোগ্য অনলাইন পোর্টাল বিজনেস ইনসাইডার ২০১৯ এর বছর শেষে তালিকা প্রকাশ করেছে একটি। এই তালিকায় স্থান পেয়েছে বিগত ১০ বছরে বিশ্ব চমকে দেওয়া ডিভাইসগুলো। তার মধ্য থেকে ১০টি ডিভাইস নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন।
* আইফোন ৪: তালিকায় প্রথমেই আছে আইফোন ৪। প্রথমবারের মতো সামনে ও পেছনে স্লিক গ্লাস ব্যবহার করা হয় ডিভাইসটিতে। এরপর থেকে দেখা যায় অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ডগুলোও স্লিক গ্লাস ব্যবহার শুরু করেছে।
৫ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরাও প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছিল এই আইফোনে ফোরেই। রেটিনা ডিসপ্লে ব্যবহারও প্রথম হয়েছিল এই ডিভাইসে। সব মিলে প্রযুক্তিবিশ্বকে চমকেই দিয়েছিল অ্যাপল।
* ইকো স্পিকার: তালিকায় দুইয়ে আছে অ্যামাজনের ইকো স্পিকার। ফোনে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহার যতটা না চমক ছিল, তার থেকে বড় চমক ছিল স্পিকারে ভয়েস অ্যাসিসট্যান্ট ব্যবহার। নিজেদের তৈরি স্মার্টস্পিকার ইকোতে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট সুবিধা যুক্ত করে হৈচৈ ফেলে দেয় অ্যামাজন। এখন প্রায় ১০ কোটি মানুষ অ্যামাজনের তৈরি ইকো ডিভাইসটি ব্যবহার করছে।
* আইফোন ১০: হোমবাটন ছাড়া আবার ফোন চলে নাকী? এমন প্রশ্ন করলে আগে মানুষ আপনাকে হয়তো বোকা ভাবতো। কিন্তু আইফোন ১০ বাজারে আসার পর বদলে গেছে পরিস্থিতি। আইফোন ১০ দিয়ে ফোন ব্যবহারের ধরনই বদলে দেয় অ্যাপল। প্রথমবারের মতো হোমবাটনহীন ফোন আনে তারা। প্রচলিত টাচ আইডির বদলে এতে ছিলো ফেইস আইডি ফিচার। নচ ডিসপ্লের ব্যবহারও শেখালো ফোনটি। নচ অংশে সেলফি ক্যামেরা ব্যবহারও এই ফোনে প্রথম।
* জুল ই-সিগারেট: জুল ই-সিগারেটের মাধ্যমে কিশোর বয়সীদের কাছে জনপ্রিয়তা পায় ভ্যাপিং। ফ্লেভার ও ডিজাইনের কারণে জনপ্রিয়তা পেলেও স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকায় একে ঘিরে শুরু হয় সমালোচনা। প্রচলিত সিগারেটে নিকোটিন ব্যবহার করা হয়। জুলে নিকোটিনের বদলে প্রধান উপাদান হিসেবে থাকে নিকোটিন সল্ট। নিকোটিন সল্ট একদম সিগারেট খাওয়ার মতো অনুভুতি তৈরি করায় তরুণরা এতে সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ে। ২০১৫ সালে বাজারে আসা এই ডিভাইসটি নিয়ে বিশ্বে আলোচনার কমতি ছিলো না।
* এয়ারপডস: আইফোন থেকে হেডফোন জ্যাক বাদ দেয়া হয় ২০১৬ সালে। সে বছরই আইফোন ৭ এর পাশাপাশি তারবিহীন হেডফোন ‘এয়ারপডস’ আনার ঘোষণা দেয় অ্যাপল। হেডফোন জ্যাক বাদ দেওয়ায় অনেক সমালোচনা হজম করতে হলেও ‘এয়ারপডস’ আনার পর আশাতীত সাফল্য পায় অ্যাপল।
* নিনটেন্ডো সুইচ: গেইমারদের জন্য ২০১৭ সালে বাজারে আনা হয় নিনটেন্ডো সুইচ। শক্তিশালী গেইমিং কনসোলটিতে ভারি গেইমও খেলা যায়। ডিভাইসটি পকেটে নিয়ে ঘোরা যায় বলে গেইমারদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। কনসোলটি জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে ‘দ্য লিজেন্ড অব জেলডা: ব্রিথ অব দ্য ওয়াইল্ড’ ও ‘সুপার স্ম্যাশ ব্রোস আল্টিমেট’ গেইমগুলোরও ভূমিকা আছে।
* অ্যাপলওয়াচ: ২০১৫ সালের আগেও বাজারে অনেক স্মার্টওয়াচই এসেছে। তবে ডিজাইনে চমক দিয়ে আর টাচ সেন্সিটিভ ফিচার যুক্ত করে বাজারের অন্যান্য স্মার্টওয়াচকে পেছনে ফেলে আলোচনার সিংহভাগ দখলে নেয় অ্যাপলওয়াচ।
* আইপ্যাড: আইপ্যাড বাজারে আসে ২০১০ সালে। সহজে বহন করা যায় বলে ফোন ও ল্যাপটপের মাঝামাঝি আকারের ডিভাইসটি বাজার পায় দ্রুত। দামেও ছিল ল্যাপটপের চেয়ে কম। ইদানিং অন্যান্য ব্র্যান্ডের ট্যাবলেটের চাহিদায় ভাটা পড়লেও আইপ্যাড কিন্তু বিকোচ্ছে বেশ।
* সারফেস প্রো ৩: ২০১৪ সালে সারফেস প্রো ৩ বাজারে আনে মাইক্রোসফট। আকারে ল্যাপটপের মতো বড় হলেও ডিভাইসটি ব্যবহার করা যায় ট্যাব হিসেবেও।
* অক্যুলাস: ভার্চুয়াল হেডসেট বানিয়ে কল্পনার জগতকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ করে দেয় অক্যুলাস। ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ বাজারে আসে তাদের প্রথম ভিআর হেডসেট।