ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য রফতানিতে একের পর এক মাইলফলক অতিক্রম করছে ওয়ালটন। স্থানীয় বাজারে শীর্ষস্থানের পর বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশে তৈরি পণ্য ছড়িয়ে দিতে ব্যাপকভাবে কাজ করছে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ভারতে ওয়াশিং মেশিন রপ্তানি শুরু করলো বাংলাদেশি ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। এর আগে থেকেই প্রতিবেশি দেশটিতে রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে আসছে ওয়ালটন।
জানা গেছে, ভারতের বাজারের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার একটি খ্যাতনামা ব্র্যান্ড ওয়ালটনের কাছ থেকে ওয়াশিং মেশিন নিচ্ছে। ওইএম (ওরিজিনাল ম্যানুফ্যাকচারার) হিসেবে ব্র্যান্ডটিকে ওয়াশিং মেশিন তৈরি করে দিচ্ছে ওয়ালটন। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত সেমি অটোমেটিক মডেলের ওয়াশিং মেশিনের প্রথম শিপমেন্টটি আগামী ১৫ নভেম্বর ভারত যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ভারতে অটোমেটিক ওয়াশিং মেশিনও রফতানি করবে ওয়ালটন।
এ উপলক্ষ্যে বুধবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসে আয়োজিত হয় এক ইনঅগুরেশন সিরিমনির। ‘এক্সপোর্টিং ওয়াশিং মেশিন টু ইন্ডিয়া’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহিদ হাসান ও মো. হুমায়ূন কবীর, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের (আইবিউ) প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স-এর সিইও প্রকৌশলী আল ইমরান।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর রাকিবুল ইসলাম ও প্রকৌশলী সৈয়দ আল ইমরান, ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর প্রকৌশলী আব্দুর রউফ, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর অগাস্টিন সুজন, সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর প্রকৌশলী চিরঞ্জিত পাল, ডেপুটি ডিরেক্টর ওলগা আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আল ইমরান বলেন, বিশ্ববাজারে ওয়াশিং মেশিনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ওয়াশিং মেশিনের বৈশ্বিক বাজার প্রায় ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। ভারতের মতো বিশাল জনবহুল দেশে ওয়াশিং মেশিনের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১ কোটি ইউনিট। সুতরাং দেশটিতে ওয়াশিং মেশিনের রফতানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি জানান, আগামি বছরের মধ্যে ভারতে অন্তত ১ লাখ ইউনিট ওয়াশিং মেশিন রফতানির লক্ষ্য রয়েছে ওয়ালটনের। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওয়াশিং মেশিন রফতানি কার্যক্রম জোরদার করেছে ওয়ালটন।
কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশে নিজস্ব কারখানায় বিশ্বমানের পণ্য তৈরি ও সাশ্রয়ী দামে সরবরাহ করায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন। গত পাঁচ মাসে (জুন-অক্টোবর) দেশের বাজারে ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন বিক্রিতে ৮০ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একই সময়ে বেড়েছে রফতানিও। ভারতের পাশাপাশি নেপাল, ইয়েমেন, পূর্ব তিমুর ইত্যাদি দেশে ওয়াশিং মেশিন রফতানি করেছে ওয়ালটন।
ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিনের আরএন্ডডি প্রধান মনিরুজ্জামান কার্জন জানান, ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে নিজস্ব কারখানায় ওয়াশিং মেশিন তৈরি করছে ওয়ালটন। ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন তৈরি হচ্ছে দেশভেদে ক্রেতাদের পছন্দ, প্রয়োজনীয়তা, ক্রয় সক্ষমতা, আবহাওয়া ইত্যাদির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। এজন্য ওয়ালটনের রয়েছে শক্তিশালী আরএন্ডডি (গবেষণা ও উন্নয়ণ) বিভাগ এবং অত্যাধুনিক টেস্টিং ল্যাব। সেখানে কাজ করছেন দেশের একঝাঁক মেধাবী প্রকৌশলী। যারা ওয়াশিং মেশিনের ডিজাইন, নতুন নতুন প্রযুক্তি ও ফিচার এবং গুণগত মান নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করছেন। যার ফলে গ্রাহকরা বাজেট অনুযায়ী সেরা মানের টেকসই পণ্য পাচ্ছেন।
বর্তমানে বাজারে রয়েছে ১৪ মডেলের সেমি অটোমেটিক এবং অটোমেটিক টপ ও ফ্রন্ট লোডিং ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন। ৬ থেকে ১২ দশমিক ৫ কেজি পর্যন্ত ধারণক্ষমতার এসব ওয়াশিং মেশিনের মূল্য মাত্র ৬,৯০০ টাকা থেকে ৪৮,০০০ টাকার ভেতর।
মডেলভেদে ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিনের প্রধান যন্ত্রাংশে (মোটর) সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত ওয়ারেন্টি পাচ্ছেন গ্রাহক। পাশাপাশি ৫ বছরের হোম সার্ভিস এবং ১ বছরের বিনামূল্যের সেবা দেয়া হচ্ছে। দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে সারা দেশে ওয়ালটনের রয়েছে ৭৬টি সার্ভিস সেন্টার।