ভারতের প্রান্তিক শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিজেদের অবস্থান জোরদারে ১০০ কোটি রুপি বিনিয়োগে যাচ্ছে শাওমি। আগামী দুই বছরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির শহরগুলোতে এক্সক্লুসিভ শোরুমের সংখ্যা বাড়াতে এ বিনিয়োগ করবে চীনা স্মার্টফোন জায়ান্টটি। খবর ইটি টেলিকম।
শাওমি ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মানু কুমার জৈন বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে ভারতে শাওমির এক্সক্লুসিভ শোরুমের সংখ্যা তিন হাজার থেকে বাড়িয়ে ছয় হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। এতে প্রায় ১০ হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে।
তিনি আরো জানান, অতিরিক্ত এ তিন হাজার অংশীদারের শোরুম সংস্কার, আসবাবপত্র সংযোজন, প্রচারণা, প্রযুক্তিগত সহায়তা, বিল আদায়ের জন্য পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) মেশিন সংযুক্তকরণ ও প্রচারণার জন্য লোকবল নিয়োগে সহায়তা করতে আমরা আনুমানিক ১০০ কোটি রুপি ব্যয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব খুচরা বিক্রেতারা যেন শাওমির শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দাঁড়ায়, সেজন্য আমরা এমআই রিটেইল একাডেমি থেকে তাদের সেভাবে প্রশিক্ষণ দিতে চাই।
স্মার্টফোন বিক্রির দিক থেকে ভারতে ১৩ প্রান্তিক ধরে শীর্ষে রয়েছে শাওমি। বর্তমানে সেখানে ৩ হাজার এক্সক্লুসিভ শোরুম, ৭৫টি এমআই হোম এবং ১০ হাজারের বেশি রিটেইল পয়েন্ট রয়েছে।
ভারতে বৃহত্তম ভোক্তা নেটওয়ার্ক শাওমির, যা স্যামসাংয়ের চেয়ে প্রায় ৪৪ শতাংশ বড়। শীর্ষ অনলাইন ব্র্যান্ড হিসেবে বাজারের ৪০-৪৫ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও অফলাইন শেয়ার মাত্র ১৮-২০ শতাংশ। শাওমির মোট বিক্রির প্রায় ১০ শতাংশই হচ্ছে তাদের অনলাইন প্লাটফর্ম এমআইডট কম থেকে। অনলাইন ও অফলাইন মাধ্যমে বিক্রির অনুপাত ৫০:৫০ নিয়ে আসাই শাওমির প্রধান লক্ষ্য।
শাওমি অনলাইন প্লাটফর্মের কেনাবেচাকে প্রাধান্য দিয়েছে এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন জৈন। তিনি বলেন, শাওমি কর্তৃপক্ষ পণ্যের তীব্র সংকট থাকলেও অনলাইন-অফলাইন দুই মাধ্যমেই সমান গুরুত্ব দিয়েছে এবং সমানভাবেই পণ্য বণ্টন করেছে।
তিনি আরো বলেন, অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট, এমআইডটকম, ক্রোমা, রিলায়েন্স রিটেইলসহ দেশজুড়ে বিস্তৃত থাকা ১০ হাজারের বেশি রিটেইল পার্টনারের কাছে আমরা সমানভাবে পণ্য বণ্টন করেছি। আমাদের কোনো পণ্য আলাদাভাবে কোথাও উন্মুক্ত করা হয়নি।
শাওমি রিটেইলারদের কোনো টার্গেট বেধে দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী নয়। বরং বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা অর্জনের ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মতো ব্যবসায়িক মডেল যাদের, তাদের দৃষ্টি বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা অর্জনের দিকেই বেশি থাকে। কারণ আমরা পুল ব্র্যান্ড। আমরা রিটেইলারদের এক সপ্তাহের জন্য পণ্য সংরক্ষণের সুযোগ দিয়ে থাকি। তারা মাসে চারবার এটি পরিবর্তন করতে পারবে। এখানে প্রতি মাসে আপনি যে লভ্যাংশ পাবেন, সেটা আপনার বাজারে প্রচলিত পুশ ব্র্যান্ডের মতোই হবে। কিন্তু বাড়তি বিক্রির কারণে আপনি অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।
রিটেইলার কমিউনিটি থেকে প্রকাশিত ই-পোর্টাল ভারতে স্মার্টফোনের তালিকা প্রকাশের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে জৈন বলেন, যদি কোনো মাধ্যম আমাদের পণ্য বিক্রির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে তাদের স্বাগতম। আমরাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। তবে রিটেইলার কমিউনিটি থেকে আমরা এখন পর্যন্ত এমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণের খবর পাইনি।