স্মার্টফোনের দুনিয়ার ২০২২ সাল ছিল উদ্ভাবনের। নানা মডেলের হ্যান্ডসেট এনেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এগুলো যেমন ডিজাইন, তেমনি ফিচারেও ছিল অনবদ্য। আগামীর ফোন যেন এ বছরই বাজারে এসেছে। এই তালিকায় আছে স্যামসাং, অ্যাপল, শাওমি, ভিভো এবং অপোর মতো প্রতিষ্ঠান। জানুন এসব ফোন সম্পর্কে।
স্যামসাং ফোল্ডিং ফোন
ফোল্ডিং বা ভাঁজ করা ফোনের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছেই। এই ফোনের বাজারের অনেকটাই দখল করে আছে স্যামসাং। প্রতিষ্ঠানটির গ্যালাক্সি জেড ফোল্ডের বিক্রি সবচেয়ে বেশি। স্যামসাং ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানি লিমিটেড জানিয়েছে, গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড এবং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ স্মার্টফোনের সংখ্যা প্রতি বছর দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। স্যামসাং এই বছর গ্যালাক্সি আনপ্যাকড ইভেন্টে গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড ৪ এবং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৪ ফোন দুইটি বাজারে ছাড়ে। ইতিমধ্যে ক্রেতারা মডেল দুটি লুফে নিয়েছেন। গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড ৪ ফোনে ৭.৬ ইঞ্চির ডায়নামিক অ্যামোলিড ২এক্স ইনফিনিটি ফ্লেক্স প্রাইমারি ডিসপ্লে রয়েছে। অন্যদিকে গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৪ ফোনে ৬.৭ ইঞ্চির সুপার অ্যামোলিড ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে।
ফটোগ্রাফির জন্য গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড মডেলে ৫০+১২+১০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা রয়েছে। যেখানে ফ্লিপ ৪ এসেছে ১২+১২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরাসহ। দুটি মডেলেই রয়েছে ১০ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা এবং স্ন্যাপড্রাগন ৮+ জেন ১ প্রসেসর। বাংলাদেশের বাজারেও হ্যান্ডসেট দুইটি পাওয়া যাচ্ছে।
শাওমির ২০০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরার ফোন
বাজারে এলো শাওমির রেডমি সিরিজের নতুন ফোন। নয়া এই ফোনের মডেল রেডমি নোট ১২ প্রো প্লাস। রেডমি নোট ১২ সিরিজ চীনে লঞ্চ হয়েছে অক্টোবরে। এই সিরিজের ফোন এবার অন্যান্য দেশের বাজারেও বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে শাওমি। ফোনটির বিশেষত্ব হচ্ছে- এতে ২০০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা সেন্সর ব্যবহৃত হয়েছে। এই ফোনে হাইস্পিড চার্জিং সিস্টেম দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ অবিশ্বাস্য কম সময়ে অনেকটা চার্জ হবে এই ফোনে।
অ্যানড্রয়েড রেখে ডাম্বফোনে মজেছে তরুণ প্রজন্ম
অ্যানড্রয়েড ফোন রেখে ডাম্বফোনে মজেছে তরুণ প্রজন্ম। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার মতো দেশ যেখানে এখনও মাথাপিছু আয় অনেকটা কম সেখানে সাধারণ কুলিং ও টেক্সট মেসেজের জন্য মানুষ এই ফোনগুলোকেই বেছে নিচ্ছেন। তবে শুধু আর্থিক কারণে নয়, অনেকে স্মার্টফোন থেকে দুরে থাকতেও ফিচার ফোনের দিকে ঝুঁকছেন।
স্মার্টফোনে সারাদিন ক্রমাগত বিভিন্ন তথ্য স্ক্রিনে ভেসে উঠতে থাকে। আর এই বিপুল পরিমাণ তথ্য জীবনকে অতিষ্ঠ করে দিচ্ছে বলে মনে করছেন তরুণ প্রজন্মের একাংশ। আর এই কারণেই নিজের স্মার্টফোন বিক্রি করে ফিচার ফোন অথবা ডাম্বফোন কেনার দিকে ঝুঁকছেন তারা। এদের অনেকেই জানিয়েছেন স্মার্টফোন ব্যবহার বন্ধ করার কারণে জীবনে শান্তি ফিরে এসেছে। আগের থেকে অনেক বেশি আনন্দ উপভোগ করছেন বলেও জানিয়েছেন অনেকে।
কেউ কেউ আবার স্মার্টফোনে চার্জিংয়ের ঝামেলা বাদ দিতে ফিচার ফোনের দিকে ঝুঁকেছেন। কেউ আবার সপ্তাহান্তে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে কিনছেন এই ধরনের ফোন। তবে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, আন্তর্জাতিক সেলিব্রিটিরাও এই পথে হেঁটেছেন। জনপ্রিয় হলিউড তারকা সেলিনা গোমেজ গত কয়েক বছর ধরে স্মার্টফোন থেকে দুরে রয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। এছাড়াও ভালো হয়েছে ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলো।
৫জি ফোনের উত্থান
পৃথিবীর অনেকে দেশেই চালু হয়েছে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ৫জি। এই নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি চালু হওয়ায় বেড়েছে ৫জি হ্যান্ডসেটের কদর। বিভিন্ন মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এ বছর বিভিন্ন মডেলের ৫জি ফোন এনেছে।
‘টাইপ সি পোর্ট’ বাধ্যতামূলক হচ্ছে
একেক স্মার্টফোনে একেক ধরনের চার্জিং ফোন থাকে। কিছু ফোনে টাইপ সি পোর্ট, কোনোটায় আবার মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট দেওয়া হয়। এদিকে আইফোনের জন্য রয়েছে আলাদা চার্জিং পোর্ট। ফলে চার্জিং ক্যাবল হারালে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
এই সমস্যার সমাধানে সব ফোনে একই ধরনের চার্জিং পোর্ট দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সব স্মার্ট ডিভাইসে ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এই নিয়ম চালু হলে ফোনের ক্যাবল দিয়েই ল্যাপটপ, ক্যামেরাসহ অন্যান্য ডিভাইস চার্জ দেওয়া যাবে। ২০২৪ সাল থেকে ইউরোপে সব ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট বাধ্যতামূলক হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই আইন পাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একই ধাঁচে এবার ভারতেও ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট নিয়ে নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সব স্মার্ট ডিভাইসের জন্য একই ধরনের চার্জার একদিকে যেমন ব্যবহারকারীর জীবন সহজ করবে অন্যদিকে কমবে ই-দূষণের মাত্রা।
৫৩০ কোটি মোবাইল ফোন বাতিল হচ্ছে, ই-বর্জ্যে বাড়ছে দূষণ
পুরাতন বা নষ্ট স্মার্টফোন কিংবা ল্যাপটপ মানুষের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ইলেকট্রনিক বর্জ্য বা ই-বর্জ্য বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী মানুষের হাতে এখন ১৬০০ কোটি মোবাইল ফোন আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ইউরোপের নাগরিকদের কাছে থাকা ডিভাইসগুলোর এক-তৃতীয়াংশই আর ব্যবহার না করে অকেজা অবস্থায় ফেলে রাখছেন। ফলে মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে নানাবিধ রোগ। বাড়ছে রোগের ঝুঁকিও। এসব ই-বর্জ্য বা রাসায়নিক পর্দাথগুলোর কারণে বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গর্ভবতী মা ও শিশুরা।
২০২২ সালে পরিবেশ কর্মীদের চিন্তার নতুন কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী প্রচুর পরিমাণে ই-বর্জ্য। ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম নির্মাণে যে মূল্যবান ধাতু নষ্ট হয়, তা পরিবেশের উপর যথেষ্ট খারাপ প্রভাব ফেলে।
এছাড়া ইলেকট্রনিক তারের কপার নির্মাণে ব্যবহৃত কোবাল্টের ধাতু আসে খনি থেকে। ডিভাইসগুলো রিসাইকেল করা না হলে অথবা ডিভাইস নষ্ট হয়ে গেলে তা থেকে দামি ধাতু সংগ্রহ করার উদ্যোগ না থাকলে বর্জ্য হিসেবে নষ্ট হয় মূল্যবান ধাতুগুলো। বিশ্বব্যাপী ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়েস্ট ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইকুইপমেন্ট (ডব্লিউইইই) ফোরাম জানিয়েছে, সব মিলিয়ে ৫৩০ কোটি মোবাইল ফোন এই বছরই ই-বর্জ্যে পরিণত হবে। এর একটিকেও পুনর্ব্যবহার বা রিসাইকেল করা যাবে না।
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট স্মার্টফোন
এ বছর বাজারে এসেছে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট স্মার্টফোন। মডেল ইউনিহার্টজ জেলি ২। ফোনটি চলবে অ্যানড্রয়েড ১১ অপারেটিং সিস্টেমে। ছোট আকারের এই ফোনে রয়েছে মাত্র ৩ ইঞ্চির ডিসপ্লে। এতে ৪জি কানেক্টিভিটি রয়েছে। আকারে ছোট হলেও ফিচারে কোনোরকম আপস করা হয়নি। কোম্পানির দাবি, এটাই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট স্মার্টফোন। এতে থাকছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, শক্তিশালী প্রসেসর।
ইউনিহার্টজের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে এটাই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ৪জি স্মার্টফোন। এমন অনেকেই রয়েছেন যাদের বড় স্মার্টফোন ব্যবহার পছন্দ নয়। কিন্তু উপায় না থাকার কারণে ব্যবহারে বাধ্য হন। এসব গ্রাহকের কথা মাথায় রেখেই এই ফোন ছোট্ট লঞ্চ করা হয়েছে। এই ফোনের দুর্দান্ত ডিসপ্লেতে ভিডিও দেখার সঙ্গে ভালো গেমিং অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে। থাকছে কালারফুল শার্প ডিসপ্লে।
এই ফোনে রয়েছে ৩ ইঞ্চির ডিসপ্লে। এই ডিসপ্লেতে ৪৮০x ৮৫৪ পিক্সেল রেজুলেশন পাওয়া যাবে। থাকছে ডুয়াল সিম স্ট্যান্ডবাই সাপোর্ট। বিশেষ ফিচার হিসেবে রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, জি-সেন্সর, কম্পাস, জাইরোস্কোপ, প্রক্সিমিটি সেন্সর, অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর। এছাড়াও পাবেন এফএম রেডিও। ফোনটির দাম ১৯৯ মার্কিন ডলার। আপাতত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ফোন বিক্রি হচ্ছে।
নামে নাথিং কিন্তু ফিচার আছে এভিরিথিং
বাজারে এসেছে ভারতের তৈরি নাথিং ফোন। ফোনটি নিয়ে প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে আলোচনা তুঙ্গে। মোট তিনটি কনফিগারেশনে নাথিং ফোন ওয়ান মডেল পাওয়া যাচ্ছে। নাথিং ফোনের সিইও কার্ল পেই জানান, ২০২২ সালের আলোচিত ফোন এটিই। তিনি দাবি করেন, অন্য সব মডেলের স্মার্টফোন নার্থিং ফোন অনেকটাই আলাদা।
নাথিং ফোনে দেওয়া হয়েছে একটি ইউনিক ডিজাইন। ফোনের ব্য়াক প্যানেলে থাকছে ট্রান্সপারেন্ট গ্লাস। ব্যাক সাইডে এলইডি লাইট দেওয়া হয়েছে। রিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজে থেকেই জ্বলবে প্যানেলের লাইটগুলো। ভিডিও রেকর্ডিংয়ের সময় একটি লাল আলো ব্লিঙ্ক করবে। তবে এই ফিচারগুলো যোগ করার ফলে ফোনের মধ্যে প্রিমিয়াম লুক পাওয়া গেছে।
ফোনে ব্যবহার করা হয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস প্রটেকশন। ব্যাক ও ফ্রন্ট উভয় পাশেই এই গ্লাসের সুরক্ষা ব্যবহৃত হয়েছে। ফোনটি অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেমে ডিজাইন করা হয়েছে। ফোনের ব্য়াক প্যানেল ট্রান্সপারেন্ট থাকায় ফোনের ভিতরের যে কোনো কম্পোন্যান্ট দেখা সম্ভব। সঙ্গে ডুয়েল ক্যামেরা সেট-আপ দেওয়া হয়েছে ফোনে।
ফোনের ক্যামেরাতেও আপডেটেড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে ডুয়েল রিয়াল ক্যামেরা। অন্য ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ডুয়াল ক্যামেরার ক্ষেত্রে একটি ক্যামেরায় ভালো সেন্সর ব্যবহার করে। কিন্তু লেন্সের ক্ষেত্রে খুব একটা ভালো সেন্সর ব্যবহার করে না। কিন্তু নাথিং ফোন ওয়ানের ক্ষেত্রে দুটি ক্যামেরার ক্ষেত্রেই সনি সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। সঙ্গে ১১৪ ডিগ্রি পয়েন্ট অব ভিউ দেওয়া হয়েছে। ছবি বেশ ভালোই উঠছে। এরসঙ্গে নাইট মোড অন করে ছবি তুললে নয়েজ রিডাকশন করা সম্ভব হচ্ছে। সঙ্গে ন্যাচরাল লুকিং স্কিন টোন বোঝানো সম্ভব হচ্ছে।
ফোনে দেওয়া হয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৭৭৮জি প্লাস চিপসেট। এরসঙ্গে ১২ জিবি এলপিডিডিআর৫ র্যাম ব্যবহার করা হয়েছে। ৮ জিবি র্যাম ভার্সনেও ডিভাইসটি কেনা যাবে। স্টোরেজ যথাক্রমে ১২৮ জিবি ও ২৫৬ জিবি। এই ফোনে কল অব ডিউটি গেমটি খেলে বেশ ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেকের। একটানা খেলার পর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফোনটি অল্প গরম হতে শুরু করেছে।
নতুন আইফোনে স্যাটেলাইট কানেক্টিভিটি
সেপ্টেম্বরে বাজারে আসে অ্যাপলের নতুন হ্যান্ডসেট আইফোন ১৪। এই ফোনে স্যাটেলাইট বা উপগ্রহের মাধ্যমে কল, বার্তা ও ছবি আদান-প্রদানের সুবিধা রয়েছে। সরাসরি কৃত্রিম উপগ্রহে কানেক্ট করবে আইফোন ১৪। টেক্সট-ছবি পাঠিয়ে ভয়েস কলও করা যাবে কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে। যেখানে কোনো কোম্পানির ফোনের নেটওয়ার্ক নেই, সেখানেও চালানো যাবে নতুন আইফোন।
ফোনের মধ্যেই লুকানো হেডফোন
কিছুটা বিরতি নিয়ে গ্যাজেটের দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তন করল নকিয়া। রেট্রো ডিজাইনে নয়া মডেল নিয়ে হাজির হলো ফিনল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানটি। মডেল নকিয়া ৫৭১০ এক্সপ্রেস অডিও। এই ফোনে নতুন ডিজাইন ব্যবহার করেছে নকিয়া। থাকছে স্লাইডিং ডিজাইন। এই স্লাইডারের ভিতরেই একটি ওয়্যারলেস স্টেরিও ইয়ারবাড স্টোর করে রাখা যাবে। এই ইয়ারবাড ব্যবহার করে এই ফোনে ফোন কল ও গান শোনা যাবে। ফোনের ভিতরে ঢুকিয়ে দিলে এই ইয়ারবাড নিজে থেকেই চার্জ হতে শুরু করবে।
সংগীতপ্রেমীদের কথা মাথায় রেখে নতুন ডিজাইনের এই ফিচার ফোন ডিজাইন করা হয়েছে। থাকছে ডুয়াল স্পিকার। ঘরের মধ্যে এই ফোনের স্পিকারে মিউজিক উপভোগ করতে পারবেন। ফোনের স্পিকারেই দুর্দান্ত বেস পাওয়া যাবে। এছাড়াও থাকছে ক্লিয়ার হাই ও ন্যাচারাল ভোকাল। যা গান শোনার অভিজ্ঞতাকে আরও ভালো করবে।
থার্ড পার্টি অ্যাপ দিয়ে কল রেকর্ডিং করা যাবে না
বছরের মাঝামাঝিতে গুগল ঘোষণা করে এখন থেকে থার্ড পার্টি অ্যাপ দিয়ে কল রেকর্ডিং করা যাবে না। শুধুমাত্র ফোনের বিল্টইন অ্যাপেই কল রেকডিং হবে। গ্রাহকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে কল রেকর্ড করার অ্যাপস বন্ধ করেছে গুগল।
১১ মে থেকে এটি চালু করে অ্যানড্রয়েড ফোনের অপারেটিং সিস্টেম ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে প্লে স্টোর থেকে সমস্ত কল রেকর্ডিং অ্যাপ নিষিদ্ধ করে সেগুলো ডিলিট করা হয়েছে। ফোনে বিল্টইন কল রেকর্ডিং অ্যাপ না থাকলে থার্ডৃ পার্টি অ্যাপসের মাধ্যমে কথোপকথন রেকর্ড করা যাবে না। অনেক দেশেই ব্যক্তি স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার কথা মাথায় রেখে ফোনের কথোপকথন রেকর্ড করা আইনত নিষিদ্ধ। ফলে সেই দেশগুলোতে বিষয়টি নিয়ে নানা আইনি জটিলতায় জড়িয়েছিল গুগল।
স্মার্টফোনের দিন শেষ! আসছে নতুন ডিভাইস
এ যুগ বিজ্ঞানের। প্রযুক্তির নিত্যনতুন আবিষ্কার তাক লাগাচ্ছে প্রতিনিয়ত। মানুষের জীবন হচ্ছে আরও সহজ। আপনার হাতে নিশ্চয়ই একটি স্মার্টফোন আছে। এটি কিন্তু এখন আর নতুন প্রযুক্তির সূচক নয়। বলা যায় অনেকটা পুরোনো হয়ে গেছে। তবে নতুন কী? স্মার্টফোনের জায়গা দখল করে নিচ্ছে কোন ডিভাইস?
দেড় দশক আগে স্টিভ জবস তিনটি নতুন যোগাযোগ যন্ত্র উদ্ভাবনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যাতে মিউজিক প্লেয়ার, মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যাবে। তার এমন চমকপ্রদ ভাবনায় চমকে গিয়েছিল বিশ্ব। এরপর যখন নতুন পণ্য বাজারে আনলেন স্টিভ তখন সবাই বুঝল তিনি আসলে তিনটি পণ্য নয়, বরং একের ভেতরের তিন পণ্যের কথা বলেছেন। আর এই পণ্যটি হলো ‘আইফোন’। অর্থাৎ আজকের স্মার্টফোন।
তবে বর্তমানে আর এসবে থেমে থাকতে চায় না মানুষ। আরও নতুন প্রযুক্তির স্বাদ নিতে চায় সবাই। উদ্ভাবকেরাও এক্ষেত্রে দেখাচ্ছেন আশার আলো। জানা গেছে, স্মার্টফোনের মাধ্যমে যা সম্ভব হয়েছিল, সেরকম বা তার চেয়েও আধুনিক জটিল এক প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে বিশ্বপ্রযুক্তিকে পরিচিত করার স্বপ্ন দেখছেন তারা। কী সেই প্ল্যাটফর্ম? কেমন হবে সেই ডিভাইস?
অত্যাধুনিক এই প্ল্যাটফর্মের নাম ‘অগমেন্টেড রিয়েলিটি’ বা ‘এআর’। বিশেষ এই চশমার মাধ্যমে বাস্তব জগতের সঙ্গে কম্পিউটার গ্রাফিক যুক্ত হলে নতুন এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়া যায়।
এই প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যবহারকারী বাস্তব জগতের বস্তু ও মানুষের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে পারবেন। কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে কাজটি করা হবে। চশমার মাধ্যমে কথোপকথন চালানো ছাড়াও করা যাবে প্রয়োজনীয় নানা কাজ।
তবে এখনই এ ধরনের চশমা বাজারে আসছে না। তার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। ইতোমধ্যে ভিআর বা এআর তৈরিতে কাজ করছে অ্যাপল, গুগল, মেটা ও মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা বাজারেও বিক্রি করেছে পণ্যগুলো।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ভিআর বা এআর হেডসেটের বাজারটি খুবই সীমিত বাজার হিসেবেই চিহ্নিত। তবে শিগগিরই মূলধারার বাজারে পরিণত হবে এটি। আর তখন জনপ্রিয় হয়ে উঠবে গ্যাজেটগুলো।