স্মার্টফোন বিক্রির দিক থেকে ভারতের বাজার সব উৎপাদনকারীর পছন্দের তালিকায় রয়েছে। বিপুল জনসংখ্যা, কারখানা স্থাপন, সরকারি সহায়তাসহ বিভিন্ন কারণে দেশটিতে এ খাতের বিস্তার হচ্ছে। গত ২৯ ডিসেম্বর গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালে ভারতে ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রির হার ফোরজির রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। খবর রয়টার্স।
উচ্চগতির ফাইভজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার এবং সাশ্রয়ী মূল্যে সেলফোন বিক্রি বেড়ে যাওয়ার কারণে নতুন বছরে এ রেকর্ড তৈরি হবে বলে জানিয়েছে কাউন্টারপয়েন্ট। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, বিভিন্ন উপাদান সরবরাহ সংকট ও মাইক্রোইকোনমিক সমস্যার কারণে ভারতের সামগ্রিক স্মার্টফোন বাজার কমার সম্ভাবনা থাকলেও ফাইভজির চাহিদা ২০২৩ সালে চাহিদা বাড়াবে।
২০২২ সালেই বিভিন্ন শহরে ফাইভজি নেটওয়ার্ক সংযোগ চালু করেছে ভারত। নতুন এ নেটওয়ার্ক পরিষেবা ফোরজির তুলনায় ১০ গুণ গতিশীল হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। স্বচালিত গাড়ি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির বিকাশে এর ব্যবহার অত্যাবশ্যক বলেও গণ্য করা হচ্ছে। কাউন্টারপয়েন্ট জানায়, নতুন বছরে সাশ্রয়ী মূল্যের ফাইভজি ডিভাইসের বাজার হিস্যা ৩০ শতাংশ বাড়বে, ২০২২ সালে যার হার ছিল ৪ শতাংশ।
আগস্টে ভারতে ফাইভজি স্পেকট্রাম নিলামের সময় ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে রিলায়েন্স। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বাজেট বা সাশ্রয়ী মূল্যের ফাইভজি স্মার্টফোন বাজারজাতে অ্যালফাবেটের গুগলের সঙ্গে কাজ করছে। গবেষণা প্রতিবেদনে কাউন্টারপয়েন্ট জানায়, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে ফাইভজি স্মার্টফোনের ক্রমবর্ধমান বাজারজাত এক কোটি ইউনিট ছাড়িয়ে যাবে এবং বছরের শেষ নাগাদ ফোরজি স্মার্টফোন বাজারজাতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।
গবেষণা সংস্থাটির আশা, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ যন্ত্রাংশ সরবরাহ সংকট, মূল্যস্ফীতি, ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও ফাইভজি নেটওয়ার্কের সীমিত পরিসর সমস্যা থাকবে না। ফলে ফাইভজি স্মার্টফোন কেনার হার বাড়বে। রয়টার্স প্রকাশিত অন্য এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফাইভজি নেটওয়ার্ক ব্যবহারে গ্রাহকদের সুবিধা দিতে সফটওয়্যার আপডেট চালুর জন্য ভারত সরকার অ্যাপল, স্যামসাং ও অন্যান্য সেলফোন উৎপাদনকারীর ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। কেননা এখনো অনেক ডিভাইস ফাইভজি চালানোর জন্য উপযুক্ত নয়।
ফাইভজি স্মার্টফোনের বাজারজাত এবং গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে ২০২৩ সালে ভারতের স্মার্টফোন বাজার ১০ শতাংশ বাড়বে বলেও জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এ সময় দেশটিতে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন উৎপাদন হবে। ভারতে বর্তমানে ৬০ কোটির বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে। আরো অনেক ব্যবহারকারী ফিচার ফোন থেকে স্মার্টফোনে স্থানান্তরিত হচ্ছে। তাই বিশ্লেষকদের ধারণা, শিগগিরই স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়বে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভারতের গ্রাহকদের কাছে ফাইভজির চাহিদা এখন বেশি। বর্তমানে দেশটির বিভিন্ন অংশে ফাইভজি নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে যাচ্ছে। তাই ধারণা করা যাচ্ছে, ২০২৩ সালে অনেকেই ফোরজি স্মার্টফোন পরিবর্তন করে ফাইভজিতে স্থানান্তরিত হবে।