স্মার্টফোনসহ পিক্সেলের বিভিন্ন ডিভাইস এই সপ্তাহে উন্মোচন করবে গুগল। এর মধ্যে রয়েছে গুগল পিক্সেল ৮ প্রো যা অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের বাজারে নতুন চমক নিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফোর্বসের এক প্রতিবদনে ফোনটির আকর্ষণীয় দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
ইতিমধ্যে গুগল পিক্সেল ৮ প্রো ফোনটির বিজ্ঞাপন ছেড়েছে গুগল। বিজ্ঞাপনটিতে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। তবে ফোনটির কয়েকটি ফিচারের ক্রেতাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
এআই ভিত্তিক টুলসহ ক্যামেরার বিভিন্ন ফিচার তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ছবির অবাঞ্ছিত অংশ মুছে ফেলার জন্য ‘ম্যাজিক ইরেজ’ টুল, ছবির বাস্তব রং তুলে ধরার জন্য রিয়াল টোন, গ্রুপ ছবিতে অসঙ্গতি দূর করতে কারো মুখের সঠিক অবস্থান সম্পাদন করে দেওয়ার টুল বেস্ট টেক। সবগুলো ফিচার এআই–ভিত্তিক।
এই সিরিজে পিক্সেল ৬ ফোনের ডিজাইন থেকে শুরু করে হার্ডওয়্যারসহ বেশ কয়েকটি ফিচারের পুনরাবৃত্তি হয়েছে। তবে গুগল কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগনের চিপ ব্যবহার থেকে সরে এসে নিজস্ব ডিজাইনের চিপ ব্যবহার করেছে। গুগল পিক্সেল ৮ সিরিজের জন্য তৈরি টেনসর টিপটি কম্পিউটেশনাল রুটিন (নির্দিষ্ট সময়ে প্রয়োজনীয় রিসোর্স ব্যবহার) সমর্থন করে। তাই এআই ও মেশিন লার্নিংয়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়া ক্লাউডের পরিবর্তে এখন ডিভাইসেই করা যাবে।
গুগল পিক্সেল ৮ ও গুগল পিক্সেল ৮ প্রোতে টেনস জি৩ চিপসেট ব্যবহার করা হয়েছে। এতে স্পষ্ট যে, গুগল এআই ও মেশিন লানিং সফটওয়্যারের দিকে ঝুঁকছে।
নতুন সিরিজটিতে অ্যান্ড্রয়েড ১৪ সংস্করণ থাকবে। অন্যান্য স্মার্টফোন প্রস্তুতকারকেরাও কিছুদিনের মধ্যে এই সংস্করণ ব্যবহার করবে। অ্যান্ড্রয়েডের ১৪ সংস্করণের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে—
গুগল প্রথমবারের মতো ঘোষণা দিয়েছে, ফোনগুলো সাত বছর পর্যন্ত সফটওয়্যার সমর্থন পাবে। অর্থাৎ সাত বছর পর্যন্ত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট ও নিরাপত্তা ত্রুটি সংশোধনের সমর্থন পাওয়া যাবে। নিরাপত্তা হালনাগাদের ফিচারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ, হার্ডওয়্যার বছরের পর বছর টিকে থাকতে পারে কিন্তু ফোনের নিরাপত্তা না থাকলে তা ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ।
গ্রাহকেরা ফোন কেনার সময় সাধারণত ডিভাইসের আয়ুর কথা ভাবেন। তাই সাত বছর সফটওয়্যার সমর্থনের বিষয়টি ক্রেতাদের আকর্ষণ করবে এবং সেটি ভেবে অন্য অ্যান্ড্রয়েড ফোন প্রস্তুতকারকেরাও ডিভাইসের দীর্ঘায়ুর কথা বিবেচনা করবে বলে ধারণা করছে গুগল।
অ্যান্ড্রয়েড ১৪ সংস্করণের দ্বিতীয় দিকটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখন থেকে ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যান্ড্রয়েড কাস্টমাইজেশনের সুযোগ রাখার পাশাপাশি সব অ্যান্ড্রয়েড ফোনের গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসে সঙ্গতি রাখতে চায় গুগল।
গুগল এতোদিন তাদের বিভিন্ন ডিভাইসে এবং স্টক অ্যান্ড্রয়েডে ‘ম্যাটারিয়াল ইউআই’ ব্যবহার করে আসছে। এখন অন্যান্য প্রস্তুতকারকদের ফোনেও নির্দিষ্ট কাস্টমাইজেশন সুযোগ থাকার পাশাপাশি ‘ম্যাটারিয়াল ইউআই’ থাকতে পারে বা একেবারে নাও থাকতে পারে।
এআই এবং মেশিন লার্নিং সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য গুগল হার্ডওয়্যারে পরিবর্তন এনেছে। গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে পিক্সেল ৮ সিরিজের ডিভাইসগুলো তৈরি করা হয়েছে। তবে দীর্ঘ দিন সফটওয়্যার সমর্থন দেওয়ার ঘোষণায় স্পষ্ট যে, মোবাইল ডিভাইসে অ্যান্ড্রয়েড ইকোসিস্টেম আরও শক্তিশালী করতে চাচ্ছে গুগল।