শুধু লেনদেনের সংখ্যাই নয়, বেড়েছে লেনদেন করা অর্থের পরিমাণও। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বা ডিজিটাল মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম ব্যবহার করে লেনদেন হয়েছে ১.৩০ লাখ কোটি টাকা যা এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড।
ফেব্রুয়ারি মাসে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বা ডিজিটাল মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম ব্যবহার করার মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যা এক মাসে সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড।
উচ্চ সংখ্যক লেনদেনের পাশাপাশি ফেব্রুয়ারি মাসে লেনদেন করা অর্থের পরিমাণ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ যা ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতির ক্রমবর্ধমান সাফল্য এবং গ্রহণযোগ্যতাকে নির্দেশ করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে বিকাশ, নগদ বা রকেটের মতো এমএফএস ব্যবহার করে ৫৮.৪৩ কোটিবার লেনদেন করা হয়েছে। এর আগের সর্বোচ্চ ৫৭.৩৩ কোটিবার লেনদেন হয়েছিল গত বছরের অক্টোবরে।
শুধু লেনদেনের সংখ্যাই নয়, বেড়েছে লেনদেন করা অর্থের পরিমাণও। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এমএফএস ব্যবহার করে লেনদেন হয়েছে ১.৩০ লাখ কোটি টাকা যা এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড। এর আগে সর্বোচ্চ ১.৩২ লাখ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল গত বছরের জুন মাসে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৯৭.৩১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
ইন্ডাস্ট্রির অংশীদাররা লেনদেনের সংখ্যা এবং পরিমাণ উভয়েরই উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির জন্য ডিজিটাল লেনদেনের প্রতি জনগণের অভ্যস্ততা তৈরি ও ডিজিটাল ইকোসিস্টেম উন্নত হওয়া সহ বেশ কিছু কারণ দেখিয়েছেন।
বিকাশের কর্পোরেট কমিউনিকেশনের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, “এমএফএস-এর ওপর গ্রাহকদের আস্থা দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়াই এই মাধ্যমে লেনদেন বেড়ে যাওয়ার একটি অন্যতম কারণ। এছাড়া বিকাশ সবসময় চেষ্টা করে গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তাদের নতুন নতুন সার্ভিসের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে।”
তিনি আরো বলেন, “এর বাইরে দেশের ডিজিটাল ইকোসিস্টেম দিনদিন ডেভেলপ (উন্নতি) করছে যেটি এমএফএস ইন্ডাস্ট্রির বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ক্যাশ আউট ও ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির কাছে অর্থ লেনদেন (সেন্ড মানি) সহ বেশ কিছু সার্ভিসে রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে।
সুপার শপ এবং অন্যান্য ব্যবসায় এমএফএস ব্যবহার করে গত ফেব্রুয়ারিতে ৬ হাজার চারশ ৫৯ কোটি টাকার ‘মার্চেন্ট পেমেন্ট’ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় এ বছর ‘মার্চেন্ট পেমেন্ট’ ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার পাঁচশ ৩২ কোটি টাকা।
‘মার্চেন্ট পেমেন্ট’ এর ব্যাপারে শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, “আমরা সারা দেশের ৬ লাখের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মার্চেন্ট পেমেন্ট সেবা চালু করেছি। দিনদিন আমরা সেটি আরো বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
গত জুন মাসে এমএফএস ব্যবহার করে সরকার ২ হাজার একশ ৭৩ কোটি টাকার উপবৃত্তি, বয়স্ক ভাতাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির শেষে এমএফএস গ্রাহকের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২.১৫ কোটি। মাত্র এক বছরে গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ২.৫ কোটি।
এ ইন্ডাস্ট্রির অংশীদাররা মোট অ্যাকাউন্ট এবং বিশেষ গ্রাহকদের মধ্যে পার্থক্য করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। তারা বলছেন, মোট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ২২ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও বিশেষ গ্রাহকদের সংখ্যা এত বেশি নয় কারণ একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করায় সংখ্যাটিকে আরো বড় দেখায়।
দেশে বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাইক্যাশ এবং শিওরক্যাশের মতো ১৩ টি মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস কার্যকর আছে।