জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে পরবর্তীতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে এবার মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২৮ আগস্ট, বুধবার কলকাতায় শিক্ষার্থীদের আয়োজিত এক সভায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি।
কাশ্মীর ইস্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মমতা বলেছেন, ‘সরকার দেশের সব জনগণের মুখ বন্ধ করে রেখেছে। আজ কারও কথা বলার অধিকার নেই। কাশ্মীর নিয়ে এত কাণ্ড ঘটেছে; আপনারা কথা বলতে পেরেছেন। মিডিয়াকে দেখুন, তারাও কি ঢুকতে পেরেছে; কাউকে কথা বলতে দিয়েছে। বন্দুকের নল দিয়ে সবার মুখ চেপে রাখা হচ্ছে।’
এ সময় মোদী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত ছিল ভারতের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে বৈঠক করা। সেখানে তারা কাশ্মীরি নেতাদের ডাকতে পারতেন। আমরা যাওয়ার জন্য রাজি ছিলাম। আলোচনার মাধ্যমে সবাইকে সহমতে এনে এরপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেত।’
ইস্যুটিতে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে উল্লেখ করে মমতা গ্রেফতার হওয়া কাশ্মীরি নেতাদের বিষয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘উনারা কেউই জঙ্গি নন। মূলত গণতন্ত্রের স্বার্থেই তাদের সবাইকে দ্রুত মুক্তি দেওয়া উচিত।’
ভিয়েতনামে মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে মমতা বলেছেন, ‘দেশটিতে যুদ্ধ চলাকালে কলকাতায় আওয়াজ উঠেছিল, তোমার নাম আমার নাম ভিয়েতনাম ভিয়েতনাম। আজকে কথায় সিপিএম। আনার ভূমিকা কথায়? ডানে-বামে এক হয়ে গেলেন। সব সিপিএম এখন বিজেপির জল্লাদ।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।
এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান।
যদিও এমন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার পরাশক্তি চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারসহ রাজ্যের স্থানীয় প্রশাসন সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানানো হলেও; কাশ্মীর জুড়ে এখনো সংঘর্ষ ও গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি পাকিস্তানের।