সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে এখন একটিই উপায় তা হলো অপ্রয়োজনীয় সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা এবং প্রত্যেককেই তা মানতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চিকিৎসকদের ছবি ও লেখাসংবলিত এমন কিছু পোস্ট চোখে পড়ে, যাতে তাঁরা বলছেন, ‘আমরা আপনাদের নিরাপত্তা দেব। আপনারা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন, ঘরে থাকুন।’ খবর পৌঁছে দেওয়ার তাগিদে বাইরে থাকতে বাধ্য হলেও সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে একই ধরনের পোস্ট দিয়েছেন কোনো কোনো সাংবাদিকও। বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জোরেশোরে বলছেন, ‘ঘরে থাকুন, প্রয়োজন ছাড়া বের হবেন না।’ বেশ কয়েক দিন ধরে বিশ্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সংখ্যা শতাধিক দেশ কার্যকর করেছে। অনেক দেশেই ঘরে বসে কাজ করছেন কর্মীরা। অবরুদ্ধ, আংশিক অবরুদ্ধ, জরুরি অবস্থা জারিসহ নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বেশ কিছু দেশ। অর্থাৎ অভ্যস্ত সামাজিক জীবন অতিবাহিত করতে পারছে না সারা বিশ্বের লোকজনই। হচ্ছে না নিত্যদিনের শখগুলোও পূরণ। উদ্ভূত প্রেক্ষাপটে ঘরে থেকে ইন্টারনেটের যুগে কীভাবে ভালো থাকা যায়, সেসব উপায় নিয়েই আয়োজন।
জাদুঘর ও গ্যালারি
সংস্কৃতিমনাদের জন্য জাদুঘর ও গ্যালারিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের সংগ্রহগুলো পোস্ট করছে। যেমন গত শনিবার যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটনের গডস হাউস টাওয়ারে আয়োজিত একটি প্রদর্শনী অনলাইনে উদ্বোধন করা হয়। ওই গ্যালারির পরিচালক ড্যানিয়েল ক্রো বলেন, ‘প্রদর্শনীর ভেন্যু সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে যাওয়ায় আমরা আসলেই খুব মর্মাহত হই। আশা করছি, এখন শুধু স্থানীয়রাই নয়, সারা বিশ্বের লোকেরাই এই প্রদর্শনী দেখতে পারবে।’
শরীরচর্চাকেন্দ্র
করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে মানুষ শরীরচর্চাকেন্দ্রে যাচ্ছে না। তাই কিছু কিছু শরীরচর্চাকেন্দ্র তাদের ক্লাসগুলো এখন অনলাইনে নেওয়া শুরু করেছে। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে সরাসরি ক্লাস নেওয়া হচ্ছে অথবা প্রশিক্ষণের ভিডিও আপ করে দেওয়া হচ্ছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ফিটনেস ব্র্যান্ড বেরিস, ক্রসফিটসহ আরও অনেক দেশের শরীরচর্চাকেন্দ্র এখন অনলাইনে দেখে দেখে ঘরে বসে শরীরচর্চা করতে উৎসাহিত করছে।
বইয়ের ক্লাব
করোনার আতঙ্কে বই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্লাব এখন অনলাইনে পাঠচক্রের আয়োজন করছে। যেমন ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে আগ্রহীদের বই পড়ার তালিকা দেওয়া হচ্ছে।
রান্নাবান্না
কাঁচাবাজার বা সুপারমার্কেটে খাদ্যঘাটতি দেখা দেওয়ায় ভোজনরসিক ব্যক্তিরা অনলাইনে বেশ সৃজনশীলতা দেখাচ্ছে। বিকল্প উপকরণ কিংবা ঘরে থাকা সীমিত উপকরণ দিয়ে কীভাবে মজা করে রান্না করা সম্ভব, সেই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বাড়িতে কী করে ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদন করা যায়, এর পরামর্শ সংবলিত নতুন করে ভিডিও বের করা হচ্ছে এ সময়ে।
পোষা প্রাণীর যত্নআত্তি
কোভিড-১৯ নিয়ে চলমান আতঙ্কের সময়ে আগামী এপ্রিল মাসের শেষ পর্যন্ত পশুচিকিৎসকদের সঙ্গে বিনা মূল্যে ভিডিও অ্যাপয়েন্টমেন্ট করার সুযোগ করে দিচ্ছে ফাস্টভেট অ্যাপ।
দূর থেকেই সামাজিকতা
কোভিড-১৯ আতঙ্কে সামাজিকতা রক্ষা দুরূহ হয়ে ওঠায় দূর থেকে সামাজিকতা পালনের উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপ। যেমন অনলাইনেই সান্ধ্য ভোজনের আয়োজন করা হচ্ছে। এতে সত্যিকারের ভোজনটা না হলেও গল্পসল্পটা তো থাকছে।