বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের দাবি, অ্যাপল তাদের সিস্টেমে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। এই পরিবর্তন তাদের ব্যবসায়িক কৈশল ফাঁস করে দিচ্ছে। এ নিয়ে ফেসবুক ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ের কিছু সংবাদ মাধ্যমে পাতাজুড়ে বিজ্ঞাপনও দিয়েছে।
ফেসবুকের দাবি, এই পরিবর্তন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং ইন্টারনেট জগতের অবয়ব বদলে দেবে। যার ফল ভালো হবে না। ফেসবুকের হতাশ হওয়ারই কথা। কারণ একটু একটু করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন যোগাযোগ প্লাটফর্ম হয়ে উঠেছে তারা। অথচ অ্যাপলের এই গোপনীয়তা বিষয়ক পরিবর্তনের কারণে বন্ধ হয়ে যেতে পারে ফেসবুক!
অ্যাপলের দাবি, ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের বিশ্বাস ভাঙছে। ফেসবুকে ইউজার তার মত, পথ, পছন্দ-অপছন্দ ভাগাভাগি করছে। ফেসবুক সেই সুযোগে তার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। এরপর ওই ইউজারের ওয়ালে ঠেলে দিচ্ছে পণ্যের বিজ্ঞাপন, নানান ভিডিও। ওই বিজ্ঞাপন থেকেই মূলত অর্থ আয় করছে ফেসবুক।
ধীরে ধীরে অবশ্য ফেসবুকের ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বুঝতে পারছে। তারা তাই ফেসবুক থেকে সরে আসার মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কেউ কেউ দাবি করেছে, ব্যক্তিগত তথ্য চুরির দায়ে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়া উচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির নামে ভোক্তারা এই অভিযোগ তুলতেই পারে। কিন্তু বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের প্রযুক্তি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাপল দু’হাতে নিচ্ছে সুযোগটা।
তারা প্রযুক্তির বাজারে নিয়ে আসছে একটি বিশেষ অ্যাপ। যা দিয়ে সহজে ফেসবুকের এই বিশ্বাস ভাঙার এবং ব্যবহারকারীকে বোকা বানিয়ে মুনাফা করার বিষয়টি ধরে ফেলা যাবে। ‘ট্র্যাকিং ট্রান্সপারেন্সি’ নামের এই অ্যাপ ব্যবহারকারীকে তার তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ দেবে। এমনকি তারা ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা দেয় দাবি করে আইফোনও বাজারে এনেছে। যাতে করে ফেসবুকের বিজ্ঞাপন আয় শূন্যে নামে এবং বন্ধ হয়ে যায়।
ফেসবুক অবশ্য বসে নেই। তারা লড়াই শুরু করেছে। অভিযোগ তুলেছে-অ্যাপলের দামি পণ্যের বেচা-বিক্রি বাড়াতে তারা ফেসবুকের বিরুদ্ধে নেমেছে। এছাড়া অ্যাপল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার নামে গ্রাহকের ফ্রিতে পণ্য ও তথ্য পেতে বাধা তৈরি করছে। আগামীতে ভোক্তাদের ক্রীড়া এবং রান্না বিষয়ক তথ্য পেতে বিভিন্ন সাইট সাবসক্রাইব করতে হতে পারে। যেটা ইন্টারনেটের বাজার চড়া করে দেবে।
মার্ক জাকারবার্গের ফেসবুক অবশ্য এরই মধ্যে অ্যাপলের সঙ্গে এই দ্বন্দ্বে জেতার জন্য স্লোগান ঠিক করেছে-‘ছুটে চলো, ভেঙে দাও সামনের সকল বাঁধ’। কিন্তু ফেসবুক দ্রুত ছুটলেই সব বাধা ভাঙবে সেটা বলার জো নেই। বরং ফেসবুককে নতুন ব্যবসায়ী কৌশল গ্রহণ করতে হতে পারে। অবশ্য ফেসবুক সহজ একটা পথও অবলম্বন করতে পারে। গ্রাহক সতর্ক হচ্ছে হোক পুরনোদের সঙ্গে নতুন গ্রাহক তো আসছেই!