ফেসবুকে অনেককেই একটি পোস্ট শেয়ার করতে দেখা যাচ্ছে, যেটার ভাষ্য হলো, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবহারকারীর যেকোনো তথ্য অবাধে ব্যবহারের সুযোগ পাবে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। এমনকি মেসেঞ্জারের মুছে ফেলা বার্তাও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করতে পারবে তারা।
ফেসবুক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, এটা মিথ্যা, এমন দাবির কোনো ভিত্তি নেই। ২০২০ সালেও এমন একটি ভুয়া বার্তা ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।
নতুন ভুয়া বার্তাটি বিশ্বের অনেক দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বাংলাদেশের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, ইথিওপিয়া ও সিঙ্গাপুরে বেশি দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া বার্তার শুরুটা এমন, ‘আগামীকাল থেকে নতুন ফেসবুক/মেটা নিয়ম শুরু হবে, যেখানে তারা আপনার ছবি ব্যবহার করতে পারবে। ভুলে যাবেন না, আজ শেষ দিন!’
এরপর সতর্কতা হিসেবে সে বার্তা কপি-পেস্ট করে ফেসবুকেই আগাম জানিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। পোস্টে দেখা যায়, ‘ফেসবুক/মেটাকে তাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা আমার তথ্য অন্য কোথাও শেয়ার করার অনুমতি দিচ্ছি না।’
ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ গত ২৮ অক্টোবর ঘোষণা দেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির মূল প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে ‘মেটা’ করা হবে। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সেবাগুলো মেটার অধীন আগের মতোই পরিচালিত হবে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বার্তাটি যে মিথ্যা, তা নিশ্চিত করেছেন ফেসবুকের যোগাযোগ ব্যবস্থাপক (থাইল্যান্ড ও লাওস) মানাশুয়েন কোবাপিরাত। এএফপির ফ্যাক্টচেক দলকে তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি, উল্লিখিত বার্তাগুলো সত্য নয়।’
মানাশুয়েন কোবাপিরাত আরও বলেন, ব্যবহারকারীরা যেকোনো সময় তাঁদের ‘প্রাইভেসি সেটিংস’ দেখে প্রয়োজন বুঝে সেখানে পরিবর্তন করতে পারেন। একই সঙ্গে ‘প্রাইভেসি চেকআপ’ টুল ব্যবহার করে তাঁদের শেয়ার করা পোস্ট কে কে দেখতে পাবেন, কীভাবে তা ব্যবহার করা যাবে এবং কীভাবে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা শক্তিশালী করা যাবে, তা-ও নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।
কোবাপিরাত বলেন, ফেসবুকের কাছ থেকে ই-মেইল এলে সেটার শেষে ডোমেইন নেম দেখাবে fb.com, facebook.com কিংবা facebookmail.com। তা ছাড়া ই-মেইলে আসা যেকোনো লিংকে ক্লিক করার আগে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
ফেসবুক বা এর মাতৃপ্রতিষ্ঠান মেটা কীভাবে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে, তা জানা যাবে টার্মস অব সার্ভিস পাতা থেকে।
বিশ্বের অনেক দেশের ব্যবহারকারীর এমন পোস্টের নিচে ফেসবুকের পক্ষ থেকেই সেটি মিথ্যা বলে উল্লেখ থাকলেও বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের পোস্টে এখন পর্যন্ত তেমন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।