কল-ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ইমো হ্যাক করে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা রাজশাহী এসে তাদের আটক করে নিয়ে যায়। পরে সোমবার তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়।
রাবির দুই শিক্ষার্থী হলেন- রেজোয়ান ইসলাম রিজু এবং শাকিব শুভ। তাদের সঙ্গে রবিন আলী নামে একজনেরও জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ইমো হ্যাক ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সাতটি মোবাইল ফোন এবং সাতটি সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
আটক রাবির রিজু ও শাকিব চিত্রকলা, ছাপচিত্র ও প্রাচ্যকলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তারা রাজশাহী নগরীর চকপাড়া এলাকার একটি ছাত্রাবাসে একই কক্ষে থাকতেন। রেজোয়ানের গ্রামের বাড়ি যশোরের মণিরামপুর এবং শাকিবের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলায়।
এর আগে, গত ১৩ নভেম্বর সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাজশাহী নগরীর চকপাড়া এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে গত দুইদিন ধরে তাদের কোন সন্ধান না পাওয়ায় গত সোমবার চন্দ্রিমা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রেজওয়ানের বড় ভাই মিরাজুল ইসলাম। দুই দিন ধরে রাজশাহীর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আ. ফ. ম. আল কিবরিয়া জানান, তারা দীর্ঘদিন থেকে পরস্পর যোগসাজশ ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে প্রবাসীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ইমো ব্যবহারকারীদের ইমো হ্যাক করতো।
তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা প্রথমে ইমো ব্যবহারকারী প্রবাসীদের নম্বর সংগ্রহ করেন। পরে তারা কৌশলে টার্গেট করা প্রবাসীর ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নেন। পাসওয়ার্ড পাওয়ার পর তারা সেই আইডি থেকে পাঠানো কথোপকথন ও মেসেজ পর্যবেক্ষণ করেন। এক পর্যায়ে হ্যাক করা আইডি ব্যবহার করে স্বজনদের দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার কথা বলে প্রবাসীদের বিকাশে বড় অংকের টাকা পাঠাতে বলেন।
এ বিষয়ে খিলগাঁও থানার নিয়মিত মামলার ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের একটি দল। গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে সোমবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সোপর্দ করা হলে একদিনের রিমান্ড মঞ্জর করেন আদালত।
সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের এডিসি নাজমুল জানান, এ ধরনের অপকর্ম করত নাটোরের লালপুরে একটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। সেখানকার অনেককেই শনাক্ত করেছে ডিএমপির সিটি-সাইবার। শিগগিরই সেখানে বড় ধরনের অভিযান পরিচালিত হবে। কোনোভাবেই মোবাইল বা ইমোতে আসা ওটিপি কাউকেই শেয়ার করা যাবে না। সচেতনতাই সাইবার নিরাপত্তার ভিত্তি।