ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, এক নারী বসে আছেন। পাশেই পড়ে আছে একজন পুরুষের মরদেহ। ব্যক্তিটি তাঁর স্বামী, মঙ্গলবার সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হয়েছেন। ওইখানেই ছিল একটি ব্যাগ। কাশ্মীরে ঘুরতে এসেছিলেন তাঁরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, নিথর পড়ে থাকা ব্যক্তিটি ভারতের নেভি অফিসার লেফটেন্যান্ট বিনয় নারভাল। আর বসে থাকা নারী তাঁর স্ত্রী স্কুলশিক্ষক হিমাংশি। এ দুজনের আত্মীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মাত্র ছয়দিন আগে বিয়ে হয়েছিল তাদের। বিয়ের পর কাশ্মীরের পাহেলগামে বেড়াতে এসেছিলেন।
জানা যায়, বিয়ের পরে হানিমুনে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার কথা ছিল এই দম্পতির। কিন্তু ভিসা পেতে দেরি হওয়ায় কাশ্মীরেই হানিমুন করতে আসেন। মঙ্গলবারের ঘটনার মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে পাহেলগামে আসেন দুজনে। মঙ্গলবার যখন এই দম্পতির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, তখন মাটিতে পড়ে থাকা ব্যক্তি এবং তাঁর পাশে থাকা শোকাহত যুবতীর পরিচয় স্পষ্ট ছিল না। যদিও ওই নারী তখনো তাঁর বিয়ের চুড়ি পরে ছিলেন। সেই ব্যক্তি তখনো বেঁচে ছিলেন কিনা, তাও স্পষ্ট ছিল না।
কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুক হামলায় নিহত বেড়ে ২৬কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুক হামলায় নিহত বেড়ে ২৬
এই ছবি গুরুগ্রামের সেক্টর ৪৭-এর বাড়িতে হিমাংশির পরিবারকে দেখান হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিনিধি। হিমাংশির মামী ববিতা নিশ্চিত করেন, এটি তাদেরই ছবি। এরপর ভারতীয় নেভি কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তারাও নিশ্চিত করেন এটি নেভি অফিসার লেফটেন্যান্ট বিনয় নারভাল ও তাঁর স্ত্রীর ছবি। হামলার পর ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছিল। শ্রীনগরের একজন সংবাদকর্মী এটি তোলার পর প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া সংবাদ সংস্থা (পিটিআই) এটি প্রকাশ করে। মনে হচ্ছে, এটি কোনো মোবাইলে তোলা হয়েছে।
ঘটনার অনেক পরে বিনয়ের মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারে তাদের পরিবার। এরপর হিমাংশির মা-বাবা দ্রুত পাহেলগামে যান। তাদের সঙ্গে ছিলেন বিনয়ের বাবাও। মঙ্গলবারই দিল্লিতে আনা হয় বিনয়কে। এরপর মরদেহ নেওয়া হবে হরিয়ানায়।
কাশ্মীরে হামলা, মোদিকে ফোন করলেন ট্রাম্প–পুতিনকাশ্মীরে হামলা, মোদিকে ফোন করলেন ট্রাম্প–পুতিন
৬ এপ্রিল এই দম্পতির বাগদান হয় এবং মাত্র দশ দিন পর ১৬ এপ্রিল উত্তরাখণ্ডের মুসৌরিতে তাদের বিয়ে হয়। হিমাংশির এক আত্মীয় বলেন, ‘সবকিছু ঠিকঠাকমতোই হয়। তাদের বিয়ে জানুয়ারিতে চূড়ান্ত হয়েছিল। দুজনের পরিবার আগে থেকেই পরিচিত। এটি ভালোবাসা ও গভীর বন্ধনের মিলন হওয়ার কথা ছিল।’
কর্ণালে তাদের বাড়ির ভেতরে নৌবাহিনীর অফিসার বিনয়ের বিয়ের শেরওয়ানি তখনো আলমারিতে সুন্দরভাবে ঝুলছিল। মুসৌরিতে অর্ধেক খোলা তাঁর ভ্রমণ ব্যাগ এক অসমাপ্ত যাত্রার গল্প বলে।