ডিপফেক বলতে নকল ভিডিও বা অডিওকে বোঝায়। আপাতদৃষ্টিতে তা দেখতে আসল মনে হলেও তা মোটেই আসল নয়। ডিপফেক নামটির মাঝেই এর সংজ্ঞা নিহিত রয়েছে। ডিপ মানে গভীর এবং ফেক মানে নকল। অর্থাৎ ডিপফেক বলতে এমন কিছুকে বোঝায় যা খুবই গভীরভাবে নকল করা হয়েছে। মেশিন লার্নিং হলো ডিপফেক ভিডিও বানানোর প্রধান অস্ত্র। মেশিন লার্নিংয়ের একটি কৌশলের নাম “জেনারেল অ্যাডভারসেরিয়াল নেটওয়ার্ক” (GAN)। এর মাধ্যমে প্রথমে একজন ব্যক্তির বিভিন্ন অভিব্যক্তির হাজারখানেক ছবি সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই ছবিগুলো মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে প্রক্রিয়া করে তার মুখের সব ধরনের অভিব্যক্তির একটি সিমুলেশন তৈরি করা যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্তরোত্তর উন্নতির ফলে ব্যক্তির গলার আওয়াজও হুবুহু নকল করা সম্ভব। এসব ভিডিও ও অডিও নানাভাবে প্রক্রিয়া করে এমন একটি নকল ভিডিও তৈরি করা হয় যা খালি চোখে শনাক্ত করা অনেক কঠিন।
মুখমন্ডলের বিভিন্ন অভিব্যক্তি ধারণ করে মেশিন লার্নিং দিয়ে নকল ভিডিও বানানো হয়;
আমাদের দৃষ্টিসীমার পর্যায়কাল ০.১ সেকেন্ড। অর্থাৎ ১০০ মিলি সেকেন্ডের কম সময়ে ঘটে যাওয়া কোনো দৃশ্য আমাদের চোখে বাঁধবে না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা ভিডিওগুলোতে নানা ধরনের রূপান্তর ঘটে এর থেকেও কম সময়ে। তাই খালি চোখের পক্ষে আসল-নকলের যাচাই করা সম্ভব হয় না।
ডিপফেক টেকনোলজি দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন সেলিব্রিটিরা। এর কারণ তাদের নানা ভিডিও, ছবি ইত্যাদি ইন্টারনেটে বেশি সহজলভ্য। একজন অভিনেতার চেহারার বিভিন্ন ধরনের অভিব্যক্তি ইন্টারনেটে পাওয়া সবচেয়ে সহজ। তাই তারাই প্রথমে এই ক্ষতিকর প্রযুক্তির শিকার হয়।