ভারতে চীনা ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পর্যুদস্ত স্যামসাং এবার দেশটিতে হাজারখানেক কর্মী ছাঁটাইয়ের চিন্তা করছে। আগামী অক্টোবরের মধ্যেই জনশক্তির এ ‘যৌক্তিকীকরণ’ সম্পন্ন হবে বলে কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে। খবর ইকোনমিক টাইমস।
ভারতে প্রযুক্তিপণ্যের অনলাইন বাজারের দ্রুত প্রবৃদ্ধির সুযোগে চীনা ব্র্যান্ড শাওমি, অপো, ওয়ান প্লাস দ্রুতই স্যামসাংকে অতিক্রম করে গেছে। ২০১৬ সাল থেকেই এ প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। অনলাইন বাজারে প্রতিযোগিতার দৌড়ে পিছিয়ে পড়া স্যামসাংয়ের নিট মুনাফা ২০১৭-১৮ সালেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে যায়।
জানা গেছে, চীনা ব্র্যান্ডের সস্তা স্মার্টফোন ও টেলিভিশনের বিপরীতে অবস্থান ধরে রাখার কৌশল হিসেবে রাজস্ব বাড়ানোর চেয়ে মুনাফার দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে স্যামসাং। আর এ কারণেই খরচ কমানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
স্যামসাং ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারত ও বিভিন্ন দেশে স্যামসাং বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। এর মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম সেলফোন কারখানা, উন্নয়ন ও গবেষণা (আরঅ্যান্ডডি) এবং নতুন ব্যবসা অনুসন্ধানের পেছনে বিপুল বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। আর ব্যবসাকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে স্যামসাং প্রায়ই রিসোর্সের পুনর্বিন্যাস করে থাকে।
ভারতে স্যামসাংয়ের বিভিন্ন বিভাগে প্রায় ২০ হাজার কর্মী রয়েছে। এরই মধ্যে ১৫০ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। অদক্ষ ও লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ, এমন কর্মীদের একটি তালিকা কোম্পানির ভারত অংশের প্রেসিডেন্ট এইচসি হোংয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি এখন দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে কোম্পানির সদর দপ্তরে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ তালিকায় ভারতে কর্মরত স্যামসাংয়ের মোট কর্মীর ১০ শতাংশ রয়েছে বলে জানা গেছে।
কোম্পানির নির্বাহী পর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে, জনশক্তি যৌক্তিকীকরণের আওতায় থাকছে স্যামসাংয়ের বিক্রয়, বিপণন, আরঅ্যান্ডডি এবং উৎপাদন বিভাগ। পাশাপাশি অর্থ, মানবসম্পদ এবং করপোরেট রিলেশনস বিভাগের কিছু কর্মীও ছাঁটাই হতে পারে।
এদিকে ব্যবসা সংকুচিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিল থেকে ভারতে নতুন কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছে স্যামসাং। তবে আসন্ন উৎসব মৌসুমে ব্যবসার সম্ভাবনা যাচাইসাপেক্ষে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
কয়েকটি চীনা ব্র্যান্ড ও দেশীয় মাইক্রোম্যাক্সের চ্যালেঞ্জের মুখে ২০১৫-১৬ সালেও কয়েকশ কর্মী ছাঁটাই করে স্যামসাং। মূলত এর আগে থেকেই ভারতের বাজারে স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন বিক্রি কমতে শুরু করেছে। ওই সময় কোম্পানির পক্ষ থেকে ছাঁটাইকৃত কর্মীর কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করা না হলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটি সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ বলে দাবি করা হয়।