মুনাফায় বড় ধরনের পতন দেখতে যাচ্ছে কোরীয় ইলেকট্রনিকস জায়ান্ট স্যামসাং। শুক্রবার প্রকাশিত প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখিত আয়ের তথ্য সে রকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রদর্শিত উপাত্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের মুনাফা গত প্রান্তিকের চেয়ে অর্ধেকেরও কম হতে পারে। মূলত অন্যতম ক্রেতা চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে চাহিদা সংকটে পড়ে চিপের দাম কমিয়ে দিতে বাধ্য হওয়ার কারণেই এ অবস্থার মুখে পড়েছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। খবর রয়টার্স।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের আর্থিক প্রতিবেদনে যে উপাত্ত দেয়া হয়েছে, তা গত তিন বছরের মধ্যে কোম্পানির সবচেয়ে বাজে অবস্থাই নির্দেশ করে। তাছাড়া প্রযুক্তি বাজারের ক্রমহ্রাসমান প্রবণতার মধ্যে সরবরাহ উদ্বৃত্তের পরিস্থিতি থেকে বের হতে আরো কয়েকটি প্রান্তিক অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
স্যামসাং শুধু বিশ্বের বৃহত্তম স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানিই নয়, এটি ডির্যাম ও এনএএনডি মেমোরি চিপেরও প্রধান সরবরাহক। যেখানে হুয়াওয়ে কোম্পানির চিপের দ্বিতীয় প্রধান ক্রেতা। ফলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে বিশ্বব্যাপী নানা বিধি-নিষেধের জালে আক্রান্ত হুয়াওয়ের বিপদে স্যামসাংও বিপাকে পড়েছে।
স্যাংস্যাঙ্গিন ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক জে কিম বলেন, সামনে হুয়াওয়ে কী পরিমাণ চিপ ব্যবহার করবে, সেটির ওপর নির্ভর করেই বিশ্ববাজারে চিপের দাম নির্ধারিত হয়। ফলে হুয়াওয়ের বিকল্প ক্রেতা খুঁজে পাওয়া স্যামসাংয়ের জন্য প্রায় অসম্ভব। এ কারণেই কোরীয় কোম্পানিটি চিপের দাম কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। তাতে মুনাফা কমে গেছে ব্যাপকভাবে।
অবশ্য চিপ বিক্রি থেকে আয় কমে গেলেও হুয়াওয়ের প্রতি নিষেধাজ্ঞার সুযোগে স্মার্টফোন বাজারে সুবিধা করতে পারে স্যামসাং। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে হুয়াওয়ের স্মার্টফোন সরবরাহ ৪০ শতাংশ কমে যাবে। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে বিধি-নিষেধের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার মতো বড় বাজার নিজ দেশেই হুয়াওয়ের রয়েছে বলে মনে করা হয়।
কিন্তু শুধু স্মার্টফোন বিক্রি বৃদ্ধির সম্ভাবনা স্যামসাংকে বাঁচাতে পারবে না। কারণ কোম্পানির মুনাফার একটি বড় অংশ (দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি) আসে চিপ ব্যবসা থেকে। সম্পৃক্ত স্মার্টফোন বাজার ও ডাটা সেন্টারে চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে চিপের দাম কমাতে বাধ্য হচ্ছে স্যামসাং।