বাংলাদেশে তৈরি ইলেকট্রনিক্স পণ্য দিয়ে বিশ্বজয়ের লক্ষ্য ওয়ালটনের। এ লক্ষ্যে রোডম্যাপ সাজিয়ে পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। গৌরবময় এ যাত্রায় ওয়ালটনের সঙ্গী হয়েছে স্বনামধন্য ব্র্যান্ড হুন্দাই। ওয়ালটনের তৈরি ফ্রিজ এবং এয়ার কন্ডিশানার নিচ্ছে হুন্দাই ইলেকট্রনিক্স। ওয়ালটনের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তির পাইপলাইনে আছে আরো অন্তত এক ডজন বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান।
এ উপলক্ষ্যে ওয়ালটন এবং হুন্দাই ইলেকট্রনিক্সের মধ্যে পারস্পরিক চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৯ আগস্ট ২০১৯) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওয়ালটনের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিট (আইবিইউ) প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম। হুন্দাই ইলেকট্রনিক্সের ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এবং সিওও অভিষেক মালপানি। চুক্তি অনুযায়ী হুন্দাইকে প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ফ্রিজ এবং ২০ হাজার এসি সরবরাহ করবে ওয়ালটন।
এ সময় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম এবং পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলমসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে এস এম আশরাফুল আলম বলেন, হুন্দাইয়ের সঙ্গে এ চুক্তি ওয়ালটন তথা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর ফলে, বিশ্ববাজারে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানি কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে। অচিরেই আরো বেশ কয়েকটি বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানের সাথে আমাদের চুক্তি হচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস খুব শিগগিরই ইলেকট্রনিক্স খাত বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম বড় উৎসে পরিণত হবে। একই সাথে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ড হবে ওয়ালটন।
ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন কার্যক্রমে ৩৬ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ওয়ালটনের কোরিয়ান চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ই এম ইয়াং বলেন, ওয়ালটন কারখানায় তৈরি পণ্য বিশ্বাসেরা। আন্তর্জাতিক মানের ওয়ালটন পণ্য বিশ্বের যেকোনো দেশের উপযোগী। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজ সমৃদ্ধ ওয়ালটন কারখানায় কাঁচামাল থেকে শুরু করে উৎপাদনের প্রতিটি ধাপে কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিশ্বসেরা উদ্ভাবনী ডিজাইনের পণ্য উৎপাদনে ওয়ালটনের রয়েছে নিজস্ব আরএন্ডডি (রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) বিভাগ। যেখানে বিশ্বের শীর্ষ প্রকৌশলীরা প্রতিনিয়ত পণ্যের মান ও প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছেন। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতাদের রুচি অনুযায়ী তাদের চাহিদা মাফিক নির্ভরযোগ্য পণ্য সরবরাহে প্রস্তুত ওয়ালটন।
এডওয়ার্ড কিম বলেন, হুন্দাইকে ওয়ালটনের টেকসই ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অন্তত ১২টি ব্র্যান্ডের সঙ্গে আমাদের কাজ চলছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং উন্নতমানের পণ্য সরবরাহে আমরা শতভাগ আন্তরিক। পাশাপাশি, বহিঃবির্শ্বে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য বিপণনে আমরা ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি।
ওয়ালটনের সিনিয়র অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর আবদুর রউফ জানান, আন্তর্জাতিক মানের সব শর্ত ও নিদের্শনা মেনে তৈরি হয় বলে ওয়ালটন পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে। ফ্রিজ এবং এসি ছাড়াও ওয়ালটনের কাছ থেকে টেলিভিশন, ওয়াশিং মেশিন এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স নিতে আগ্রহী হুন্দাই।
চুক্তি সাক্ষরের পর হুন্দাই ইলেকট্রনিক্স, ইন্ডিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তারা ওয়ালটন কারখানায় বিভিন্ন উৎপাদন ইউনিট ঘুরে দেখেন। এ সময় তারা সরেজমিনে ওয়ালটনের রেফ্রিজারেটর, কম্প্রেসর, এয়ার কন্ডিশনারসহ অন্যান্য পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। বিশ্বমানের পণ্য উৎপাদনে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতি দেখে তারা মুগ্ধ হন।