ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধুন স্বপ্নের বাংলাদেশ ছিলো ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত এবং শোষণ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। এই রাষ্ট্রের জন্মের প্রথমদিন থেকে তিনি সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ২৫ বিঘা জমির খাজনা মওকুফ, ১০০ বিঘা জমির সিলিং স্থাপন, রাষ্ট্রায়ত্ত্বকরণ, সমবায় আন্দোলন ও দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ছিলো সেই বাংলাদেশ গড়ার জন্য। কিন্তু আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদ এবং একাত্তরের দেশী-বিদেশী পরাজিত শত্রু ও তাদের দোসররা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার এইসব কর্মসূচি ও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে তাকে সপিরবারে হত্যা করে। জাতীয় চারনেতার হত্যাককাণ্ড বা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টাও একই ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অশুভ শক্তির কোন ষড়যন্ত্র বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতেও সফল হতে দেবে না।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ডাক ও টেলি যোগাযোগ বিভাগের প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব অশোক কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ড.মোহাম্মদ সাদিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর এবং বিটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল মাহমুদ বক্তৃতা করেন।
বঙ্গবন্ধু বাঙালীর যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তা রক্ষা ও তাকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষমতা শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বে বাঙালির আছে উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা এখন সমার্থক শব্দ। বাংলাদেশ গত সাড়ে দশ বছরে উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে শুধু পাকিস্তান বা প্রতিবেশী অন্যকোন দেশই নয় পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশকেও চমকে দেওয়ার পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। তিনি বলেন, আজ এত বছর পরেও যদি সব রাজনৈতিক নেতাকে মূল্যায়ন করি তবে শ্রদ্ধায় অবনত হওয়ার মতো মানুষ একজনকেই পাই। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী পৃথিবীতে একমাত্র বাংলা ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে বলেন,যে সময়ে ব্রিটিশরা পুরা উপমহাদেশটিকে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে কলঙ্কিত করে দুটি অদ্ভুত রাষ্ট্র বানিয়ে দিয়ে গিয়েছিল এবং পুরো উপমহাদেশের তাবৎ বড় বড় রাজনীতিবিদরা সেই সাম্প্রদায়িকতাকেই মাথায় তুলে নিয়েছিলেন তখন তিনি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের বিপরীতে একটি ভাষাভিত্তিক আধুনিক জাতিরাষ্ট্র গঠনের দূরদর্শী স্বপ্ন দেখেন। তাকে বুঝতে হলে পড়তে হবে, জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর বাঙালিত্ব, তার প্রতি একনিষ্ঠতা এবং জাতিসত্বা বিষয়ে অত্যন্ত স্পষ্ট নীতিমালা লাখো লাখো তরুণকে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্র গঠনে জীবন দিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, বাঙালির জাতিরাষ্ট্র বুঝতে হলে তার তৈরি করা ১৯৭২-এর সংবিধান বুঝতে হবে। তার ১৯৭২ সালের সংবিধানের মূলমন্ত্র ছিল চারটি। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ। কিন্তু ধনী-গরিবের বৈষম্য দূর করতে ডিজিটাল যুগের সমাজতন্ত্র ও তার ধারণা কাজে লাগানো ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই।
ড.মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ৭৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে কর্তব্যরতদের ব্যর্থতা মেনে নেয়া যায় না। জাতি তা শুনতে চায় না – শুনতে অভ্যস্ত নয়। তিনি বলেন, জাতির পিতার জন্ম না হলে শহীদ মিনার ধরে রাখতে পারতাম না, বাংলা ভাষা থাকত না।