মেমোরি চিপের বাজারে অব্যাহত মন্দা ও প্রিমিয়াম স্মার্টফোনে নতুনত্বের খরার মধ্যে টানা তিন প্রান্তিক পরিচালন মুনাফায় ব্যাপক পতনের খবর দিয়েছে স্যামসাং। দক্ষিণ কোরীয় প্রযুক্তি জায়ান্টটি জানিয়েছে, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির পরিচালন মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি কমেছে। অবশ্য সেপ্টেম্বরে সমাপ্ত এ প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রকাশ করবে স্যামসাং। খবর সিএনবিসি।
গতকাল এক বিবৃতিতে স্যামসাং জানিয়েছে, তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির পরিচালন মুনাফা আশা করা হচ্ছে ৭ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন কোরিয়ান ওন বা ৬৪৩ কোটি ডলার। যেখানে গত বছর একই সময়ে বিশ্বের শীর্ষ স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানিটি ১৭ দশমিক ৫৭ ট্রিলিয়ন ওন মুনাফার কথা জানিয়েছিল। সে তুলনায় চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের পরিচালন মুনাফা ৫৬ দশমিক ১৭ শতাংশ কম।
এর পরও অক্টোবরে প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনে প্রত্যাশিত মুনাফার অংকটি অপরিবর্তিত থাকলে তা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশিই হবে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান রেফিনিটিভ স্মার্টএস্টিমেট তৃতীয় প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের মুনাফা ৭ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ওন পূর্বাভাস দিয়েছিল। প্রত্যাশার চেয়ে ভালো করার খবরে এরই মধ্যে স্যামসাংয়ের শেয়ারদর গতকাল ২ দশমিক ৪১ শতাংশ বেড়েছে।
স্যামসাং আরো জানিয়েছে, গত তিন মাসের বিক্রির হিসাবও তাদের পুনর্মূল্যায়ন করতে হয়েছে। এ সময় বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ৬২ ট্রিলিয়ন ওন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ কম। এছাড়া টানা তিন প্রান্তিক ধরেই স্যামসাংয়ের পরিচালন মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অর্ধেকেরও নিচে থাকছে। গত জুনে সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্যামসাং জানায়, তাদের পরিচালন মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৫ দশমিক ৬১ শতাংশ কম হয়েছে।
চীন-মার্কিন বাণিজ্যবিরোধের জেরে প্রতিদ্বন্দ্বী হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা স্মার্টফোনের বাজারে স্যামসাংয়ের জন্য বাড়তি সুযোগ এনে দিয়েছে। পাশাপাশি ফ্ল্যাগশিপ গ্যালাক্সি নোট ১০-এর প্রতি গ্রাহকদের ইতিবাচক সাড়া এবং স্বল্প ও মাঝারি মূল্যের সেলফোন বিক্রি ব্যাপকভাবে বেড়েছে। কিন্তু মেমোরি চিপের বাজারে মন্দার কারণেই মুনাফায় ধারাবাহিক পতন দেখছে দক্ষিণ কোরীয় টেক কোম্পানিটি।
গত বছর থেকেই মেমোরি চিপের ব্যবসায় ইনভেন্টরি সংশোধন করতে হচ্ছে স্যামসাংকে। সরবরাহও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। যেখানে কোম্পানির মুনাফার অর্ধেকেরও বেশি আসে কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও ডাটা সেন্টারে ব্যবহূত মেমোরি চিপ সরবরাহ থেকে।
তবে সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি উন্নতির দিকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন হংকংভিত্তিক পুঁজিবাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএলএসএর গবেষক সঞ্জিব রানা। তিনি বলেন, স্যামসাংয়ের তৃতীয় প্রান্তিকের এ অর্জন মূলত মেমোরি চিপের সরবরাহ প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হওয়ার কারণেই। ডির্যাম ও ন্যান্ড চিপের চাহিদা যেমনটি ধারণা করা হয়েছিল, তার চেয়ে বেশি বলেই মনে হচ্ছে। স্যামসাংয়ের ২০২০ সালটি বেশ ভালোই যাবে বলে আশা করা যায়।