ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন,একদিকে বাংলাদেশ ডিজিটাল হবে আর এক দিকে ইন্টারনেট নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট খাতের অংশিজন এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করণীয় নির্ধারণসহ লাগসই কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটা নিরাপদ ইন্টারনেট দুনিয়া নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, একক কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার পক্ষে এটি সমাধান করা সম্ভব নয়। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ করা সম্ভব নয়। ইন্টারনেট সম্প্রসারণের পাশাপাশি সকলকে সাথে নিয়েই আমরা নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছি। আমরা চাই আমাদের কন্যা, বধু , মাতা সবাই ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকুক।
মন্ত্রী আজ রোববার ঢাকায় টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মিলনায়তনে ডিজিএফআই, র্যাব, এনটিএমসি, বিটিআরসি, মোবাইল অপারেটর্স, আইআইজিডব্লিউসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ক এক পরামর্শক সভায় সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব অশোক কুমার বিশ^াস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটালাইজেশনের সম্ভাবনা ও ঝুঁকির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, আমরা যত বেশি ডিজিটাল হচ্ছি ডিজিটাল বিপদের মাত্রা ততবেশি বাড়ছে। যত বেশি মানুষের সাথে সংযুক্ত হচ্ছি বিপদের ভয়টাও ততবেশি বাড়ছে। এটি এমন কোন বিষয় নয় যে মূহুর্তের মধ্যেই এর সমাধান তৈরি করা যায় ।
কম্পিউটারে বাংলা ভাষার জনক জনাব মোস্তাফা জব্বার ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ায় তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, গত ৩২ বছর এ জগতে বিচরণ করতে গিয়ে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাইকে ইন্টারনেট ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ করেছি কারণ ইন্টারনেট হচ্ছে জ্ঞান ভান্ডার। নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে সাইবার থ্রেট ডিটেকশন, মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গত এক বছরে ২২ হাজার পর্নো সাইট ও দুই হাজার জুয়ার সাইট বন্ধ করেছি। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞসহ অংশিজনদের সুচিন্তিত মতামত ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের যুগান্তকারি কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। করণীয় নির্ধারণ করে বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনার মাধ্যমে নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করা সম্ভব।
মন্ত্রী এ বিষয়ে জনসচেতনা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সরকারের পাশাপাশি জিপি, রবিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট বিষয়ে সচেতন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
তিনি এ বিষয়ে গৃহীত কর্মসূচি সমন্বিতভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি ক্ষতিকর সাইটগুলো নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর ক্ষতিকর কন্টেন্টগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর মন্ত্রী গুরুত্বারো করেন।
সাইবার থ্রেট ডিটেকশন, মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন বিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক রফিকুল মতিন এর সঞ্চালনায় উপস্থিত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ সভায় নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে ভবিষ্যত করণীয় বিষয়ে তাদের মতামত ও পরামর্শ ব্যক্ত করেন।