ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার, ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণের লক্ষ্য বাস্তবায়নের অঙ্গিকার। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে তাকিয়ে নয় বরং ২০১৬ সালে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণাটি প্রতিষ্ঠা লাভের বহু আগে ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষিত হয়। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই কর্মসূচি সারা দুনিয়াকে চমকে দিয়েছে।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় আইডিইবি মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লি: ( বিএসসিসিএল) আয়োজিত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও আমাদের প্রস্তুতি শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার ও বিসিএসসিএল এমডি মসিউর রহমান বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টেলিকম ও ডিজিটাল প্রযুক্তি গবেষক টিআইএম নুরুল কবির, আইডিইবি‘র সভাপতি একেএমএ হামিদ, ফাইভার এট হোম এর চীপ টেকনিক্যাল অফিসার সুমন আহমেদ সাব্বির এবং টেলিটকের ব্যবস্থাপক রেজাউল কবির।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ সমূহে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ, সংকট এবং সম্ভাবনার সামগ্রিক চিত্র উঠে এসেছে উল্লেখ করে বলেন, শিল্প বিপ্লব ৪ পয়েন্ট জিরো নিয়ে কিছুটা সমালোচনা রয়েছে। অর্থাৎ বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করছেন, শিল্প বিপ্লব ৪ পয়েন্ট জিরো যান্ত্রিক এবং এই ধারণা থেকেই কেউ কেউ শিল্প বিপ্লব ৫ পয়েন্ট জিরোর ধারণা তুলে ধরছেন যা মানবিক। তারা মনে করছেন ৫জি হচ্ছে শিল্প বিপ্লব ফোর পয়েন্ট জিরোর মহাসড়ক।
মূল প্রবন্ধে নুরুল কবির বার্সেলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসে মানুষকে বাদ দিয়ে প্রযুক্তির বিকাশ হতে পারে না, প্রযুক্তি মানুষের জন্য, মানুষ প্রযুক্তির জন্য নয় অর্থাৎ মানুষকে বলী দিয়ে প্রযুক্তিকে মাথায় তুলে নিয়ে কোন সভ্যতা গড়ে উঠতে পারে না মর্মে মন্ত্রীর এই বক্তব্যের উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, শিল্প বিপ্লব ৫ পয়েন্ট জিরো বিষয়ক জাপানসহ অন্যদের ধারণা একটি মানবিক শিল্প বিপ্লবে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তার মানুষকে সম্পদে রূপান্তর করা। আমাদের ছেলে-মেয়েদের সামান্য প্রশিক্ষণ দিলে তারা সম্পদ হতে পারে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মাত্র কয়েক দিনের প্রশিক্ষণে গ্রাম থেকে উঠে আসা শিশুরা অনায়াসে রোবট বানাতে পারছে। তিনি শিশু ক্লাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষায় ডিজিটালাইজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েরা মাদার বোর্ড বানাতে পারে, তারা বাংলাদেশে কমপ্রেসর তৈরি করছে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দায়িত্ব হচ্ছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অথবা ডিজিটাল বাংলাদেশ কিংবা পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের জন্য তার মহাসড়ক তৈরি করে দেওয়া। আমরা সভ্যতার রূপান্তরের যুগে বাস করছি। সভ্যতা রূপান্তরের দায়িত্ব পালনে আমরা কাজ করছি। তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন বিটিসিএল এবং টেলিটকসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আইওটি, এআই, বিগডাটা, রোবটিক কিংবা বøকচেইন প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তত থাকার জন্য যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।