বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে টানা কয়েক বছর মন্দার পর সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) স্মার্টফোন সরবরাহ ৩৮ কোটি ইউনিটে পৌঁছেছে, যা এক বছর আগের একই প্রান্তিকের চেয়ে বেশি। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে স্মার্টফোন সরবরাহের পরিমাণ ছিল ৩৭ কোটি ৯৮ লাখ ইউনিট। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ প্রকাশিত গত বৃহস্পতিবারের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। খবর ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস।
বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের ২১ শতাংশ দখলে নিয়ে নেতৃত্বস্থান ধরে রেখেছে স্যামসাং। বিশ্বব্যাপী ‘এ’ এবং ‘নোট’ সিরিজের ডিভাইসের ব্যাপক চাহিদার কারণে প্রতিষ্ঠানটি স্মার্টফোন বাজারের শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য বিরোধের জেরে চাপে রয়েছে হুয়াওয়ে। এ পরিস্থিতিতেও জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির বাজার দখল বেড়ে ১৮ শতাংশে পৌঁছেছে। বলা হচ্ছে, বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে স্যামসাং ও হুয়াওয়ের মধ্যে দূরত্ব ক্রমেই কমে আসছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ স্মার্টফোন বাজারে স্যামসাংকে হটিয়ে শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছানোর লক্ষ্য ছিল হুয়াওয়ের। কিন্তু মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের নিষেধাজ্ঞার কারণে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছানো নিয়ে সংকটে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অপোর সাব-ব্র্যান্ড রিয়েলমি। স্যামসাং-হুয়াওয়ে যখন বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের শীর্ষ অবস্থানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিযোগিতা করছে। তখন রিয়েলমি সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের তকমা দখলে নিয়েছে। ২০১৮ সালের ৪ মে স্বতন্ত্র স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে রিয়েলমি। এরই মধ্যে বিশ্বের উদীয়মান বাজারগুলোয় ইতিবাচক সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের বিশ্লেষক শোভিত শ্রীবাস্তব বলেন, বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজার টানা কয়েক বছর ধরে খারাপ সময় পার করছে। বাজারটিতে ধারাবাহিকভাবে বিক্রি কমায় ডিভাইস নির্মাতারাও হতাশার মধ্যে পড়ে যায়। তবে চীন ও ভারতের বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা তৃতীয় প্রান্তিকে সরবরাহ বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শীর্ষ তিন স্মার্টফোন ব্র্যান্ড স্যামসাং, হুয়াওয়ে ও অ্যাপল বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের অর্ধেক দখলে রেখেছে। বাকি অর্ধেক বাজারে শতাধিক ব্র্যান্ডের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা বিরাজ করছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এক বছর আগের একই সময়ের চেয়ে অ্যাপলের আইফোন সরবরাহ কমেছে ৪ শতাংশ। এতে প্রান্তিকটিতে আইফোন বিভাগের রাজস্ব কমেছে ১১ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, আগামী পাঁচ বছরে প্রায় অর্ধেক সার্ভিস প্রোভাইডার বাণিজ্যিকভাবে ফাইভজি চালু করবে। এখন অধিকাংশ স্মার্টফোন নির্মাতা ফাইভজি নেটওয়ার্কের বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরুর অপেক্ষা করছে। দ্রুতগতির এ নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি চালু হলে ডিভাইস ব্যবহারকারীরা নতুন স্মার্টফোন কিনতে আগ্রহী হবেন। যে কারণে স্মার্টফোন বিক্রি বাড়বে এবং বৈশ্বিক বাজারে বিক্রি প্রবৃদ্ধি দেখা যাবে।